ইরানের ওপর চাপানো অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা মার্কিনের চাপের কাছে নরেন্দ্র মোদীদের আত্মসমর্পণ

ট্রাম্প মধ্য প্রাচ্যে আমেরিকার যুদ্ধে জড়িয়ে না পড়ার কথা যতই বলে থাকুন না কেন, তা কখনই বিশ্বের ওপর খবরদারি করা রাষ্ট্রের রাষ্ট্রপ্রধানের বৈশিষ্ট্যমূলক প্রতিশ্রুতি হতে পারে না। যে রাষ্ট্রের ওপর ‘‘সামরিক শিল্পীয় জোট’’ তথা অস্ত্র ব্যাপারীদের প্রভাব এত বেশি, ‘‘চিরন্তন যুদ্ধ’’র মধ্যে থাকাটাই যে রাষ্ট্রের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য, সেই রাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি কি বেশিদিন সংঘাত থেকে দূরে থাকতে পারেন? সম্প্রতি ইরানের ওপর চাপানো অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা থেকে মার্কিন এবং এমনকি তার মিত্র সৌদি আরবের যুদ্ধের হম্বিতম্বি দেখিয়ে দিচ্ছে, ওবামা জমানার কিছুটা সংযত চালচলনের পর মার্কিন রাষ্ট্র আবার সাবেকি নয়া-রক্ষণশীল অবস্থানে ফিরে আসছে। সিআইএ চালিত সামরিক অভ্যুত্থানের মধ্যে দিয়ে ১৯৫৩ সালে মহম্মদ মোসাদেগ-এর গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারকে অপসারিত করে ইরানের শাসন ক্ষমতায় শাহর অধিষ্ঠানে মার্কিনের রণনৈতিক লক্ষ্যের বাস্তবায়ন ঘটেছিল। কিন্তু ১৯৭৯ সালের ঐস্লামিক বিপ্লব এবং শাহর ক্ষমতাচ্যুতির মধ্যে দিয়ে ইরানে মার্কিনের নিয়ন্ত্রণ ধাক্কা খেয়েছিল এবং তার পরিণামে সৃষ্ট ইরানের প্রতি মার্কিনের বৈরিতা সাম্রাজ্যবাদী রাষ্ট্রের মজ্জাগত বৈশিষ্ট্য হয়ে ওঠে। আর তাই ইরানে ‘জমানা বদল’ বা ‘সরকারের পতন’ ঘটানো আজও মার্কিনের কাছে এক অতি কাঙ্খিত অ্যাজেণ্ডা। ট্রাম্প নিজেই এক হুমকিবাজ এবং তাঁর প্রশাসনে বিদেশমন্ত্রী মাইক পম্পেও, নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টনের মতো ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে মার্কিনের যুদ্ধ জিগির জোরদার হচ্ছে। এদের অনেকেই বুশ জমানার কুশিলব ছিলেন এবং বোল্টন তো আবার সাদ্দামের ইরাকের বিরুদ্ধে যুদ্ধকে পাকিয়ে তোলার নাটের গুরু। নিউ ইয়র্ক টাইমস-এর মতো দৈনিক সংবাদপত্রে মধ্য প্রাচ্যে আমেরিকার ১,২০,০০০ সেনা পাঠানোর পরিকল্পনার সংবাদ প্রকাশিত হলেও ট্রাম্প এটাকে ‘ভুয়ো খবর’ বলে মন্তব্য করেছেন এবং ইরানের সঙ্গে আমেরিকার যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার পরিকল্পনার কথা অস্বীকার করেছেন। কিন্তু পারস্য উপসাগরে নৌবহর এবং বি-৫২ বোমারু বিমান পাঠানোর খবরের সত্যতাকে ওয়াশিংটন অস্বীকার করেনি। মার্কিন সেনারা ইরাক ছেড়ে আসার সময় ইরাকের সর্বাঙ্গে মার্কিন সৃষ্ট বিপর্যয়ের দগদগে চিহ্ন প্রকট হয়ে উঠেছিল। মধ্য প্রাচ্য কি এই ধরনের আরো একটা তালগোল পাকানো পরিস্থিতির জন্য অপেক্ষা করছে?

ট্রাম্প ক্ষমতায় এসেই ওবামা জমানায় প্রশমিত মার্কিনের দৃঢ়বদ্ধ ইরান বিদ্বেষকে উসকিয়ে তুললেন। ওবামা জমানায় রাষ্ট্রপুঞ্জের স্থায়ী সদস্য পাঁচটি পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্র ও জার্মানির সঙ্গে ২০১৫ সালের ৪ জুলাই ইরানের যে পরমাণু চুক্তি হয়েছিল, তাতে পরমাণু চুক্তি বন্ধ রাখার বিনিময়ে ইরান অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার ফাঁস থেকে কিছুটা রেহাই পেয়েছিল। তেল বিক্রি অবরোধহীন হওয়ায় এবং আন্তর্জাতিক ব্যাঙ্ক ব্যবস্থাকে কাজে লাগাতে সক্ষম হওয়াটা ইরানকে কিছুটা হলেও হাঁফ ছাড়ার অবকাশ দিয়েছিল। কিন্তু ক্ষমতায় বসেই ট্রাম্প ইরানের গলায় আবার অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার ফাঁস আটকাতে উঠেপড়ে লাগলেন। তিনি বললেন, ইরানের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্য পাঁচটি রাষ্ট্রের পরমাণু নিরোধক চুক্তি ছিল ‘‘একদিকে ঝোঁকা’’, ‘‘সাংঘাতিক’’, ‘‘আদ্যন্ত ত্রুটিপূর্ণ’’, ঐ চুক্তি ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচিকে খর্ব করা বা মধ্য প্রাচ্যে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে দেওয়া ইরানের সমস্ত ধরনের সাহায্য বন্ধ করার ব্যাপারে কোন গুরুত্ব দেয়নি। অর্থাৎ, যে চুক্তি মধ্য প্রাচ্যে ইরানের প্রভাবকে নিয়ন্ত্রিত করা ও তার রাজনৈতিক বিচ্ছিন্নতা ঘটানোর লক্ষ্যে চালিত নয় সেই চুক্তি আমেরিকার কাছে গ্রহণযোগ্য হতে পারে না! কথায় বলে, খলের ছলের অভাব হয় না। অতএব ট্রাম্পের ঘোষণা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ঐ চুক্তি মানবে না এবং ইরানের ওপর আবার অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা চাপানো হবে। হলও তাই। এই নিষেধাজ্ঞা হল একতরফা। অর্থাৎ, ইরান চুক্তির শর্তকে মেনে তার পরমাণু কর্মসূচিকে বন্ধ রাখলেও আমেরিকা তাকে কোনো মর্যাদা দিল না। নিষেধাজ্ঞার ফলে — ইরান মার্কিন ডলার সংগ্রহ করতে পারবে না (লক্ষ্য, ইরানের আন্তর্জাতিক বাণিজ্যকে বিপর্যস্ত করে তোলা), সোনা বা অন্য কোন মূল্যবান ধাতুকে বাণিজ্যের অবলম্বন করতে পারবে না, ইরানকে গাড়ি ও গাড়ির যন্ত্রাংশ বিক্রি করা যাবে না এবং এই ধরনের আরো অনেক নিষেধাজ্ঞা। আর সবচেয়ে বড় যে শাস্তির মুখে ইরান পড়ল তা হল — ইরানের কাছ থেকে কেউ তেল আমদানি করতে পারবে না (কিনলে শাস্তি পাবে, অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়বে), ইরানের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের সঙ্গে লেনদেন করা চলবে না, আন্তর্জাতিক ব্যাঙ্ক ব্যবস্থার দরজাও ইরানের জন্য বন্ধ। লক্ষ্য নির্ধারিত হল — তেল বিক্রি থকে ইরানের আয়কে শূন্যে নামিয়ে আনা। ট্রাম্প প্রশাসন ইরানের আধা সামরিক সংগঠন ইসলামিক রেভলিউশনারি গার্ডস কপকেও সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের তালিকায় নিয়ে এল। এই ধরনের নিষেধাজ্ঞার জন্য মুখিয়ে ছিল মধ্য প্রাচ্যে আমেরিকার বরাবরের দোসর ইজরায়েল, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরশাহির মতো দেশগুলো, তারা উল্লসিত হল।

সাদ্দামের হাতে গণ বিধ্বংসী অস্ত্র থাকার মিথ্যা অভিযোগকে ফেরি করে আমেরিকা ইরাকের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইউরোপের রাষ্ট্রগুলোকে শামিল করতে পারলেও এবার কিন্তু চুক্তির সঙ্গে যুক্ত আর পাঁচটা রাষ্ট্র আমেরিকার এই ইরান বিরোধী উদ্যোগে এখনই তেমন সায় দিচ্ছে না। তারা ইরানের সঙ্গে অর্থনৈতিক লেনদেন চালিয়ে যাবে বলে বলছে। ইরানও ইউরোপের দেশগুলোকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলছে, তারা যদি ৬০ দিনের মধ্যে বিশ্ব ব্যাঙ্ক ব্যবস্থা ও তেল বাজারে ঢোকার সুযোগ করে না দেয় তবে ইরানও ইউরেনিয়াম পরিশোধন তথা পরমাণু কর্মসূচি থেকে বিরত হওয়াকে আর মেনে চলবে না। তবে, মার্কিনের চাপানো নিষেধাজ্ঞার প্রতিক্রিয়া ইরানের ওপর পড়তে শুরু করেছে। আমদানি বাধাপ্রাপ্ত হওয়ায় ইরানে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য, বিশেষভাবে জীবনদায়ী ওষুধের ঘাটতি দেখা দিয়েছে, ইরানের মুদ্রার দাম ধসে গেছে, বিদেশী বিনিয়োগকারীরা ইরান থেকে চলে যেতে শুরু করেছে, সমস্ত আন্তর্জাতিক লেনদেনই কন্টকিত হয়ে পড়েছে। আই এম এফ ভব্যিষ্যদবাণী করেছে — ইরানের অর্থনীতির অন্তত ৬ শতাংশ সংকোচন ঘটবে, সঙ্কুচিত হবে মধ্যপ্রাচ্য এবং উত্তর আফ্রিকার দেশগুলোর অর্থনীতিও। এক সময়ে ইরাকের উপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা চাপিয়ে এবং ইরাকের তেল বিক্রিকে রুখে দিয়ে ইরাকের জনগণকে ভাতে মারা, অত্যাবশ্যকীয় দ্রব্যের তীব্র ঘাটতি সৃষ্টি করা, ওষুধের অভাবে লক্ষ লক্ষ ইরাকি শিশুকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়ার যে আখ্যান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইরাকের বুকে রচনা করেছিল, তার করাল ছায়া আবার ইরানের আকাশে উঁকি দিতে শুরু করেছে। বিশ্ব জনমত কি চুপ করে থাকবে? নিষেধাজ্ঞার অস্ত্রে, ইরানের বিদেশ মন্ত্রী জাভেদ জারিফ-এর অভিধা অনুসারে ‘‘অর্থনৈতিক সন্ত্রাসবাদ’’ চালিয়ে মার্কিনের খবরদারির এই উৎপীড়নকে কতদিন সহ্য করা হবে?

মার্কিনের চাপানো নিষেধাজ্ঞার প্রতিক্রিয়া ভারতের ওপরও পড়ছে। ইরান ভারতের দীর্ঘদিনের মিত্র এবং ভারতে প্রয়োজনীয় তেলের এক বড় যোগানদার। ভারতকে মোট চাহিদার ৭৫ শতাংশই আমদানি করতে হয় এবং ভারতে আমদানি হওয়া তেলের এক বড় অংশই আসে ইরান ও ভেনেজুয়েলা থেকে, যে দুটো দেশই এখন মার্কিনের নিষেধাজ্ঞার কবলে। ট্রাম্প ২০১৮-র নভেম্বর থেকে ইরানের তেল কেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারির কথা বললেও চীন, ভারত, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ও তুরস্ককে ছ-মাসের জন্য ছাড় দেওয়া হয়েছিল। অর্থাৎ, নভেম্বর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত ইরান থেকে তেল কেনায় নিষেধাজ্ঞা কোনো অন্তরায় হয়নি। ছাড়ের সময়সীমা আর বাড়ানো হয়নি এবং ২০১৯-এর ২ মে থেকে ইরানের তেল ক্রয় আবার নিষেধাজ্ঞার কবলে। চীন বলেছে এই নিষেধাজ্ঞা তারা মানবে না এবং প্রকাশিত সংবাদ অনুযায়ী ইরান থেকে তেল নিয়ে যাওয়া জাহাজ চীনে খালি হতে শুরু করেছে। নিষেধাজ্ঞায় সম্মত হওয়াকেই শ্রেয় মনে করে ভারত এখন তেল আমদানির বিকল্প উৎসের সন্ধান করছে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি এবং এমনকি আমেরিকা থেকেও। ইরান এক সময়ে ডলারের বদলে টাকার বিনিময়ে ভারতকে তেল বিক্রি করত এবং টাকা দিয়ে জিনিসপত্র কিনে তাদের দেশে নিয়ে যেত। সেই সুবিধা থেকে ভারত এখন বঞ্চিত হবে। ইরান থেকে তেল আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞার ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম চড় চড় করে বেড়ে চলেছে। ২০১৬-১৭ সালে তেলের দাম যেখানে ব্যারেল প্রতি ৪৭.৬ ডলার ছিল, এখন সেই দাম ৭০ ডলার ছাড়িয়ে গেছে। এই দাম বাড়ার ফলে ভারতকে অতিরিক্ত ৩০ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করতে হবে, যা ভারতের আর্থিক ও বাণিজ্য ঘাটতিকে বাড়িয়ে তুলবে। এছাড়া, ইরানের যে ছাবাহার বন্দর নির্মাণের সঙ্গে ভারত বড় আকারে যুক্ত, নিষেধাজ্ঞার ফলে সেই প্রকল্পও বাধা প্রাপ্ত হবে এবং ইরান এই প্রকল্পের কাজ বন্ধ রাখতে বলতেও পারে। ভারতের কাছে এই বন্দরই হল আফগানিস্তান এবং মধ্য প্রাচ্য ও আফ্রিকায় ঢোকার পথ যা নিষেধাজ্ঞা পরবর্তী পর্যায়ে বন্ধ হয়ে যেতে পারে। নিষেধাজ্ঞার ফলে ভারতের এই ক্ষতি হলেও মোদী সরকার কিন্তু নিষেধাজ্ঞার কাছে নতই হয়েছে। সুষমা স্বরাজ এক সময়ে বলেছিলেন — ভারত রাষ্ট্রপুঞ্জের জারি করা নিষেধাজ্ঞাকে মান্যতা দেবে, কোনো দেশের জারি করা নিষেধাজ্ঞাকে মানার বাধ্যবাধকতা ভারতের নেই। এই বড়াই এখন শূন্যগর্ভ বলে দেখা দিচ্ছে। মোদী নিজেও আমেরিকার সঙ্গে ভারতের সম্পর্ককে ‘‘বিশেষ সম্পর্ক’’ বলে অভিহিত করেছেন। এই ‘‘বিশেষ সম্পর্ক’’ও কিন্তু ভারতকে রেয়াত করল না এবং নরেন্দ্র মোদী ও ভারত সরকার নিষেধাজ্ঞার মুখে নীরব থাকাকেই বেছে নিল। বুক বাজিয়ে বলতে পারল না—ইরানের কাছ থেকে তেল কিনবে কি কিনবে না, সেটা ভারতের নিজের ব্যাপার, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভারতের বিদেশ নীতিকে ঠিক করে দিতে পারে না। এই নিষেধাজ্ঞা শুরু হয়েছে নির্বাচনী পর্ব চলার সময় এবং বিরোধী দলগুলো — বিশেষভাবে কংগ্রেস — অভিযোগ করেছে, ভারত সরকার আমেরিকার চাপের কাছে নতিস্বীকার করছে, সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘনকে মাথা পেতে নিয়েছে। দ্য টেলিগ্রাফ পত্রিকার ১৪ মে-র সংস্করণে আর রাজাগোপাল তাঁর ‘‘ন্যায়সম্মত পথ’’ শীর্ষক নিবন্ধেও নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে দেশের সার্বভৌমত্বকে, অর্থনৈতিক স্বার্থকে বিকিয়ে দেওয়ার অভিযোগ এনেছেন—‘‘নির্বাচনের একেবারে মাঝপর্বে ঐ একই রক্ষক (নরেন্দ্র মোদী—প্রতিবেদক) আমেরিকার কাছে কার্যত আত্মসমর্পণ করলেন, যে আমেরিকা নয়া দিল্লীকে বলেছে, তারা যেন ইরান থেকে তেল আমদানি না করে। এই শক্তিশালী প্রজাতন্ত্র এখানে তার সার্বভৌমত্বকে পরিহার করতে, অত্যন্ত সুবিধাজনক বাণিজ্যিক শর্তকে বিসর্জন দিতে এবং সুদিনে-দুর্দিনে পাশে দাঁড়ানো বন্ধুর দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতেও রাজি — সবই এই কারণে যে একটা হুমকিবাজ আওয়াজ ছেড়েছে এবং আমাদের সবাইকে তাকে মেনে চলার নির্দেশ দিয়েছে।’’ অতএব প্রতিপন্ন হচ্ছে, নরেন্দ্র মোদীদের দেশভক্তির বড়াই, জাতীয়তাবাদী আস্ফালন মার্কিনের নিষেধাজ্ঞার হুমকির কাছে মুখ থুবড়ে পড়েছে! বালাকোটে জাহির করা গেরুয়া দেশপ্রেম, জাতীয় অর্থনৈতিক স্বার্থ সমর্পিত হয়েছে সাম্রাজ্যবাদের চরণতলে! নির্বাচন শেষে যে সরকারই ক্ষমতায় বসুক, মার্কিনের তাঁবেদারি ছাড়া ভারতীয় বিদেশনীতির অন্য কোনো অভিমুখ না হওয়ার সম্ভাবনাই প্রবল।

খণ্ড-26