খবরা-খবর
নিয়োগ দুর্নীতির নিরপেক্ষ ও শাসকদলের প্রভাবমুক্ত অবাধ তদন্ত চাই
We want an impartial and free investigation

এসএসসি নিয়োগের দাবিতে যুব-ছাত্র অধিকার মঞ্চের ধর্ণাস্থলে সিপিআই(এমএল) নেতৃবৃন্দ

স্কুল সার্ভিস কমিশনের নিয়োগের দাবিতে যুব-ছাত্র অধিকার মঞ্চের আন্দোলন আজ ৪৯৯ দিনে এসে উপস্থিত। তাদের ধর্ণা স্থলে ২৬ জুলাই যান ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী- লেনিনবাদী) লিবারেশন এবং যুব-ছাত্র-মহিলা ও ট্রেড ইউনিয়ন নেতৃত্বের প্রতিনিধি দল।

অল মেরিটের উপর ভিত্তি করে স্বচ্ছ নিয়োগের দাবিতে সকল উত্তীর্ণ চাকরি প্রার্থীদের রাস্তায় দিনের পর দিন বসে থাকতে হচ্ছে। দেশে বেকারত্ব লাগাম ছাড়া। রাজ্যে শিক্ষা-স্বাস্থ্য থেকে শুরু করে রাজ্য সরকারের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অসংখ্য শূন্য পদ রয়েছে। নগদ টাকার বিনিময়ে দুর্নীতিকে আশ্রয় করে রাজ্যে মেধা পরিত্যক্ত করে দেওয়া হচ্ছে। এই বিষয়গুলির উপর দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বক্তব্য রাখলেন, সিপিআই(এমএল) রাজ্য কমিটি তথা পলিটব্যুরো সদস্য পার্থ ঘোষ ও কার্তিক পাল, নিলাশিস বসু (রাজ্য সভাপতি, আইসা), মহিলা সংগঠনের পক্ষ থেকে রাজ্য সম্পাদিকা ইন্দ্রানী দত্ত এবং এআইসিসিটিইউ রাজ্য নেতৃত্বের নবেন্দু দাশগুপ্ত ও মীনা পাল, আরওয়াইএ-র রাজ্য সম্পাদক রণজয় সেনগুপ্ত।

আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে প্রতিনিধি দল স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যানের কাছে যান নিয়োগ দুর্নীতির বিষয়ে কী সুরাহা করা হয়েছে তা জানতে। অনেক টালবাহানার পর, চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার দেখা করতে সম্মত হন এবং জানান তার পক্ষে কিছু করা সম্ভব নয়। বিচারপতি যদি নিয়োগের রায় দেন, তাহলে পরবর্তী তিনদিনের মধ্যে তারা নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবেন। আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে সিপিআই (এমএল) লিবারেশন ও গণসংগঠনের প্রতিনিধিবৃন্দকে তাদের নিয়োগের দাবি নিয়ে বিচারপতিকে একটি চিঠি দেওয়ার প্রস্তাব জানান। প্রতিনিধিদল সেই প্রস্তাব গ্রহণ করে। বিচারপতি এবং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে এসএসসি-র নিয়োগে দুর্নীতি বিরুদ্ধে এবং স্বচ্ছতার নীতি অনুসারে সমস্ত প্রার্থীর চাকরি নিয়োগের দাবিতে চিঠি দেবেন। পার্টি নেতৃত্ব তাদের এই লড়াইকে সংহতি জ্ঞাপন করেন এবং আগামীদিনেও এই লড়াইয়ে সঙ্গে থাকার অঙ্গীকারের কথা বলেন।

এসএসসি দুর্নীতির বিরুদ্ধে রাজ্যের হাইকোর্ট নির্দেশিত তদন্তের সূত্রে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টপাধ্যায়ের গ্রেপ্তারের পরিপ্রেক্ষিতে সিপিআই(এমএল) লিবারেশনের পক্ষ থেকে রাজ্য সম্পাদক অভিজিৎ মজুমদার ২৩ জুলাই এক প্রেস বিবৃতিতে বলেন, সিপিআই(এমএল) লিবারেশনের ছাত্র ও যুব সংগঠন আইসা ও আরওয়াইএ-র পক্ষ থেকে শিক্ষক চাকরি প্রার্থীদের ন্যায়সঙ্গত গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সামনের সারিতে দাঁড়িয়ে নেতৃত্ব দেওয়া চলেছে। এমনকি মিছিল ও সভা করার জন্য রাজ্য পুলিশের হাতে উপর্যুপরি হেনস্থা ও গ্রেপ্তার হতে হয়েছে। ইতিপূর্বে সিপিআই(এমএল) লিবারেশনের রাজ্য দপ্তর থেকে মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে স্মারকলিপি পেশ করে জোরালো ভাষায় নিয়োগ দুর্নীতির অবসান ঘটানো ও যোগ্য প্রার্থীদের অবিলম্বে নিয়োগপত্র দেওয়ার জন্য ক্যাবিনেটে সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও তাকে কার্যকরী করার দাবি জানানো হয়। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী এই ন্যায্য দাবিগুলিকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করেছেন এবং তাঁর ক্যাবিনেট সদস্যদের পাহাড়প্রমাণ দুর্নীতি আড়াল করতে সচেষ্ট থেকেছেন। তৃণমূলের রাজত্ব ব্যাপক দুর্নীতি, তোলাবাজি ও অপশাসনের প্রতীক হয়ে উঠেছে। এসএসসি সহ সমস্ত নিয়োগ দুর্নীতির কার্যকরী তদন্ত ও তদন্ত সাপেক্ষে দোষী প্রমাণিত মন্ত্রী ও আধিকারিকদের কঠোর শাস্তিদানের প্রক্রিয়াকে অবাধ ও রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখতে পার্থ চট্টোপাধ্যায়, পরেশ অধিকারী সহ সংশ্লিষ্ট তৃণমূল নেতা, মন্ত্রী ও সমস্ত অভিযুক্ত আধিকারিকদের অবিলম্বে বরখাস্ত করার দাবি জানিয়েছে পার্টি।

– অনন্যা

খণ্ড-29
সংখ্যা-29