২৬ নভেম্বর সকালে ঘুমের মধ্যে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেন বালীর সাংস্কৃতিক কর্মী অমিতাভ দে (ফুচকন)। জন্ম ১৯৫৮ সালে। স্ত্রী মারা যাবার পর নিঃসন্তান অমিতাভ একা থাকতেন। মৃত্যুকালে রেখে গেলেন মা, দিদি, ভাই, ভাইপো, ভাগ্নীদের। ১৯৮০’র দশকে প্রতিষ্ঠার প্রথম দিন থেকেই পশ্চিমবঙ্গ গণশিল্পী পরিষদের রাজ্যস্তরের সংগঠক ছিলেন। পরবর্তীতে শিল্পী পরিষদের বিকশিত রূপ পশ্চিমবঙ্গ গণসংস্কৃতি পরিষদের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। বিপ্লবী বাম সাংস্কৃতিক কাজকে গণচরিত্র দেওয়ার জন্য সর্বদা সচেষ্ট ছিলেন। বালী-নিশ্চিন্দায় নবারুণ সাহিত্য গোষ্ঠীর গণসঙ্গীতের স্কোয়াডের মুখ্য সংগঠক ছিলেন। ‘ইঙ্গিত’ সাংস্কৃতিক সংস্থার জন্মকাল থেকেই মুখ্য সংগঠক ছিলেন। ইঙ্গিতের চিন্তার ফসল, বালী গ্রামাঞ্চল সাংস্কৃতিক মেলার মুখ্য স্থপতি ছিলেন।
১৯৭৮ সালের পরবর্তীতে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জায়গার সঙ্গে বালীতেও সিপিআই(এমএল) লিবারেশনকে পুনর্গঠিত করার জন্য বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা হচ্ছিল। সেই পরিকল্পনার অধীনে সর্বজন পরিচিত ‘ফুচকন’ নিশ্চিন্দায় কাজ শুরু করেন। পার্টি গোপন থাকাকালীন গণরাজনৈতিক সংগঠন আইপিএফ’এর মুখ্য ভৃমিকায় ছিলেন। দীর্ঘদিন সিপিআই(এমএল) লিবারেশনের বালী-বেলুড় লোকাল সম্পাদকের দায়িত্ব সামলেছেন। দীর্ঘকাল হাওড়া জেলা কমিটির সদস্য ছিলেন।
ছোটবেলা থেকে ফুটবলার হিসাবে এলাকায় পরিচিত ছিলেন। তাঁর সার্বিক পরিচয়ের আকর্ষণে বিভিন্ন স্তরের মানুষ মৃত্যুসংবাদ পেয়ে ছুটে এসেছিলেন। বালীতে পার্টির হাওড়া জেলা অফিসে তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানান পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সলিল দত্ত, প্রবীর হালদার; রাজ্য কমিটির সদস্য ও হাওড়া জেলা সম্পাদক দেবব্রত ভক্ত; রাজ্য কমিটির সদস্য মীনা পাল, কল্যাণী গোস্বামী, পার্থ ব্যানার্জী, নিলাশিস বসু; জেলা কমিটির সদস্য অঙ্কিত মজুমদার, মাধব মুখার্জী; পঞ্চায়েত এলাকার সংগঠক বাবলু গুহ, দীপক চক্রবর্তী সহ পার্টির সহযোদ্ধারা; পশ্চিমবঙ্গ গণসংস্কৃতি পরিষদের রাজ্য সম্পাদক নীতীশ রায়; ভাই অরুণাভ দে; গ্রামাঞ্চলের সাংস্কৃতিক সংগঠক তন্ময় কুশারী, সমীর দত্ত, শঙ্কর গাঙ্গুলী সহ বিভিন্ন ব্যক্তি। শেষ যাত্রায় ধ্বনিত হয় আন্তজার্তিক সঙ্গীত। কমরেড অমিতাভ দে অমর রহে।