কাশ্মীরের সাম্প্রতিক ঘটনাবলী প্রসঙ্গে চলচ্চিত্র নির্মাতা আনন্দ পট্টবর্ধন

এই মুহূর্তে কাশ্মীরে কী ঘটছে তা আমরা জানিনা। কেবল আন্দাজ করতে পারি। সেখানে বসবাসকারী সমস্ত মানুষের কাছে, পরিচিতি নির্বিশেষে সমস্ত মানুষ ও পৃথিবীর অন্যত্র তাঁদের স্বজন বন্ধু যাঁরা আছেন তাঁদের সকলের কাছে আমি ক্ষমাপ্রার্থী। আমি ক্ষমাপ্রার্থী বাকি ভারতের পক্ষ থেকে (মূলধারার গণমাধ্যমে যাঁদের কোনও উল্লেখ থাকে না এবং কর্পোরেট চালিত সোশাল মিডিয়াতেও যারা চাপা পড়ে যায়)। ভারতের কোনও কোনও জায়গায় আর মূলধারার নিউজ ও টিভি চ্যানেলগুলিতে যে উন্মত্ত উল্লাসের প্রদর্শনী চলছে তার জন্য আমি ক্ষমাপ্রার্থী।

ফ্যাসিবাদ যখন ছড়ায় তখন বেশিরভাগ মানুষই আত্মসমর্পণ করতে থাকে। নাৎসি জার্মানিতে আমরা তা দেখেছি। হিটলারকে উৎখাত করতে এক বিশ্বযুদ্ধের প্রয়োজন হয়েছিল। তারপর জার্মানি এমন ভাব করতে থাকে যেন তাঁরা কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পগুলি সম্পর্কে কিছুই জানতো না। আমি শুধু আশা করব যে কাশ্মীরের মানুষ যেন একথা বোঝেন যে এটা একটা সাময়িক পর্ব এবং আত্মঘাতী প্রতিহিংসা এড়িয়ে এই পর্বকে পেরিয়ে যেতে হবে। ফ্যাসিস্টরা চাইবে আপনারা হিংসাত্মক কার্যকলাপে জড়িয়ে পড়ুন। এমনকি উস্কানিও দেবে ওরা। ওরা নির্মম পাল্টা আক্রমণ চালিয়ে বিজয়ী হতে চায়। অহিংসাই আপনাদের প্রত্যুত্তর হতে পারে। কিন্তু আপনারা যদি দৃশ্যমানই না হন তাহলে অহিংসাও কাজ করবে না। তাই প্রকাশ্যে এগিয়ে আসুন। অহিংস থাকুন।

বর্তমান জমানায় অর্থনীতি ধ্বসে পড়ছে। এর সাথে সাথে ফ্যাসিস্টরাও ধ্বংস হবে। রাতারাতি তা হয়ে যাবে না কারণ ঝুটা জাতীয়তাবাদ ও ঝুটা ধর্ম অনাহারক্লিষ্ট মানুষকেও “ফিল গুড”-এর মৌতাতে মাতিয়ে রাখতে পারে। কিন্তু কিছু সময়ের জন্য। চিরকাল নয়।

খণ্ড-26