খবরা-খবর
স্কুল শিক্ষা সম্পর্কে সংসদীয় কমিটির রিপোর্ট

দেশের প্রায় অর্ধেক সরকারি স্কুলে বিদ্যুৎ সংযোগ বা খেলার মাঠ নাই, বাউন্ডারি ওয়াল নাই। শিক্ষা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখার সংসদিয় কমিটি গত সপ্তাহে রাজ্যসভায় এই তথ্য জানিয়েছে। এই কমিটি এটাও বলেছে যে একদিকে দেশের সরকারি স্কুলগুলিতে পরিকাঠামর চরম অভাব আছে, অন্যদিকে সেই পরিকাঠামো গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় বাজেট বরাদ্দও নাই বললেই চলে। বিজেপি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্র সরকারের মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের স্কুল শিক্ষা দপ্তর সম্প্রতি সরকারী স্কুলগুলির বাজেট বরাদ্দ আরও ২৭% কাটছাঁট করার প্রস্তাব এনেছে। এই প্রস্তাবে আশঙ্কা ব্যক্ত করেছে সংসদীয় কমিটি। এমনিতেই প্রস্তাবিত ৮২,৫৭০ কোটী টাকার মধ্যে মাত্র ৫৯,৮৪৫ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। কমিটি সুপারিশ করেছে গ্রামীণ কর্মনিশ্চয়তা প্রকল্পের সাথে মিলে স্কুলগুলির বাউন্ডারি ওয়াল বানানোর, এবং নব ও পুনর্নবায়নযোগ্য শক্তি মন্ত্রকের সাথে মিলে সৌর শক্তির ব্যবহার বাড়িয়ে স্কুলগুলিকে বিদ্যুৎ যোগানের ব্যবস্থা করার। কমিটি আরও বলেছে যে গত বছর ২০১৯-২০ সালে উচ্চমাধ্যমিক স্কুলগুলিতে ১০২১টি শ্রেণীকক্ষ নির্মাণ অনুমোদিত হওয়ার পরও কোত্থাও একটি শ্রেণীকক্ষও তৈরিহয়নি, ১৩৪৩ টি ল্যাবরেটরি হওয়ার কথা ছিল, হয়েছে মাত্র তিনটি, ১৩৫টি লাইব্রেরি স্যাংশন হওয়া অবস্থায় আছে কিন্তু একটিও চালু হয়নি।

বাস্তবে বিজেপি সরকার সরকারী স্কুল ব্যবস্থাকে ধীরে ধীরে তুলে দিতে চায়। সাধারণ দলিত গরিব আদিবাসী গ্রামীণ জনতার শিক্ষার সুযোগ দ্রুত সংকুচিত করতে চায়। বিজেপি-আরএসএসের হিন্দুরাষ্ট্র পরিকল্পনার অঙ্গ এই শিক্ষা সংকোচন। হিন্দুরাষ্ট্র আসলে ব্রাহ্মণ্যবাদী রাষ্ট্র। সেই রাষ্ট্রে জ্ঞান কেবলমাত্র উচ্চকোটির ব্রাহ্মণ বা নব্য ব্রাহ্মণদের অধিকারে থাকবে। স্বাধীনতার পর কয়েক দসকে উচ্চশিক্ষার দরজা সাধারণ মানুষের যেটুকু নাগালের মধ্যে এসেছিল, এখন তার প্রায় বেশিরভাগটাই অপহৃত হয়েছে, উচ্চশিক্ষাক্ষেত্রে পৌঁছে যাওয়া দলিত, নারী ও আদিবাসীদের ওপর বিভিন্ন ভয়াল হেনস্থা ও আক্রমণের ঘটনা সংগঠিতরূপেই চলছে সঙ্ঘ পরিবার তথা বিজেপির প্রত্যক্ষ মদতে। সেই সাথে এবার স্কুল শিিক্ষাকেও সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে কেবলমাত্র ব্যবসায়িক ক্ষেত্র হিসেবে গড়ে তুলতে চায় বিজেপি। ইতিমধ্যেই স্কুল সংযুক্তিকরণের নামে দেশের চল্লিশ হাজারের ওপর সরকারী স্কুল তুলে দেওয়া হয়েছে, গত ২ ডিসেম্বর ২০১৯ দেশের মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী (এক কথায় শিক্ষামন্ত্রী বলা হয়ে থাকে) রমেশ পোখরিয়াল লোকসভায় একথা জানিয়েছেন।

খণ্ড-27
সংখ্যা-7