খবরা-খবর
ভাটপাড়ায় ঘৃণা ও বিদ্বেষের রাজনীতিতে মানুষ আতঙ্কিত

সংখ্যালঘু মুসলমানরা রমজানের উপোস করছেন। সামনেই ঈদ উল ফিতর বা খুশির ঈদ। আর কাঁকিনাড়া শহরে এক সপ্তাহ ধরে অধিকাংশ দোকানপাট বন্ধ হয়ে আছে। স্টেশন রোডের দোকানও খুলছে না। সব মানুষ আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। সাধারণ মানুষ শান্তি ও জীবনের স্বাভাবিক ছন্দে ফিরে আসার জন্য উদগ্রীব হয়ে উঠেছেন। তাদের জীবন-জীবিকা সব কিছু ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।

প্রাক লোকসভা নির্বাচনের মুখে অর্জুন সিং-এর দলত্যাগে সমগ্র ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্র বিশেষত ভাটপাড়া অঞ্চলে উত্তেজনার পারদ চড়ছিল। ভাটপাড়া বিধানসভা উপনির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থী মদন মিত্র বহিরাগতদের এনে এই অশান্তির আগুনে ঘৃতাহুতি দিলেন। ফল ঘোষণার পর এই অশান্তি কাঁকিনাড়ায় সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষের চেহারা নেয়।

বীজপুর ও নৈহাটিতে দুই শাসক দলের পেশীশক্তির রাজনীতি পার্টি কার্যালয় দখল ও পুনর্দখল প্রক্রিয়ায় বিজেপি ও তৃণমূল দলের মধ্যে রাজনৈতিক সংঘর্ষের রূপ নিয়েছে। তৃণমূলের অধিকাংশ দলীয় কাঠামো বিজেপিতে রূপান্তরিত হয়েছে। তৃণমূল নেতৃত্ব পুরোপুরি দিশাহীন ও উদ্যোগহীন অবস্থায় আছে। এখন পুলিশের উপর নির্ভর করে পার্টি অফিস দখলের প্রক্রিয়া শুরু করেছে। বিপরীতে বিজেপি বেশি বেশি করে ‘জয় শ্রীরাম’ শ্লোগান দিয়ে ব্যাপক জমায়েত করে টিএমসি নেতাদের এলাকা ছাড়তে বাধ্য করছে। আবার মূখ্যমন্ত্রী প্রকাশ্যে সভা করে অঞ্চল দখলের নামে প্রাদেশিকতার কথা বলে গেলেন। এখানকার গরিব খেটে খাওয়া মানুষরা কাজ হারাচ্ছেন। সাম্প্রদায়িকতা ও প্রাদেশিকতার দুই আতঙ্কের চাপে তারা পিষ্ট হচ্ছেন।

কাঁকিনাড়াতে আজও ১৪৪ ধারা জারি আছে। কিন্তুু পরিস্থিতির উন্নতি ঘটছে না। ধিকিধিকি আগুন জ্বলছেই। প্রশাসন সম্পুর্ণ ব্যর্থ। মোট সাতটি জুট মিল জগদ্দল-কাঁকিনাড়া অঞ্চলে আছে। এর মধ্যে কাঁকিনাড়া জুট মিল, নফরচাঁদ জুট মিল ও রিলায়েন্স জুট মিলের বহু শ্রমিক আতঙ্কে কাজে আসছেন না। প্রায় একই পরিস্থিতি অ্যাংলো ইন্ডিয়া জুট মিল ও জগদ্দল জুট মিলে।

এই অঞ্চলগুলো থেকে প্রায় দুহাজার সংখ্যালঘু মানুষ ঘর বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র চলে যেতে বাধ্য হয়েছেন। মানুষ সবচেয়ে বেশি আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন রুস্তম ঘাটি, কাঁকিনাড়া ৫ নং সাইডিং, চালতা রোড সহ বিভিন্ন মহল্লায়। সমস্ত শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষের প্রচেষ্টায় শান্তি ফিরিয়ে আনা এখন অন্যতম কাজ। এআইসিসিটিইউ অনুমোদিত বেঙ্গল চটকল মজদুর ফোরাম (বিসিএমএফ)-এর দুটি ইউনিয়ন কার্যালয় আছে। ইউনিয়ন অফিস চালু করার উদ্যোগ নেওয়ার চেষ্টা চলছে।
- নবেন্দু দাশগুপ্ত

খণ্ড-26
সংখ্যা-15