খবরা-খবর
বাংলার আদিবাসী জনতা শুনুন দিয়া মন : বাঁকুড়ায় হতে চলেছে এক আদিবাসী কনভেনশন

পরাধীন ভারতে সিদো-কানু-বিরসার নেতৃত্বে লড়েছিলাম আমরা। স্বাধীন ভারতেও "নকশালবাড়ি" থেকে লালগড় হয়ে আজও বঞ্চনা-অত্যাচারের বিরুদ্ধে লড়ে চলেছি আমরা আদিবাসীরা। দেশের সংবিধান আমাদের যেটুকু অধিকার দিয়েছিল বর্তমান বিজেপি সরকার সেটুকুও কেড়ে নিচ্ছে। বহু প্রাণের বিনিময়ে চালু হয়েছিল আদিবাসীদের জমি রক্ষার বিশেষ প্রজাসত্ত্ব আইন। আর আজ সেই আইন খর্ব করে কর্পোরেটদের হাতে আমাদের জমি তুলে দিচ্ছে। এসটি।এসসি নিপীড়ন বিরোধী আইন লঘু করতে বিজেপি উঠেপড়ে লেগেছে। এই আইন হাল্কা করে দিলে আমাদের উপর অত্যাচার বহুগুণ বেড়ে যাবে। "ঘর ওয়াপসি"-র নামে সরকারি মদতে "সঙ্ঘ পরিবার" আমাদের ধর্ম, খাদ্য সবেতেই বলপ্রয়োগ করছে। নগদে ভর্তুকির নামে আদিবাসী স্কুল হস্টেলগুলি তুলে দিচ্ছে। সরকারি চাকুরিতে সংরক্ষনকে উপেক্ষা করে "শিক্ষা-চাকুরি" থেকে নতুন কায়দায় আমাদের সরিয়ে দেওয়ার চক্রান্ত করছে বিজেপি। আমাদের "সারি-সারনা" ধর্মকে স্বীকৃতি না দিয়ে সরকার আমাদের 'হিন্দু' লিখতে বাধ্য করছে। কোনও সরকারই আমাদের ভাষা-সংস্কৃতির উন্নয়নে ঠিকঠাক পরিকাঠামো গড়ছে না।

আমাদেরই সমর্থনে এ রাজ্যে ২০১১ সালে ক্ষমতায় বসেছে টিএমসি সরকার। প্রতিশ্রুতি দিয়েও তারা লালগড়ে সে সময় আন্দোলনকারী মানুষদের উপর চাপানো মিথ্যা মামলা তুলে নেয়নি। এখনো অনেকে জেলের অন্ধকারে। এই সরকার জঙ্গলগুলোকে লিজ দিয়ে দিয়ে প্রাকৃতিক সম্পদের উপর আমাদের যুগ যুগান্তরের অধিকার কেড়ে নিচ্ছে। স্কুল হস্টেলগুলোরও দায়িত্ব নিল না এমনকি "একলব্য" স্কুলগুলিও এনজিওদের হাতে তুলে দিচ্ছে। কেন্দ্রের মতোই রাজ্য সরকারও আমাদের জমি কর্পোরেটদের হাতে তুলে দিচ্ছে (উদাহরণ-গোয়ালতোড়)। হুল দিবসের মতো আমাদের লড়াইয়ের স্মরণীয় দিনটিকে নাচেগানে হালকা করে দিচ্ছে। ১০০ দিনের কাজে স্বজন-পোষন দুর্নীতি চলছে। সরকার নির্ধারিত ন্যুনতম মজুরি পাওয়া যাচ্ছে না। আমাদের জমি নাই, দখল থাকলেও পাট্টা নাই, ঋণের জোগান নাই, জমিতে সেচের ব্যবস্থা নাই। ফলে বাধ্য হয়েই বাইরে কাজ করতে যেতে হচ্ছে। আর সেখানে নানান অজুহাতে "সঙ্ঘ পরিবারের" হাতে হামলার মুখে পড়ছি। এইভাবে বিজেপি এবং টিএমসি-র মতো শাসক দলগুলি আমাদের ঠকাচ্ছে।

তাই আসুন আমরা সিদো-কানু-বিরসার দেখানো পথে আমাদের অধিকার বুঝে নিই। এই কাজকে এগিয়ে নিয়ে যেতে ১২ আশ্বিন (২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮), শনিবার, সকাল ১১টা থেকে বাঁকুড়া শহরের "ধর্মশালা ভবনে" আদিবাসী কনভেনশনে যোগ দিন।

আহ্বায়ক: সুধীর মুর্ম্মু (বাঁকুড়া), রামু সরেন (উত্তর ২৪ পরগণা), পাগান মুর্ম্মু (হুগলী), বাদল সরেন (বর্ধমান), যতীন মার্ডি (উত্তর দিনাজপুর), রাম কিস্কু (দক্ষিণ দিনাজপুর), সুনীল মুর্মু (বীরভূম)।

"সারা ভারত কৃষি ও গ্রামীন মজুর সমিতি"-র পক্ষ থেকে প্রচারিত।

খণ্ড-25
সংখ্যা-29