পণ্ডিত রঘুনাথ মুর্মুর জন্মদিন পালন
rag

৫ মে বাঁকুড়া জেলার হিড়বাঁধ ব্লকের বনগোপালপুরে পন্ডিত রঘুনাথ মুর্মু-র জন্মদিন পালন করা হয়। গ্রামবাসীদের উপস্থিতিতে তাঁর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। তারপরে এক আলোচনা সভায় তার জীবনকাহিনী নিয়ে আলোচনা করেন আদিবাসী অধিকার ও বিকাশ মঞ্চের রাজ্য নেতা সুধীর মুর্মু ও সিপিআই(এমএল) লিবারেশানের বাঁকুড়া জেলা সম্পাদক বাবলু ব্যানার্জি।

রঘুনাথ মুর্মু ছোট বেলা থেকেই সকলকে প্রশ্ন করতেন সব জাতি নিজের ভাষায় লেখাপড়া করতে পারলেও আদিবাসীরা পারে না কেন? বড়ো হয়ে তিনি বুঝতে পারেন এর কারণ হল তাদের ভাষার কোনো লিপি নেই। তিনি বুঝেছিলেন সাহিত্যের বিকাশ ছাড়া কোনো জাতির বিকাশ অসম্ভব আর এই সাহিত্যের বিকাশের জন্য দরকার লিপি। আর তাই তিনি অনেক পরিশ্রম করে তৈরি করেন নিজস্ব লিপি অলচিকি। তিনি এই লিপিতে ছোটদের ছড়ার বই থেকে শুরু করে ধারাপাত, নাটক, কাব্যগ্রন্থ লেখেন। অলচিকির প্রচার-প্রসারের জন্য ১৯৬০ সালে এএসসিইএ নামে সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন গড়ে তুলেন। স্বাধীনতার পর ভাষাভিত্তিক রাজ্য গঠনের সময় সাঁওতালদের আলাদা রাজ্য গঠনের জন্য ১৯৪৮ সালে উড়িষ্যার ময়ুরভঞ্জে তিনি সাঁওতালদের এক জমায়েতের ডাক দেন। স্বাধীন ভারতের পুলিশ এই জমায়েতে গুলি চালিয়ে অনেককে হত্যা করে এবং তাদের নেতা রঘুনাথ মুর্মু-র নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। যদিও মানুষ তাঁকে লুকিয়ে রাখে, পুলিশ তাঁকে ধরতে পারেনি। সারা জীবন তিনি আদিবাসীদের হাসা-ভাষা-লায় লাকচারের জন্য লড়াই করে গেছেন। আজ আবার নতুন করে আদিবাসীদের হাসা-ভাষা-লায় লাকচারের উপর আক্রমণ নামিয়ে আনছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার এবং তার সাঙ্গোপাঙ্গোরা। জল-জঙল-জমি থেকে আদিবাসীদের উচ্ছেদ এবং লেখাপড়ার জগৎ থেকে তাদের বের করে দেয়ার ফন্দী করছে। তাই আজ নতুন করে লড়াইয়ের শপথ নিতে হবে।

৫ মে বিশ্ববরেণ্য দার্শনিক কার্ল মার্কসেরও জন্মদিন। তিনি সমাজটাকে শুধু ব্যাখা করেই থেমে যাননি, তিনি নিপীড়িত জনতার স্বার্থে সমাজব্যবস্থাটাকে বদলে দেওয়ার পথেরও সন্ধান দিয়েছিলেন। বিশ্ব সর্বহারার সেই কান্ডারী কার্ল মার্কসেরও স্মরণ করা হয়।

খণ্ড-27