বিবৃতি
বৈষম্যের নয়া নজির তৈরি করল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার
health

সরকারী হোক, বেসরকারি হোক, চিকিৎসা পরিষেবা ব্যবস্থার অ আ ক খ জ্ঞান সম্পন্ন যে কোনো ব্যক্তিই বুঝতে পারবেন, এই পরিষেবা একটি টিমওয়ার্ক। টিমের মধ্যে বোঝাপড়া যত উন্নত হবে, টিমের মধ্যেকার ভারসাম্য যত নিখুঁত ও মজবুত হবে এই পরিষেবা তত উন্নত হবে। উদাহরণ হিসাবে বলা যায়, ৫০ বেডের হাসপাতাল চালাতে কেউ যদি ৫০ জন চিকিৎসক, ৩ জন নার্স ও একজন সাফাইকর্মী নিয়োগ করেন, তবে হাসপাতাল কেমন চলবে, সহজেই বোঝা যাবে। কোভিড-১৯ সংক্রমণ প্রতিরোধে জুনিয়র চিকিৎসকদের প্রশংসনীয় ভূমিকার পুরস্কার স্বরূপ তাঁদের ভাতা বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার। রাজ্যের স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রীর বিবৃতি থেকে তা জানা গেল। আর রাজ্যের প্রাইমারি হেল্থ সেন্টার থেকে মহানগরীর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও হাসপাতালে কর্মরত যে অসংখ্য নার্স, সাফাই কর্মী, এ্যম্বুলেন্স ড্রাইভার সমান ঝুঁকি নিয়ে, আন্তরিকভাবে করোনা আক্রান্ত অথবা কো-মরবিডিটির রোগীর চিকিৎসায় নিজেদের উৎসর্গ করলেন, এমনকি বারাসাত হাসপাতালের একজন সিস্টার ইনচার্জ করোনা আক্রান্ত হয়ে প্রাণ দিলেন, “তাঁদের মজুরি বা ভাতা বৃদ্ধির প্রশ্ন, যথাসময়ে সিদ্ধান্ত নেবে রাজ্য। জানালেন মাননীয়া প্রতিমন্ত্রী”। এ শুধু বৈষম্য নয়, চরম অপমানজনক‌। আশাকর্মীরা ন্যূনতম স্বাস্থ্য সুরক্ষা ব্যবস্থা ছাড়াই বাড়ি বাড়ি ঘুরে করোনা রোগীর সন্ধান করলেন, যে এ্যম্বুলেন্স ড্রাইভার বা সাফাইকর্মী জীবন বাজি রেখে এই অতিমারী সংক্রমণ প্রতিরোধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন, তাঁরা ব্রাত্য থেকে গেলেন।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের এই অগণতান্ত্রিক, বৈষম্যমূলক সিদ্ধান্তের আমরা তীব্র নিন্দা করি। কোভিড-১৯ অতিমারী সংক্রমণের বিরুদ্ধে রাজ্যের ভেঙে পড়া স্বাস্থ্য ব্যবস্থার অন্তর্জলী যাত্রাপথকে সুগম করবেন না। সরকারী হাসপাতালে কর্মরত জুনিয়র চিকিৎসক বন্ধু ও তাঁদের সংগঠনগুলোর কাছে আমাদের আবেদন, এই বৈষম্যমূলক ভাতা বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করুন। এই রাজ্যেরই জুনিয়র ডাক্তাররা আমাদের জন্য সেই ঐতিহ্য রেখে গেছেন।

ধন্যবাদান্তে 
পার্থ ঘোষ, রাজ্য সম্পাদক 
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটি 
সিপিআই(এমএল) লিবারেশন 

৯/৬/২০২০ 

খণ্ড-27