খবরা-খবর
সাগর দত্ত হাসপাতালে ছাত্রের ওপর যৌন নির্যাতনের প্রতিবাদে উত্তাল

 ১০ জানুয়ারি সাগর দত্ত হাসপাতাল এন্ড মেডিক্যাল কলেজের অ্যানাস্থিশিয়া বিভাগের চিকিৎসক রৌণক হাজারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি নিজের কোয়াটার্সে ডেকে নিয়ে প্রথমবর্ষের প্যারামেডিক্যাল ছাত্রকে যৌন নির্যাতন করেন। ১৫ জানুয়ারি ঘটনা জানাজানি হলে সাগর দত্ত হাসপাতাল প্যারামেডিক্যাল ছাত্রদের আন্দোলনে উত্তাল হয়ে ওঠে। যৌন নির্যাতনকারী চিকিৎসকের শাস্তির দাবিতে প্রথম বর্ষের ছাত্ররা মিছিল করে অধ্যক্ষর ঘরের সামনে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেন। দুঘণ্টা বিক্ষোভের পর তারা চিকিৎসক রৌণক হাজারীর কুশপুত্তলিকা নিয়ে মিছিল করে এবং শেষে সেই কুশপুত্তলিকা পোড়ানো হয়।

প্রথমবর্ষে প্যারামেডিক্যাল ছাত্র সংখ্যা ১৮২জন, তারা সবাই এই আন্দোলনের সাথে যুক্ত হয়েছেন। ছাত্ররা জানান, অভিযুক্ত চিকিৎসক বিভিন্ন বড় মাপের রাজনৈতিক নেতাদের সাথে নিজের ছবি দেখিয়ে নির্যাতিত ছাত্রটিকে ভয় দেখিয়ে মুখ বন্ধ রাখতে বলেছিল। ছাত্ররা বলছেন ক্ষমতা ও প্রভাব আছে এই কারণেই হয়তো এখনো পর্যন্ত পুলিশ এবং কলেজ কর্তৃপক্ষ এই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে দেরি করছে। ছাত্ররা আরও বলেন, অবিলম্বে অভিযুক্ত চিকিৎসকের বিরুদ্ধে কলেজ কর্তৃপক্ষ এবং পুলিশকে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে। টালবাহানা চলতে থাকলে ছাত্ররা বৃহত্তর আন্দোলনের পথে যেতে বাধ্য হবে। তারা আরও জানান রুগীদের যাতে কোন অসুবিধা না হয় তার জন্য তারা হাসপাতালের পরিষেবা চালু রেখেছেন এবং ক্লাস বয়কট করে অন্দোলন করছেন। স্থানীয় মানুষ হিসাবে অশোক সাহা, শিবশঙ্কর গুহরায় এবং নবেন্দু দাশগুপ্ত তিন জনের দল হাসপাতালে আন্দোলনরত ছাত্রদের সাথে দেখা করেন ও কথা বলেন। যে ছাত্রদের সাথে আলোচনা হয় তারা হলেন—বাবুন সরকার, ফিরোজ আহমেদ, কাবেরী নন্দী, রুমা মান্না, অভিজিৎ অধিকারি এবং অন্যান্যরা। ছাত্রদের সাথে। আন্দোলনের স্থলে গিয়ে দেখা গেল ছাত্ররা অভিযুক্ত চিকিৎসকের ছবি টাঙিয়ে রেখেছে এবং অপরাধীর শাস্তির দাবিতে বিভিন্ন ধরনের পোস্টার, প্লাকার্ড নিয়ে অবস্থান করছে, বিক্ষোভ দেখাচ্ছে ও মাঝেমাঝে শ্লোগান তুলছে অভিযুক্ত চিকিৎসকের শাস্তি চাই। ছাত্ররা বলছেন, দলমত নির্বিশেষে প্যারামেডিক্যাল ছাত্ররা এই আন্দোলনে সামিল হয়েছে। কোন রাজনৈতিক দল বা ছাত্র সংগঠন নিজেদের মত করে আসতে পারেন, কিন্তু ছাত্ররা কাউকে ডাকছে না। এখন পর্যন্ত কোন রাজনৈতিক দল শাসক বা বিরোধী কেউই তাদের অবস্থান নিয়ে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখায় নি বলেও তারা জানান। ২১ জানুয়ারি রবিবার ছাত্ররা মিছিল করে গিয়ে বেলঘরিয়া থানায় বিক্ষোভ দেখান ও ডেপুটেশন দেন। ডেপুটেশন থেকে ফিরে এসে ছাত্র প্রতিনিধিরা জানান, পুলিশ প্রশাসন প্রতিশ্রুতি দিয়েছে দোষী চিকিৎসকের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে। তারা আরও বলেন, যদি ব্যবস্থা না নেয় তাহলে তারা বৃহত্তর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবে।

অল ইন্ডিয়া স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে শুভ্রদীপ অধিকারির নেতৃত্বে এক প্রতিনিধিদল ছাত্রদের সাথে যোগাযোগ করেন এবং মিছিলে অংশ নেন।

খণ্ড-26
সংখ্যা-4