বিবৃতি
শ্রমিকদের ঘরে ফিরিয়ে আনো :
h14

‘পিএম কেয়ার্স’, তহবিলের অর্থে সমস্ত পরিযায়ী শ্রমিকদের নিরাপদে ঘরে ফেরা সুনিশ্চিত কর।

করোনা রোগীদের বিরুদ্ধে ঘৃণা ছড়ানো বন্ধ কর।

আটকে পড়া সমস্ত শ্রমিকদের নিরাপদে ঘরে ফেরানোর লড়াইটা এখনও শেষ হয়নি। সিপিআই(এম-এল), এআইসিসিটিইউ ও আয়ারলা এই ইস্যুটা লাগাতার তুলে গেলেও সরকার অনমনীয় ভাবে কোভিড-১৯-এর বিরুদ্ধে লড়ার অতি গুরুত্বপূর্ণ এই দিকটাকে অবজ্ঞা করে চলেছে। চাপের মুখে পড়ে সরকার ট্রেন/বাস চালানোর পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করলেও প্রয়োজনের তুলনায় তা একেবারেই পর্যাপ্ত নয় বলে দেখা যাচ্ছে। শ্রমিকদের ফিরিয়ে আনার পরিকল্পনাটা এমন ভাবে ছকা হয়েছে যাতে বহু সংখ্যক শ্রমিকই ফেরার তালিকা থেকে বাদ পড়ে যায়। স্বরাষ্ট্র সচিব একটা ব্যাখ্যা দিয়ে বললেন যে, শ্রমিকদের ফেরানো সম্পর্কিত নির্দেশাবলী ‘নিয়মিত’ পরিযায়ীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। এখন আবার ব্যবসায়ী লবির চাপে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারগুলো আটকে থাকা শ্রমিকরা যেখানে রয়েছে সেখানেই তাদের রেখে দেওয়ার মতলব ভাঁজছে। উদ্দেশ্য, কিছু জায়গায় এখন কারখানা খোলা, নির্মাণ কাজ চালানোর অনুমতি মেলায় শিল্পপতি, নির্মাণ কাজের উদ্যোক্তারা যাতে শ্রমিকদের শোষণ করতে পারে।

রাজস্থান সরকারের শ্রম দপ্তর একটা নির্দেশিকা দিয়ে বলেছে, নিয়োগকর্তার নির্দেশে সাড়া দিয়ে যারা কাজে যোগ দেবে না তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু, অধিকাংশ শ্রমিকই আগে ঘরে ফিরতে চান এবং এখনও তাঁদের খাবারের অভাব ও অনাহারের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। কর্ণাটকে রাজ্য সরকার শ্রমিকদের ফেরার জন্য নির্দিষ্ট ট্রেন বাতিল করেছে, এবং নির্মাণ ক্ষেত্রের নিয়োগকর্তাদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করার পরই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ওই পদক্ষেপ করেন। এআইসিসিটিইউ-এর পক্ষ থেকে কর্ণাটক হাইকোর্টে করা‌ মামলা ও দেশজুড়ে চলা প্রতিবাদের প্রেক্ষিতে অবশ্য কর্ণাটক সরকার ট্রেন বাতিলের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে নিয়েছে।

mig

 

এর আগে তবলিগি জামাতের বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচার চালিয়ে গোটা মুসলিম সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধেই ঘৃণা ছড়ানো হয়েছিল; এখন আবার বিভিন্ন স্থানে বিহারি পরিযায়ী শ্রমিকদের হেনস্থার শিকার করে তোলা হচ্ছে। কর্ণাটকে তাদের ‘করোনা বোমা’ বলে বিদ্রুপ করা হচ্ছে।

কর্ণাটকে এখন নীতীশ-বান্ধব বিজেপি সরকার, এ সত্ত্বেও সেখানে বিহারি শ্রমিকদের ওপর হেনস্থা চালানো হচ্ছে কেন? বিহারের জনগণের কাছে সুশীল মোদী ও নীতীশ কুমারকে এর জবাব দিতে হবে। শ্রমিকরা ঘিঞ্জি, অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে থাকতে বাধ্য হয় বলে তাদের বিরুদ্ধে ঘৃণা ছড়ানোর অধিকার কারুরই থাকতে পারে না। পরিযায়ী শ্রমিকদের ফেরার যথাযথ ব্যবস্থা কর্ণাটক সরকার করেনি কেন? ঠুঁটো জগন্নাথ হয়ে বসে থেকে নীতীশ কুমার এই ব্যাপারে মুখে কুলুপ এঁটেছে কেন? বিহার বিধানসভায় সিপিআই(এম-এল) বিধায়ক দলের নেতা মেহবুব আলম বিহারের মুখ্যমন্ত্রীকে লেখা একটা চিঠিতে এই প্রশ্নগুলো তুলে ধরেছেন।

তবলিগি জামাতের করোনা আক্রান্ত কিছু সদস্য রোগ থেকে সেরে উঠে কোভিড-১৯-এর চিকিৎসার জন্য নিজেদের প্লাজমা দান করছেন। কিন্তু এই অতিমারি সৃষ্ট বিপর্যয়ের সময়েও বিজেপি-সংঘ তাদের বিরুদ্ধে ঘৃণা ও বিদ্বেষ ছড়ানো থেকে বিরত হচ্ছে না।

খণ্ড-27