খবরা-খবর
সমস্তিপুরে মুসাহার দলিত টোলায় উচ্চবর্ণের সামন্ততান্ত্রিক শক্তিগুলোর হিংস্র আক্রমণ

গত ২১ নভেম্বরের রাতটা বিহারের সমস্তিপুরের সিংঘিয়া থানার বসুদেবা গ্রামের মুসাহার দলিতদের কাছে দু:স্বপ্নের রাত হয়েই দেখা দিল। রাত ১০টার পর রাজপুত জমিদাররা গ্রামের অধিবাসীদের উপর সংঘবদ্ধভাবে ভয়াবহ আক্রমণ চালালো, আর তাদের আক্রমণে নিহত হলেন হীরালাল সদা, আহত হন আরো বেশ কিছু মানুষ। বিহারে বিজেপি-জে ডি ইউ বর্তমান জমানায় উচ্চবর্ণের সামন্ততান্ত্রিক শক্তিগুলোর হাতে দলিতরা যে এই প্রথম সংঘবদ্ধ আক্রমণের মুখোমুখি হল এমন নয়।

আক্রমণকারীরা ছিল সশস্ত্র এবং সংখ্যায় ৩৫-এরও বেশি। বিহার সিপিআই(এমএল) সম্পাদক কুণাল এবং আয়ারলার সাধারণ সম্পাদক এই পাশবিক আক্রমণকে ধিক্কার জানিয়ে আক্রমণকারীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা এবং গ্রেপ্তারির দাবি জানিয়েছেন। তাঁরা বলেন, গ্রামের দলিত পরিবারগুলোর জমি গ্রাসের লক্ষ্যে উচ্চবর্ণের লোকজন বারবারই প্রচেষ্টা চালিয়েছে এবং এবারের আক্রমণ তারই ধারাবাহিকতায় ঘটেছে। রাজ্য সরকার যথাসময়ে ব্যবস্থা নিলে এই বর্বর আক্রমণকে প্রতিহত করা সম্ভব হত। কমরেড কুণাল জানান, বিহারে দরিদ্র ও দলিতদের জমি দখলের একটা সক্রিয় উদ্যোগ চলছে, আর প্রশাসন বিজেপি-জে ডি ইউ জোটের উচ্চবর্ণের সামন্ততান্ত্রিক সমর্থন ভিত্তিকে তুষ্ট করার জন্য ঐ ঘটনাগুলোকে অবজ্ঞা করে চলেছে।

ঐ ঘটনার পর লাল বাহাদুর সদা এবং লালন রামের নেতৃত্বে আয়ারলার একটি দল গ্রাম পরিদর্শন করে। তাঁরা জানতে পারেন, এই আক্রমণের পিছনে রয়েছে ২০ বিঘা জমির এক ভূমিখণ্ড দখলের চক্রান্ত, যে জমিতে দীর্ঘদিন ধরে পঞ্চাশটি মুসাহার পরিবার বসবাস করে আসছে। উচ্চবর্ণের লোকজন এর আগেও ঐ জমি থেকে মুসাহারদের উচ্ছেদের চেষ্টা চালিয়েছে, কিন্তু দলিতদের প্রতিরোধের মুখে তাদের ঐ প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। এবার ওরা অনেক সংগঠিতভাবে আক্রমণ চালায়, আর ঐ আক্রমণে নেতৃত্ব দেয় মনোরঞ্জন সিং, বাখেল সিং, লাপেটন সিং, রজনিশ, অওধেশ সিং এবং পঙ্কজ সিং। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায় অনেক দেরিতে। নিহত লাল সদার স্ত্রী রামাইয়া দেবীর বিবৃতির ভিত্তিতে এফ আই আর করা এবং আক্রমণকারীদের নাম জানানো হলেও পুলিশ এখনও কাউকে গ্রেপ্তার করেনি।

খণ্ড-25
সংখ্যা-37