খবরা-খবর
নদীয়া জেলায় মিড-ডে-মিল রন্ধনকর্মী সহ অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমজীবীদের বিক্ষোভ ডেপুটেশন
deiid


“মিডডেমিল রন্ধনকর্মীদের যদি এই ভাবে বছরের পর বছর অবহেলা করা হয়, সান্মানিকের নামে গালভরা কথা বলে তাঁদের নামমাত্র ভাতা দেওয়া হয়, তারা যদি বারো মাসের বদলে দশ মাসের ভাতা পায়, তাহলে আগামীদিনে রন্ধনকর্মীদের আন্দোলন চরম আকার ধারণ করবে, প্রয়োজনে অনির্দিষ্টকালের জন্য পথ অবরোধ করা হবে” এভাবেই প্রবল ক্ষোভে ফেটে পড়লেন নদীয়া জেলা মিডডেমিল রন্ধনকর্মী ইউনিয়ন (এআইসিসিটিইউ  অনুমোদিত) সম্পাদক কৃষ্ণগোপাল দাস। গত ১৩ অক্টোবর কৃষ্ণনগরে জেলা শাসকের দপ্তরে বিক্ষোভ ডেপুটেশন কর্মসূচীতে শতাধিক মিড-ডে-মিল কর্মীরা উপস্থিত হন। এছাড়া এআইসিসিটিইউ পরিচালিত অসংগঠিত শ্রমজীবী ইউনিয়নের কর্মীরাও তাঁদের নিজ নিজ ক্ষেত্রের দাবিগুলিকে জেলা শাসকের কাছে তুলে ধরার জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে এই কর্মসূচীতে সমাবেশিত হয়েছিলেন। শুরুতে এক মিছিল এলাকা পরিক্রমা করে এবং তারপর অনুষ্ঠিত হয় বিক্ষোভসভা। সভায় রন্ধন কর্মী ইউনিয়নের নেত্রী চায়না সেখ বলেন, লকডাউনে প্রচন্ড ঝুঁকি নিয়ে তারা বাড়ি বাড়ি খাবার বিলির কাজ করছেন, কিন্তু সে জন্য বাড়তি কিছুই পাচ্ছেন না। আগে রান্নার দুমুঠো খাবার পাওয়া যেতো, এখন সেটাও বন্ধ হয়ে গেছে। উৎসব ভাতার দাবি দীর্ঘদিন ধরে জানানো স্বত্বেও সরকারের কোনো হেলদোল নেই।

জেলা শাসকের কাছে ডেপুটেশনে জানানো হয়, বর্তমান লকডাউনের পরিস্থিতিতে গ্রাম ও শহরের মেহনতী মানুষেরা চরম সংকটের মধ্যে রয়েছেন। কাজ, মজুরি ও খাদ্য সংকটে তাঁদের জীবনধারণ খুবই কষ্টকর হয়ে উঠেছে। এই পরিস্থিতিতে রন্ধনকর্মী, বিড়ি শ্রমিক, কৃষি শ্রমিক, হকার, নির্মাণ কর্মী সহ অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমজীবী মানুষদের কয়েকটি জরুরি দাবি তুলে ধরা হচ্ছে। দাবিগুলির মধ্যে ছিলো –

  • রন্ধন কর্মীদের কর্মচারি স্বীকৃতি, ভাতা বৃদ্ধি করতে হবে এবং উৎসব বোনাস দিতে হবে। এদের ১২ মাসের বেতন ও মাসের বেতন মাসেই দিতে হবে। সকলকে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড দিতে হবে।
  • লকডাউন পর্যায়ে সমস্ত অসংগঠিত শ্রমিক সহ পরিযায়ী শ্রমিকদের ন্যূনতম ৬ মাসের জন্য মাসিক ১০,০০০ টাকা ভাতা ও বিনামূল্যে রেশন দিতে হবে।
  • বিড়ি শ্রমিকদের সরকার নির্ধারিত মজুরি দিতে হবে। অবিলম্বে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক ডাকতে হবে।
  • রেল হকারদের ট্রেনে হকারী করার অধিকার বন্ধ করা চলবে না। সরকার-প্রশাসনকে এই মানবিক দাবি রেল কর্তৃপক্ষর কাছে জানাতে হবে।
  • নির্মাণ শ্রমিকদের সামাজিক সুরক্ষার বিভিন্ন সুযোগ পেতে দীর্ঘসূত্রিতা বন্ধ করতে হবে। সেগুলি দ্রুত প্রদানের ব্যবস্থা করতে হবে।
  • গ্রামীণ তফশিলী জাতি উপজাতিদের শংসাপত্র প্রদানের কাজ দ্রুত এবং জরুরি ভিত্তিতে করতে হবে।
  • বন্ধন সহ মাইক্রোফাইনান্স সংস্থাগুলোর ঋণের সূদ মুকুব করতে হবে। লকডাউনের এক বছর কিস্তি আদায় বন্ধ রাখতে হবে।

বিক্ষোভ সভায় বক্তব্য রাখেন এআইসিসিটিইউ জেলা সম্পাদক জীবন কবিরাজ, সভাপতি অমল তরফদার, সহ সম্পাদক বিজয় সাহা। এছাড়া নবদ্বীপের ট্রেড ইউনিয়ন কর্মী গোকুল হালদার, আয়ারলার কাজল দত্তগুপ্ত, এআইকেএম-এর জয়তু দেশমুখ প্রমূখ। বিভিন্ন গণসংগঠনের পক্ষ থেকে ছয় জনের এক প্রতিনিধিদল জেলা শাসকের দপ্তরে স্মারক লিপি জমা দেয়, তাতে উপরোক্ত নেতৃবৃন্দ ছাড়াও ছিলেন নবদ্বীপের হকার ইউনিয়নের দেবাশীষ সিংহ, মিড-ডে-মিল কর্মী তামিল সেখ।

খণ্ড-27
সংখ্যা-37