খবরা-খবর
ঋণগ্রস্ত মানুষের এই মুহূর্তে সবচেয়ে বড় সমস্যা হল ব্যাঙ্কের জুলুমবাজি, পরিবারগুলির মানসম্মান নিয়ে টানাটানির যন্ত্রণা
dgge

স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির ঋণ মকুবের দাবিতে সারা ভারত প্রগতিশীল মহিলা সমিতি (আইপোয়া) গত ২৯ মে দেশব্যাপী জাতীয় স্তরের আন্দোলন শুরু করে। ঐদিন এ রাজ্যে হুগলির পোলবা-দাদপুর ব্লকে সমাবেশের মাধ্যমে বিডিওকে ডেপুটেশন দেওয়া হয়। কলকাতা ও হাওড়ায় প্রতীকী কর্মসূচী পালিত হয়। বিহার সহ অন্যান্য রাজ্যে এখনও এই দাবিতে আন্দোলন চলছে। পশ্চিমবঙ্গে সে সম্ভাবনা যথেষ্ট আছে। রন্ধনকর্মী ও আশা কর্মীদের মধ্যে মহিলা সমিতি কাজ করে এবং তাঁদের অনেকেই গোষ্ঠীভুক্ত।

আপাতদৃষ্টিতে মনে হয় ঋণ মকুব নিছক একটি অর্থনৈতিক দাবি। আসলে এটা এক গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ইস্যুও বটে। বড় বড় শিল্পপতিদের পাহাড় প্রমাণ ঋণ ‘নন পারফর্মিং অ্যাসেট’ নাম দিয়ে মকুব করে দেওয়া হচ্ছে অথচ গরিবদের সামান্য ঋণ পরিশোধের জন্য নৃশংসভাবে ভয় দেখানো হচ্ছে। এই জ্বলন্ত বৈপরীত্য তুলে ধরে মানুষের কাছে সরকার ও রাষ্ট্রের শ্রেণীচরিত্র অনেকটা স্পষ্ট করা যায়। ঋণ মকুবের দাবিতে আন্দোলন গড়ে রাজনৈতিক চেতনার বিকাশ ঘটানোর সুযোগ আছে। সারা ভারত কৃষি ও গ্রামীণ মকুর সমিতির (আয়ারলা) পাশাপাশি আইপোয়াও এই ইস্যুতে আন্দোলন অনেক জোরদার করতে পারে। সেই লক্ষ্যে ৮ জুলাই জেলা সদর চুঁচুড়ায়ও গণ অবস্থান সহ গণডেপুটেশন দেওয়া হয়।

cgge

 

হুগলি জেলার গ্রাম-গ্রামান্তরে আয়ারলা এবং ‘আদিবাসী অধিকার ও বিকাশ মঞ্চ’ যৌথভাবে ‘ঋণমুক্তি কমিটি’ গড়ে ঋণমুক্তির আন্দোলন চালাচ্ছে, আন্দোলনের বিস্তারিত খবর দেশব্রতীর ২৫ জুন সংখ্যায় প্রাথমিকভাবে প্রকাশিত হয়েছে। এই সপ্তাহে তিনটি ব্লক পান্ডুয়া, ধনেখালি ও বলাগড়ে ব্যাঙ্কের উপরোক্ত জুলুমবাজির বিরুদ্ধে গণস্বাক্ষর সহ ডেপুটেশনে জোর দেওয়া হয়েছে। গ্রাম ছাড়িয়ে শহরেও ঢুকে যাচ্ছে ঋণমুক্তির আন্দোলন। শহরেও ঋণগ্রস্ত হাজারে হাজারে। প্রতিদিন মহাজনের মুখোমুখি দাঁড়ানোর অসহায়তা। আগামী ১৭ জুলাই ডিএম দপ্তরে ডেপুটেশন ও অবস্থানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

laal

 

ঋণমুক্তি কমিটির পক্ষ থেকে গ্রামে গ্রামে জমায়েতগুলিতে এটাও বলা হচ্ছে যে মানুষ যেহেতু ঋণ জর্জরিত তাই গ্রামগুলিতে পরিস্থিতি আরো খারাপ হচ্ছে। কারণ সরকার আমফান ক্ষতিগ্রস্ত ভাগচাষী/লিজচাষিদের (কোনো প্রাকৃতিক বিপর্যয়েই) ক্ষতিপূরণ দিচ্ছে না। ঋণমুক্তি কমিটির বক্তব্য হল, সরকার থেকে এক্ষেত্রে ভাগচাষিকেও ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। ঋণগ্রস্ত পরিবারগুলোর বড় অংশই ভাগচাষি, লিজচাষি, খেতমজুর; তাদের কাছে উপরোক্ত বক্তব্য বেশ গ্রহণযোগ্য হচ্ছে এবং বিক্ষোভ জমায়েতে তার প্রতিফলন ঘটছে। ডেপুটেশনগুলোতে প্রধানত থাকছে ঋণমুক্তি, ঋণ আদায়ের নামে সরকারী/বেসরকারী ব্যাঙ্কগুলির জুলুমবাজির অবসান ও অবিলম্বে বৈষম্যমুক্ত আমফান ত্রাণ বন্টণের দাবি।

খণ্ড-27