মোদি সরকারের নয়া কৃষিনীতির বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত গ্রহণের পথে ১৩ হাজার পঞ্চায়েত
piu


পাঞ্জাবে মোট ১৩,০০০ গ্রাম পঞ্চায়েত আছে। সব ক’টি গ্রাম পঞ্চায়েত মোদি সরকারের নয়া কৃষি আইনের বিরুদ্ধে অফিসিয়াল প্রস্তাব পাশ করার উদ্যোগ নিচ্ছে। হিন্দুস্তান টাইমসে রিপোর্ট অনুযায়ি ৫ অক্টোবর পর্যন্ত ৩২০টি পঞ্চায়েতে প্রস্তাব পাস হয়ে গেছে। বাকিগুলিতেও হতে চলেছে। ১৯৯৪ সালের পাঞ্জাব পঞ্চায়েত আইন অনুযায়ী পঞ্চায়েতগুলির হাতে এই স্বায়ত্ত ক্ষমতা আছে। পঞ্চায়েতকে সরকারে তৃতীয় স্তর হিসেবে সাংবিধানিক ক্ষমতা দেওয়া হয় যেখানে ২৯টি বিষয়ে তার অধিকার স্বীকৃত হয়। এই অধিকারগুলির মধ্যে অন্যতম হল “কৃষি ও কৃষির প্রসার সম্পর্কিত” বিষয়। সাত দিনের নোটিসে সভা ডেকে সিদ্ধান্ত পাস করার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে পঞ্চায়েতগুলিকে। সেই আইন প্রয়োগ করে গ্রামসভা ডেকে নয়া কৃষি আইনগুলির বিরুদ্ধে প্রস্তাব পাস হচ্ছে তের হাজার পঞ্চায়েতে। দ্য ওয়ার এরকম একটি সিদ্ধান্ত উদ্ধৃত করেছে :

“গ্রাম সভার মত হল, প্রস্তাবিত আইনগুলি যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোকে দুর্বল করছে। শস্যের সহযোগ মূল্য তুলে নেওয়া এবং কর্পোরেট হাউসগুলোকে মজুতদারি করার ঢালাও ছাড় দেওয়া চূড়ান্ত জনবিরোধী পদক্ষেপ — কৃষক, শ্রমিক ও ব্যবসায়ী— সকলের বিরুদ্ধে এই পদক্ষেপ। তাই গ্রামসভা সর্বসম্মতিক্রমে এই বিলগুলিকে প্রত্যাখ্যান করছে এবং এগুলি প্রত্যাহার করে নেওয়ার জন্য কেন্দ্র সরকারের কাছে আবেদন জানাচ্ছে।”

bba

 

সারা ভারত কিসান সংঘর্ষ সমিতির ছাতার তলায় এসে দেশের প্রায় আড়াই’শর ওপর কৃষক সংগঠন মোদি সরকারের কৃষি-বিরোধী কৃষক-বিরোধী নীতির বিরুদ্ধে লড়াই চালাচ্ছে। এই লড়াই পাঞ্জাবে সবচেয়ে তীব্র প্রতিরোধের চেহারা নিয়েছে। সেখানকার ৩০টির ওপর কৃষক সংগঠন জোট বেঁধে কর্পোরেট হাউসের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রত্যক্ষ প্রতিরোধ শুরু করেছে। ৩৩টি জায়গায় একটানা রেল অবরোধ চলছে আজ এক সপ্তাহের ওপর। ৩৩টি স্থানে রোড ব্লকেড, ৭টি বড় শপিং মলের সামনে, একটি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের সামনে এবং বেশ কিছু বিজেপি নেতার বাড়ির সামনে ব্লকেড ও বিক্ষোভ চলছে। এছাড়া নির্দিষ্ট দিবসে বড় বড় জমায়েতগুলি চলছে। তার সাথে এবার একদম গ্রামীণ স্তরে সমস্ত পঞ্চায়েত থেকে এই আইনানুগ বিরোধিতার সিদ্ধান্ত কৃষক প্রতিরোধকে ব্যাপক বিস্তৃত ও গভীর করে দিচ্ছে। এমনিতে এই পঞ্চায়েতগুলি তেমন সক্রিয় নয়। কিন্তু মোদি সরকারের নয়া কৃষিনীতির বিরুদ্ধে এইভাবে পঞ্চায়েতগুলির রুখে দাঁড়ানো থেকে বোঝা যায় যে কৃষক ছাড়াও গ্রামের অন্যান্য শ্রেণী ও স্তরের মানুষদেরও বড় অংশ এই আইনগুলির সর্বনাশা চরিত্র বুঝতে পারছে। এই প্রতিরোধ অন্য রাজ্যগুলিতেও ছড়িয়ে দিয়ে দেশের সমস্ত পঞ্চায়েতে (৩ লক্ষ ৫০ হাজার) এরকম সিদ্ধান্ত পাস করানোর জন্য এআইকেএসসিসির কাছে আবেদন জানিয়েছেন পাঞ্জাবের কৃষকেরা, বাস্তবায়িত হলে তা হবে “তৃণমূল স্তরে গণতন্ত্রের এক অনন্য নজির, এবং কেন্দ্র সরকারেরও ক্ষমতা হবে না সবকিছু কর্পোরেটদের কাছে বিক্রি করে দেওয়ার”।

খণ্ড-27
সংখ্যা-37