খবরা-খবর
বিহারে বেরোজগারী সংকট চরমে
unemployment crisis

করোনা কালের রিপোর্টে প্রকাশিত বিহারে অসংগঠিত ক্ষেত্রে ১৪.২৫ লক্ষ এবং সংগঠিত ক্ষেত্রে ৬০,০০০ ব্যক্তি কর্মহীন হয়েছেন। বিগত এক বৎসর ধরে বেসরকারি স্কুল বন্ধ হওয়ায় ছ’লক্ষ শিক্ষক রাস্তায় নেমেছেন এবং তাদের পরিবার অনাহারের মুখে। তথ্যই বুঝিয়ে দিচ্ছে সংকট কতটা গভীর। সিপিআই(এমএল) লিবারেশনের বিহার রাজ্য সম্পাদক কুণাল গত ৩১ আগস্ট এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে দেখিয়েছেন করোনা ও লকডাউনের জন্য বিহারে বেরোজগারী চূড়ান্ত পর্যায়ে গিয়েছে। গ্রামাঞ্চলেও সংকট তীব্র। ভ্রমণ ও পরিষেবা ক্ষেত্রেও অবস্থা সংকটজনক। সিএমআইই’র সমীক্ষায় প্রকাশিত হয়েছে এপ্রিল-মে ২০২০তে কর্মহীনতার হার পৌঁছেছিল ৪৬ শতাংশে। জুন ২০২১এ এই হার ১০.৫০ শতাংশের ওপরে রয়েছে।

লকডাউনের প্রভাব ব্যাঙ্ক আমানতের ওপরেও দেখা যাচ্ছে। বহু মানুষ তাদের ফিক্সড ডিপোজিট ভাঙ্গাতে বাধ্য হচ্ছেন, কারণ জীবিকাহারা ও কর্মহীনতার জন্য। ২,০০০ কোটি টাকার আবাসন প্রকল্প করোনার অভিঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, ফলে বহু লোক কর্মহীন হয়েছে।

মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু উপরোক্ত তথ্যই প্রমাণ করছে এই লক্ষ্যে কিছুই করা হয়নি। বেড়েই চলেছে কর্মহীনতা, জনগণ দু’বেলা অন্ন জোটাতে জেরবার হচ্ছেন, অথচ রাজ্য সরকার নির্বাক দর্শকমাত্র। এখন যখন অবস্থা একটু একটু স্বাভাবিক হচ্ছে তখন সরকারের দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজন ছিল, কিন্তু সরকারকে কোন পদক্ষেপ নিতে দেখা যাচ্ছে না।

নির্বাচনের সময় বিজেপি-জেডিইউ ১৯ লক্ষ কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। যদি তারা তা পালন করতেন তাহলে আজ অবস্থা এতটা সংকটজনক হত না। তথাকথিত ডবল-ইঞ্জিনের সরকার বিহারকে বহু বছর পিছনে ঠেলে দিয়েছে।

সিপিআই(এমএল) লিবারেশনের দাবি অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে সরকার ১৯ লক্ষ কাজের যোগান নিশ্চিত করুক। বিহারে যখন এরথেকে অনেক বেশি পদ খালি রয়েছে, তখন ১৯ লক্ষ লোককে বহাল করতে অসুবিধা কোথায়? আমরা মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য প্রতিটি পরিবারকে দশ হাজার টাকা দেওয়ার দাবি করেছি, কিন্তু সরকার বধির। অর্থনীতিকে যদি এগিয়ে নিয়ে যেতে হয় তাহলে মনরেগা প্রকল্পে কাজের সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। আজ বিহারের কোথাও এই প্রকল্পে কোনও কাজ নেই। শহরেও মনরেগার মত প্রকল্পে কর্মসংস্থান করা দরকার।

একদিকে যখন করোনা-লকডাউনে জনগণ বিপর্যস্ত তখন বন্যার প্রতিঘাতে তাদের ক্ষয়ক্ষতি বেড়েই চলেছে। দিল্লী-পাটনার সরকার বন্যা-বিধ্বস্ত, পীড়িতদের ত্রাণ দিতে ব্যর্থ। সরকারের উচিত শস্যহানির জন্য একর প্রতি ২৫,০০০ টাকা কৃষকদের দেওয়া।

খণ্ড-28
সংখ্যা-33