খবরা-খবর
শবরীমালার ঘটনার প্রতিবাদে শিয়ালদায় সারা ভারত প্রগতিশীল মহিলা সমিতির প্রতিবাদী সভা

২ নভেম্বর শিয়ালদা বিগবাজারের কাছে, শবরীমালা মন্দিরে সঙ্ঘ পরিবার তথা বিজেপি’র তাণ্ডব ও সুপ্রিম কোর্টের রায়কে অগ্রাহ্য করার প্রতিবাদে সারা ভারত প্রগতিশীল মহিলা সমিতির রাজ্য কমিটির উদ্যোগে এক প্রতিবাদী সভা অনুষ্ঠিত হয়। আগাম আবেদন করা সত্ত্বেও আর পি এফ মিটিং করতে বাধা সৃষ্টি করে। এই বাধাকে অতিক্রম করে সভা অনুষ্ঠিত হয়।

আসামে বাংলাভাষী মানুষ গণহত্যার শিকার হয়েছেন। এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ ও ধিক্কার জানিয়ে সভার কাজ শুরু হয়। শুরুতে প্রবীণা নেত্রী শুক্লা সেন সভায় আরপিএফ-এর বাধা সৃষ্টির জন্য ক্ষোভ প্রকাশ করে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের পরিসর আক্রান্ত হওয়ার বিপদ সম্পর্কে সতর্ক করেন। অন্যান্য বক্তারা ছিলেন এআইপিডব্লুএ-র রাজ্য সম্পাদিকা ইন্দ্রাণী দত্ত, মলিনা বক্সি, অর্চনা ঘটক, কাজল দত্ত, কল্যাণী গোস্বামী, জয়ন্তী দাশগুপ্ত, নারী আন্দোলনের নেত্রী সোমা মারিক (‘দশ থেকে দশহাজর’) প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।

গোটা দেশে গনতন্ত্রের পরিসর ক্রমশ সঙ্কুচিত হচ্ছে, ছাত্র-যুব-নারী, দলিত, আদিবাসী, সংখ্যালঘু, শ্রমিক-কৃষক সহ সাধারন মানুষের অধিকার প্রতিদিন খর্ব করা হচ্ছে। আর এটা করা হচ্ছে দেশি-বিদেশি কর্পোরেট পুঁজির হাতে দেশের সমস্ত সম্পদ তুলে দেওয়া তথা ‘এক জাতি এক রাষ্ট্র’ অর্থাৎ হিন্দুরাষ্ট্র গঠনের এক ভয়ঙ্কর ষড়যন্ত্রের উদ্দেশ্যে। মানুষের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের রক্ষাকবচ সংবিধান এবং দেশের সমস্ত ঐতিহ্যশালী স্বশাসিত প্রতিষ্ঠান, গণতান্ত্রিক সুশাসনের প্রতিষ্ঠানগুলি আজ বিজেপি, আরএসএস পরিচালিত মোদী সরকারের আক্রমণের লক্ষ্য। সেই সংবিধান অবমাননার এক নির্লজ্জ উদাহরণ শবরীমালা মন্দিরের ঘটনা। ধর্মীয় অনুশাসন, ঐতিহ্য ও অনুশীলনের নামে নারীর সংবিধান প্রদত্ত অধিকার লঙ্ঘন করা যায় না। তাই সব বয়সের মহিলাদের শবরীমালায় প্রবেশাধিকার থাকা উচিত—সুপ্রিম কোর্টের এই রায়কে পদদলিত করে কেরালায় বিজেপি ও সঙ্ঘ পরিবার হিংসাশ্রয়ী তাণ্ডব-চালিয়েছে। বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ যে ভাষায় তা অনুমোদন করেছেন এবং সুপ্রিম কোর্টের মর্যাদা লঙ্ঘনের ধৃষ্টতা দেখিয়েছেন তার বিরুদ্ধে এদিনের সভায় তীব্র ভাষায় ক্ষোভ উগড়ে দেন সারা ভারত প্রগতিশীল মহিলা সমিতির রাজ্য নেত্রীবৃন্দ সহ অন্যান্য বক্তারা।

বক্তারা ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে দেশের শত্রু মোদী সরকারের পরাজয়ের মধ্য দিয়ে সঙ্ঘ পরিবার তথা আরএসএস-এর হিংসা ও বিভাজনের রাজনীতিকে প্রতিহত করার আহ্বান রাখেন।

গণসঙ্গীত পরিবেশন করেন নীতিশ রায়, তার গান সভাকে উদ্দীপ্ত করে। সভার সঞ্চালক ছিলেন মিতালী বিশ্বাস।

খণ্ড-25
সংখ্যা-34