বিবৃতি
ভীমা কোরেগাঁও মামলায় ডাইনি শিকার অভিযান বন্ধ কর
ve

(ভীমা কোরেগাঁও মামলায় মোদী সরকারের নিপীড়ন অব্যাহতভাবে চলার বিরুদ্ধে সিপিআই(এমএল)-এর বিবৃতি)

ভীমা কোরেগাঁও মামলায় জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ) সাগর গোরখে ও রমেশ গাইচর নামে কবীর কলা মঞ্চের দুই সাংস্কৃতিক কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে। এই নিয়ে এই মামলায় এখনও পর্যন্ত মোট ১৪ জন বিদ্বজ্জন, সমাজ আন্দোলনের কর্মী এবং আইনজীবীকে গ্ৰেপ্তার করা হল। ঠিক এক মাস আগে আমরা দেখেছি দিল্লী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরাজির অধ্যাপক হানি বাবুকে কিভাবে গ্ৰেপ্তার করা হয়েছিল। এরপর পশ্চিম বাংলার এক বিজ্ঞানী পার্থসারথি রায়কেও এনআইএ জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।

দিন কয়েক আগে প্রকাশ করা একটা ভিডিওতে গোরখে এবং গাইচর দুজনেই সুস্পষ্টভাবে বলেছেন যে এনআইএ গ্ৰেপ্তার হওয়া মানুষদের বিরুদ্ধে বিবৃতি দেওয়ার জন্য তাঁদের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছে। আর তাঁরা তা করতে অস্বীকার করায় তাঁদের সম্ভবত গ্ৰেপ্তার করা হবে। দিল্লী সাম্প্রদায়িক হিংসার “তদন্তেও” একই নকশা অনুসরণ করা হচ্ছে। এ সম্পর্কেও অভিযোগ পাওয়া গেছে যে দিল্লী পুলিশ মানুষকে হুমকি দিয়ে বলছে যে হয় তারা আন্দোলনের কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা সাক্ষ্য দিক, আর তা না করলে তাদের ইউএপিএ আইনে অভিযুক্ত করা হবে। দেখা যাচ্ছে আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত কর্মী, বুদ্ধিজীবী, আইনজীবী এবং ডাক্তারদের হেনস্থা করা হচ্ছে, হুমকি দেওয়া হচ্ছে, দানবীয় আইনে গ্ৰেপ্তার করে অনির্দিষ্টকাল ধরে জেলে আটক রাখা হচ্ছে। কিন্তু বিজেপির যে সমস্ত নেতা হিংসায় উস্কানি দিয়েছে, যে সমস্ত সন্ত্রাসবাদী সংগঠন দলিতদের ওপর হামলা চালানোয় এবং সরকারের সমালোচকদের হত্যায় জড়িত রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। এমনকি যে “সাধ্বী” প্রজ্ঞার মতো ব্যক্তি এখনও ইসলামোফোবিক সন্ত্রাস চালানোর অভিযোগ অভিযুক্ত রয়েছে, প্রধানমন্ত্রী তাকে বেছে নিয়ে বিজেপি সাংসদ হিসাবে সংসদে প্রবেশের অধিকার দিয়েছেন।

মোদী সরকারের অঘোষিত জরুরি অবস্থায় মানবাধিকার আন্দোলনের কর্মী এবং সরকারের সমালোচকদের হয় গুলি করা হচ্ছে, হত্যা করা হচ্ছে, আর না হয় তাদের ঘরে তল্লাশি চালানো হচ্ছে, গ্ৰেপ্তার করা হচ্ছে ও জেলে পোরা হচ্ছে। কিন্তু এই তমসাচ্ছন্ন সময়েও আমরা রমেশ গাইচরের এই কথাগুলো থেকে পাল্টা লড়াই চালানোর প্রেরণা পাচ্ছি : “আমরা (বিনায়ক দামোদর) সাভারকারের বংশধর নই, বরং ডঃ আম্বেদকরের উত্তরাধিকারী। আমরা কোনো অন্যায় করিনি, আমরা সর্বদাই সংবিধানকে অনুসরণ করেছি।”

সিপিআই(এমএল) কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষে  
প্রভাত কুমার  

খণ্ড-27
সংখ্যা-33