খবরা-খবর
ধর্মঘট : পূর্ব বর্ধমান

জেলার ৮-৯ জানুয়ারি ধর্মঘট নিয়ে প্রচার এবং ধর্মঘট সফল করার জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি নেওয়া হয়। ৩১ ডিসেম্বর পূর্বস্থলী ২নং ব্লকের মেড়তলা থেকে গাড়ি করে প্রচার শুরু করে ব্লকের ৬টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় প্রচার করা হয়। গাড়িতে সিপিআই (এম-এল), এআইকেএম, এ আই এস এ ব্যানারে সজ্জিত থাকে। এ আই কে এম, আয়ারলা ও এ আই এস এ এ-র লিফলেট বিলি করা হয়। ২ জানুয়ারি মেমারী শহরে যৌথ উদ্যোগে সভা হয়। বক্তব্য রাখেন সিপিআই (এম-এল) জেলা কমিটি সদস্য কুনাল বক্সী। ৫ জানুয়ারি ফলেয়া স্টেশন বাজারে পথসভা করা হয়। বক্তা ছিলেন অশোক চৌধুরী, আর ওয়াই এ নেতা সজল দে এবং এআইকেএম-র রাজ্য সম্পাদক জয়তু দেশমুখ। সভা পরিচালনা করেন আয়ারলা-র জেলা কমিটির সদস্য শিবু সাঁতরা। ৬ জানুয়ারি অগ্রদ্বীপ বাজারে যৌথ সভা হয়। ঐদিনই কালনা থানার অকালপৌষ গ্রাম পঞ্চায়েতে মিছিল সংগঠিত করা হয় । ৭ জানুয়ারি ফলেয়া স্টেশন থেকে মশাল মিছিল বের করে ২টা পাইকারী সব্জি বাজার পরিক্রমা করে। পূর্বস্থলী ১নং ব্লকের নাদনঘাট গ্রাম পঞ্চায়েতের ইসলামপুর গ্রামে যৌথ মিছিল গ্রাম পরিক্রমা করে । কালনা ২নং ব্লকের বৈদ্যপুর বাসস্ট্যান্ড যৌথ সভা করা হয় । বক্তব্য রাখেন এআইকেএম-র রাজ্য সভাপতি অন্নদাপ্রসাদ ভট্টাচার্য ও প্রগতিশীল মহিলা সমিতি-র রাজ্য সম্পাদিকা ইন্দ্রানী দত্ত । মেমারী ২নং ব্লকের রানীহাটী গ্রাম ও সাতগাছিয়াতে মিছিল পথসভা অনুষ্ঠিত হয়। বক্তব্য রাখেন মনসুর মন্ডল। ৮ জানুয়ারি ধর্মঘটের শুরুতে পূর্বস্থলী ২নং ব্লকের কালেখাতলা চৌরাস্তায় অবরোধ করা হয় যৌথ উদ্যোগে কাটোয়া - কালনা রাজ্য সড়কের উপর। সকাল ৬টা থেকে সাড়ে আটটা পর্যন্ত অবরোধের পর পুলিশ অবরোধ তুলে দেয়। তারপর মিছিল করে সাড়ে নয়টা পর্যন্ত ব্যস্ত রেখে শেষ করা হয়। অবরোধে প্রায় তিনশো লোক সমুদ্রগড় : হরতাল, তাই রেল রোকো জমায়েতে ছিল।

ঐদিনই পূর্বস্থলী ১নং ব্লকের সমুদ্রগড় রেলওয়ে স্টেশনে যৌথ উদ্যোগে রেল অবরোধ করা হয়। এক ঘন্টা পর পুলিশ অবরোধ তুলে দেয়। তখন মিছিল করে সমুদ্রগড় বাজারে কালনা-কাটোয়া রাজ্য সড়ক অবরোধ করে দেওয়া হয়। ঘন্টা খানেক পরে পুলিশ ব্যাপক বাহিনী নিয়ে এসে অবরোধ তুলে নিতে বাধ্য করে। ঐদিনই সকাল ৬টা থেকে বৈদ্যপুর বাসস্ট্যান্ড কালনা - বৈঁচি রাজ্য সড়ক অবরোধ করা হয়। আধ ঘণ্টা পরে পুলিশ এসে অবরোধ তুলে দেয়। যৌথ উদ্যোগে তারপর মিছিল করে গিয়ে এক কিলোমিটার দূরে আবার অবরোধ করে দেওয়া হয়। আবার পুলিশ এসে অবরোধ তুলে দেয়। আবার মিছিল করে গিয়ে কিছুটা দূরে সরে কিছু ক্ষণ পর আবার অবরোধ করে দেওয়া হয়। এবার পুলিশ নেতৃত্বকারী সিপিআই (এম-এল) এর জেলা কমিটির সদস্য রফিকুল ইসলাম, প্রদ্যুৎ ঘোষ সহ ৪জন কে গ্রেফতার করে। তার মধ্যে দুই জন সিপিএম এর কর্মী। কালেখাতলা অবরোধকারীদের দুই জনকে পরে বাড়ী থেকে গ্রেপ্তার করে। ধাত্রীগ্রাম থেকে দুই জন সিপিএম কর্মীকে গ্রেফতার করে। এই গ্রেফতারের প্রতিবাদে বিকেল চারটে নাগাদ তিন শতাধিক লোকের মিছিল বৈদ্যপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে বাজার পরিক্রমা করে। রাজ্যের অন্যান্য জেলার ধর্মঘট কর্মীদের মুক্তি দিলেও কালনা মহকুমা ধর্মঘট কর্মীদের মুক্তি দেয়নি। তৃণমূল থেকে পুলিশকে চাপ দিয়ে বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা এবং আটকে রাখায় বাধ্য করা হয়েছে।

৯ জানুয়ারি সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ ব্যান্ডেল-কাটোয়া লাইনের ভান্ডারটিকুরী স্টেশনে যৌথ উদ্যোগে ট্রেন অবরোধ করা হয়। আধ ঘণ্টা পরে পুলিশ এসে তুলে দেয়। তারপর মিছিল করে গিয়ে এক কিলোমিটার দূরে জাহান্নগর বাজারে রাস্তা অবরোধ করা হয়। পুলিশী হস্তক্ষেপে আধ ঘণ্টা পরে অবরোধ তুলে নিতে হয়। তারপর মিছিল করে কর্মসূচি সমাপ্ত করা হয়। কালনা কোর্টথেকে গ্রেপ্তার হওয়া কমরেডদের জামিনে মুক্ত করা হয়। বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ আগ্রাদহ গ্রামে যৌথ উদ্যোগে প্রতিবাদে মিছিল করা হয়েছে । শতাধিক মানুষ মিছিলে অংশ গ্রহণ করেন। মিছিলে বেশিরভাগ মানুষ সিপিআই (এম-এল)-র ঐ এলাকার বাসিন্দা।

খণ্ড-26
সংখ্যা-2