ত্রিপুরা পার্টি কমিটির প্রেস বিবৃতি
Press Statement of Tripura

প্রতি
সম্মানিত জেলাশাসক ও সমাহর্তা,
উত্তর ত্রিপুরা জেলা, ধর্মনগর।
(বিডিও, কালাছড়া, আর ডি ব্লক, মহাশয়ের মাধ্যমে)

বিষয় : কোরোনা দ্বিতীয় আবহে মানবিক বিপর্যয়কালে মাইক্রো ফিনান্স সংস্থাগুলি কর্তৃক গরিব অংশের মহিলাদের জন্য দলগতভাবে দেয় ঋণের কিস্তি ও সুদ আদায় নিয়ন্ত্রণ করা, আপাতকাল বন্ধ করা, বিশেষ ছাড় দেওয়া, সরকারি ব্যাংক হতে স্বল্প সুদে ঋণ মঞ্জুর করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করার দাবি।

মহাশয়,

সারা ভারত প্রগতিশীল মহিলা সমিতি ও ক্ষুদ্র ঋণ মুক্তি সমিতি, ধর্মনগর মহকুমা কমিটির পক্ষ থেকে আমরা উপরে বর্ণিত বিষয়ের উপর আপনার মনোযোগ আকর্ষণ করছি। কোরোনা দ্বিতীয় ঢেউয়ের তান্ডবের সাথে অর্থনৈতিক মন্দার যুগলবন্দীতে স্বাধীন উত্তর ভারতে আমরা প্রথম এমন এক মানবিক সংকটের সম্মুখীন হয়েছি। এই ধ্বংসাত্মক পরিস্থিতিতে অর্থনীতির অভিমুখ আমূল পরিবর্তন করে জরুরী ভিত্তিতে জনস্বাস্থ্য ও শিক্ষা ক্ষেত্রে, সাধারণ জনগণের আয় ও রোজগার সৃষ্টির ক্ষেত্রে সরকারী ব্যয় বৃদ্ধি করতে ও ক্ষুদ্র ঋণ মুক্তির জন্য বিশেষ ছাড় দিতে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা দরকার। ইতিমধ্যে সারা রাজ্যে ও আমাদের জেলায় ঋণ গ্রহিতা গরিব পরিবারগুলির উপর মাইক্রো ফিনান্স সংস্থাগুলির জুলুমের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ধ্বনিত হচ্ছে। রিজার্ভ ব্যাংকের নীতি নির্দেশিকা এক্ষেত্রে অমান্য হচ্ছে। জেলা স্তরে কঠোরভাবে এগুলিকে নিয়ন্ত্রণ করা দরকার। অধিকাংশ গরিব সাধারণ পরিবারগুলির জন্য কাজ নেই। তাঁরা রোজগারহীন। আকাশছোঁয়া মূল্যবৃদ্ধি। এর সাথে যুক্ত হয়েছে কোরোনা দ্বিতীয় ঢেউয়ের তান্ডব। এই সংকটে ঋণের কিস্তি ও সুদ পরিশোধ করা অবাস্তব ও অমানবিক। আগস্ট বা সেপ্টেম্বরে আবার তৃতীয় ঢেউয়ের আশংকা প্রকাশ করছেন বিজ্ঞানীরা।

তাই আমাদের দাবি –

(১) মহামারীর সময় মাইক্রো ফিনান্স সংস্থাগুলি কর্তৃক দলগতভাবে ও ব্যক্তিগতভাবে দেয় ঋণের কিস্তি ও সুদ আদায় আগামী ছয় মাস অর্থাৎ ৩১ ডিসেম্বর, ২০২১ পর্যন্ত স্থগিত রাখতে হবে। এই ছয় মাসের জন্য সুদ মুকুব করতে হবে। সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশে যে কোনো ঋণ আদায়ের ক্ষেত্রে সরল সুদে হিসাব করতে হবে। প্রয়োজনে কেন্দ্রীয় সরকারকে এই ঋণের বোঝা গ্রহণ করে গরিবদের এই ক্ষুদ্র ঋণ ফাঁদ থেকে মুক্তি দিতে হবে।

(২) মাইক্রো ফিনান্স সংস্থাগুলির মহাজনী কারবার কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ ও নিয়মিত তদারকি করার জন্য জেলা স্তরে রেগুলেটরি অথরিটি গঠন করতে হবে (রিজার্ভ ব্যাংকের গাইডলাইন অনুসারে)।

(৩) সরকারী ব্যাংক হতে স্ব-সহায়ক দলভুক্ত মহিলাদের স্বল্প সুদে ঋণ দিতে হবে। দলভুক্ত মহিলা সদস্যদের দ্রুত কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। শহরে টুয়েপ ও গ্রামে পাহাড়ে রেগা প্রকল্পে ২০০ দিনের কাজ ও ভোগ্য পণ্য মূল্য সূচক অনুযায়ী দৈনিক মজুরি ৬০০ টাকা বৃদ্ধি করতে হবে।

(৪) বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা আইন, ২০০৫ অনুসারে লকডাউন (যে নামেই হোক না কেন) এর দায়ভার সরকারকে গ্রহণ করতে হবে। আয়কর দিতে হয় না এমন পরিবারে আগামী ছয় মাস প্রতি মাসে সাড়ে সাত হাজার টাকা করে নগদে অর্থ সহায়তা করতে হবে।

(৫) পেট্রোপণ্য, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ও ঔষধপত্রের লাগামহীন আকাশছোঁয়া মূল্যবৃদ্ধি রোধ করতে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

ধন্যবাদ সহ
পম্পা নাথ, সভাপতি, ঋণ মুক্তি সমিতি।
আতারুন নেছা, সম্পাদক, ঋণ মুক্তি সমিতি।
সম্পা নাথ, কোষাধক্ষ্য, ঋণ মুক্তি সমিতি।
ধর্মনগর, উত্তর ত্রিপুরা।

খণ্ড-28
সংখ্যা-20