খবরা-খবর
দেশব্যাপী সাধারণ ধর্মঘটের সমর্থনে রন্ধনকর্মী সহ প্রকল্প কর্মীদের বারাসত জেলাশাসক দপ্তর অভিযান

২৮ ডিসেম্বর ২০১৮ বারাসাত, উত্তর ২৪ পরগণা, এ আই সি সি টি ইউ অনুমোদিত ‘এ আই এস ডব্লিউ এফ’ ও ‘পশ্চিমবঙ্গ সংগ্রামী রন্ধনকর্মী (মিড-ডে-মিল) ইউনিয়ন’-এর আহ্বানে জেলা শাসক দপ্তরে শত শত স্কীমকর্মী বিক্ষোভে ফেটে পড়েন।

কেন্দ্রীয় সরকার জনমুখী প্রকল্পের নামে প্রায় দু-দশক ধরে কয়েক লক্ষ মহিলা প্রকল্প কর্মীর উপর চালাচ্ছে মধ্যযুগের শোষণ। নেই কোন মজুরি কাঠামো, নিরাপত্তা ও মর্যাদা, তারা ‘বাঁধা মজুর’-এর মত কাজ করে চলেছেন। বর্তমানে কেন্দ্রীয় সরকার প্রকল্পগুলির বরাদ্দ কাট-ছাট করে এই প্রকল্পগুলি গুটিয়ে দিতে চাইছে। রাজ্য সরকার তার কোষাগার থেকে এই সমস্ত গরীব-গুর্বদের জন্য অর্থ ব্যয় করতে চায় না ।

প্রকল্পকর্মীরা ১৮০০০ হাজার টাকা মজুরি, শ্রমিকের মর্যাদা, ৬০০০ টাকা পেনশন ও সামাজিক সুরক্ষার দাবিতে দেশব্যাপী আন্দোলন গড়ে তুলেছেন। ২০০৫ সাল থেকে উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় প্রকল্পকর্মীদের নিয়ে ‘পশ্চিমবঙ্গ সংগ্রামী রন্ধনকর্মী (মিড-ডে-মিল) ইউনিয়ন’ লড়াই সংগঠিত করেচলেছে। লড়াইয়ের মাধ্যমে জেলাস্তরেবেশ কিছু দাবি তারা আদায় করতে পেরেছেন। কিন্তু তাদের প্রধান দাবি শ্রমিকের মর্যাদা, মজুরি ও পেনশনের দাবি আদায়ের জন্য আসন্ন দেশব্যাপী ধর্মঘটে তারা সামিল হবেন। সভায় শ্লোগান ওঠে ৮-৯ জানুয়ারি ধর্মঘট হচ্ছে হবে। নির্ধারিত সময়ের আগেই সভা শুরু হয়। গৌরী পোদ্দার, সুলেখা বর্ধন, বন্দনা দাস, মনিকা লোধ, রাণী অধিকারী, শ্যামলি ঘোষ, নমিতা ভদ্র (মিড-ডে-মিল) প্রমুখ তাদের যন্ত্রনা ও প্রতিবাদের কথা বলেন।

অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী শিলা দে সরকার তাদের প্রতি রাজ্য সরকারের প্রতারণার কথা বলেন। সংগঠনের রাজ্য সম্পাদিকা জয়শ্রী দাস সমগ্র কর্মীদের প্রস্তুত হতে বলেন—ধর্মঘটের মধ্যে দিয়ে আমাদের কথা যদি সরকারের কানে না যায়, আগামী দিনে জেলা শাসক ঘেরাও সহ লাগাতার ধর্মঘটের প্রস্তুতি নিতে হবে।

উপস্থিত বক্তাদের মধ্যে ছিলেন—এ আই সি সি টি ইউ রাজ্য সম্পাদক অতনু চক্রবর্তী, জেলা সম্পাদক নবেন্দু দাশগুপ্ত, নির্মাণ শ্রমিক নেতা উত্তম দাস, আয়ারলা-র নেতা অজয় বসাক, সংগঠক সুব্রত সেনগুপ্ত ও শিবশঙ্কর গুহরায় সব বক্তারাই স্কীমকর্মীদের দাবির প্রতি সমর্থন জানায়। সভার সঞ্চালক ছিলেন অর্চনা ঘটক। সঙ্গীত পরিবেশন করেন রন্ধনকর্মী নীলিমা সাহা ও বাবুনি মজুমদার। সমগ্র ব্যবস্থাপনায় ছিলেন দিলীপ দত্ত।

সভা থেকে এক দৃপ্ত মিছিল শহর পরিক্রমা করে। সভা থেকে ৫ জনের প্রতিনিধিদল জেলাশাসকের কাছে স্মারকলিপি দেয়। প্রতিনিধি দলে ছিলেন জয়শ্রী দাস, সুলেখা বর্ধন, শিখা গুহরায়, সুপ্রিয়া বক্সী (অঙ্গনওয়াড়ি) এবং নবেন্দু দাশগুপ্ত। জেলা শাসকের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে ধর্মঘটের নোটিশ পাঠানো হয়, এছাড়াও ৭ দফা দাবি নিয়ে জেলা শাসকের সাথে আলোচনা হয় এবং তিনি কয়েকটি দাবি মীমাংসার প্রতিশ্রুতি দেন।

খণ্ড-26
সংখ্যা-1