খবরা-খবর
হুগলিতে সাম্প্রদায়িক রাজনীতির বিরুদ্ধে লাল ঝাণ্ডার মিছিল ও প্রচারাভিযান

বিভাজন ও দাঙ্গার রাজনীতিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে বিজেপির প্রস্তাবিত রথযাত্রার বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন বহু প্রগতিশীল ও গণতান্ত্রিক মানুষ এবং সংগঠন। যেহেতু হুগলি জেলাতে এর আগেও দাঙ্গার মহড়া চালিয়েছে বিজেপি তাই এই রথযাত্রার বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সামিল হওয়া এবং বাম গণতান্ত্রিক ও প্রগতিশীল মানুষকে এই প্রতিবাদে সামিল করানোর লক্ষ্যে পার্টির পক্ষ থেকে হুগলি জেলা জুড়ে দশদিন ব্যাপি এক প্রতিবাদ কর্মসূচী পালনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। আর এস এস-বিজেপির এই ফ্যাসিস্ট সরকারের দাঙ্গার রাজনীতি আর কর্পোরেট তোষণের বলি গ্রাম আর শহরের গরিব মেহনতি মানুষ। প্রচারেও তাই উঠে আসে কৃষকদের সর্বনাশের কথা, এই প্রচারাভিযানে যুক্ত হয় ৮-৯ জানুয়ারি সাধারণ ধর্মঘটের কথা। ৬ ডিসেম্বর কলকাতার মিছিলে পা মেলানোর পরদিন অর্থাৎ ৭ ডিসেম্বর থেকে টানা দশদিন চলে রথের নামে বিভাজনের রাজনীতির বিরুদ্ধে এই প্রচার অভিযান ।

পোলবা দাদপুর ব্লকের আলিনগরে, পাণ্ডুয়া ব্লকের ইলছোবা ও জায়ের হাটতলায়, বলাগড় ব্লকের গুপ্তিপাড়া বড়বাজার ও মহিপালপুরে, চুঁচুড়া-ব্যান্ডেল অঞ্চলের নেতাজি পার্ক ও হেমন্ত বসু কলোনিতে সভা হয়। ছাত্র ফ্রন্টের কমরেড সৌরভ, কৃষি মজুর সমিতি ও কৃষক সমিতির সংগঠক কমরেড তপন বটব্যাল, সজল অধিকারী, মুকুল কুমার, সেখ আনারুল, গোপাল রায় সভাগুলিতে বক্তব্য রাখেন। চন্দননগরের উর্দিবাজারে সভা হয়, মুসলিম অধ্যুষিত এই অঞ্চলে গত বছর দাঙ্গা লাগানোর চক্রান্ত করেছিলো আর এস এস। এই সভায় বক্তব্য রাখেন কমরেড এ আই সি সি টি ইউর রাজ্য সম্পাদক বাসুদেব বসু, শ্রমিক সংগঠক সুদর্শন প্রসাদ সিং, বটকৃষ্ণ দাস, জেলার এ আই পি এফ দায়িত্বশীল কল্যাণ সেন, সুদর্শন বসু, গণসংগীত পরিবেশন করেন নারায়ণ দাস ও প্রশান্ত নাথ। মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ আগ্রহের সাথে আমাদের বক্তব্য শোনেন এবং আমাদের প্রচার মঞ্চে এসেও কয়েকজন বসেন।

এই প্রচার অভিযান শেষ হয় ১৬ ডিসেম্বর পাণ্ডুয়ায় অনুষ্ঠিত "লাল ঝান্ডার মিছিলের" মধ্যে দিয়ে। এই প্রচারাভিযানকে ধরে প্রচারপত্র ও পোস্টার বিলি করা হয়। সভাগুলি ছাড়াও পৃথকভাবে বিভিন্ন অঞ্চলে কর্মীরা প্রচারপত্র বিলি করেন ও বিভিন্ন স্টেশন সহ সংগঠনের কাজের ও তার লাগোয়া অঞ্চলে পোস্টারিং হয়।

১৬ ডিসেম্বর পান্ডুয়া স্টেশন থেকে শুরু হয় "লাল ঝাণ্ডার মিছিল"। মিছিলের শুরুতেই লাল ঝাণ্ডার মিছিল থেকে গেরুয়া বাহিনীকে প্রতিহত করার আহ্বান জানানোর ফ্লেক্স, সঙ্গে ছাত্রদের লিখে আনা নানা স্লোগানের পোস্টার আর লাল ঝাণ্ডায় সুসজ্জিত মিছিল পাণ্ডুয়ার বিস্তির্ণ অঞ্চল পরিক্রমা করে। ছাত্রদের তোলা উদ্দীপ্ত স্লোগানে গলা মেলাচ্ছিলেন মিছিলে সামিল ক্ষেতমজুর, শ্রমিকসহ সকলে। রাস্তার দুপাশে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষ উৎসাহভরে দেখছিলেন লাল ঝাণ্ডার মিছিল, সংগ্রহ করছিলেন প্রচারপত্র। মিছিল হাটতলা মোড়ে এসে শেষ হয়, এখানে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন কমরেড বাসুদেব বসু।

 

খণ্ড-25
সংখ্যা-38