স্টেট অফ ওয়ার্কিং ইন্ডিয়া, ২০২১
State of Working India

খুবই আলোচিত তথ্যানুসন্ধানী এই সমীক্ষা কিছুদিন আগে প্রকাশ করেছে আজিম প্রেমজি বিশ্ববিদ্যালয়। পূর্ণাঙ্গ ও বিস্তৃত এই সমীক্ষা অনেক বিষয়কেই সামনে এনেছে। গতবছর কোভিড হানায় দেশের অর্থনীতি, কাজের বাজার, আয়, ক্রমবর্ধমান আর্থিক বৈষম্য ও দারিদ্র কি কি প্রভাব ফেলেছে, তা এই সমীক্ষা তুলে ধরেছে। এখানে দেখানো হয়েছে, মাথা চাড়া দিয়ে ওঠা আর্থিক বৈষম্য, মজুরির অবক্ষয় রীতিমতো এক উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। সমীক্ষা বলেছে, “আমরা বিশ্লেষণ করে দেখিয়েছি, অতিমারি ইনফর্মাল ক্ষেত্রকে আরও অনেক বেশি সম্প্রসারিত করেছে, যার দরুণ সিংহভাগ শ্রমিকদের উপার্জন মারাত্বকভাবে নীচে নেমে গেছে আর, এক ধাক্কায় দারিদ্র বেড়ে গেছে অনেকটাই। মহিলা ও অল্প বয়সী শ্রমিকরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন সবচেয়ে বেশি। এই পরিস্থিতিকে যুজতে পরিবারগুলো কম খাবার খেয়েছে, ধার করেছে, বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছে নিজেদের কিছু গচ্ছিত জিনিষপত্র। সরকারী সাহায্য নিদারুণ বিপর্যয়ের হাত থেকে সাময়িকভাবে ঠেকালেও সাহায্যের প্রকল্পগুলো ছিল অসম্পূর্ণ, অনেক বিপন্ন শ্রমিক পরিবার থেকে গেছে এই সমস্থ কিছুর বাইরে। আমরা দেখেছি, দুটো কারণে বাড়তি সরকারী সাহায্য আবশ্যক – এক, প্রথম বছরের ক্ষয়ক্ষতিকে মেরামত করা আর পরের বিষয়টা হল, দ্বিতীয় ঢেউএর অভিঘাতকে আগে থেকেই অনুমান করে নেওয়া।”

আলোচ্য সমীক্ষা কর্মসংস্থানের উপর কোভিডের অভিঘাত নিয়ে আলোকপাত করেছে। লকডাউনের প্রথম দুই মাস, অর্থাৎ এপ্রিল-মে ২০২০-তে দশ কোটি কাজ খোয়া যায়। প্রায় দেড় কোটি শ্রমিক প্রথম ঢেউয়ের সময় কাজ হারায়, তারপর তা আর কোনোদিনও ফিরে পায়নি। যদিও বাকি কাজ হারানো বেশিরভাগ শ্রমিকরা জুন ২০২০-তে কাজে ফিরে আসে। এটা খুবই লক্ষণীয় যে ২০২০’র জুনের কোভিডের প্রথম ঢেউ-এর পর একটা গড় পরিবারের মাথাপিছু মাসিক আয় ছিল মাত্র ৪,৯৭৯ টাকা, সেই বছরের জানুয়ারী মাসে যা ছিল ৫,৯৮৯ টাকা। এটা দেখা গেছে যে, গড়পড়তা আয়ের এই অবক্ষয়ের পেছনে ৯০ শতাংশই হল উপার্জন কমে যাওয়ার ফলে, আর ১০ শতাংশ ছিল কাজ হারানোর জন্য। বিজেপি শাসিত রাজ্যে অবস্থার আরও অবনতি হয় এই কারণে যে, সেখানে কর্মদিবস বাড়িয়ে ১২ ঘণ্টা করে দেওয়া হয়, আর আরও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, ওভারটাইম কাজের জন্য তাঁদের দেওয়া হয়নি বাড়তি এক কানাকড়িও।

খোয়া যাওয়া কাজ

সমীক্ষা দেখিয়েছে, শ্রমিকরা কোভিডের আগে যে কাজের সাথে যুক্ত ছিলেন, সেখানে আবার বাধ্যতামূলকভাবে ফিরে গেছেন অনেকটা কম মজুরিতে। যাঁদের কাজ চলে যায়, তাঁরা স্বনিযুক্ত বিশাল ইনফর্মাল বাহিনীতে নাম লেখাতে বাধ্য হন। কাজ হারানো মহিলারা ফের ফিরে যান ঘরকন্নার কাজে।

সবচেয়ে মারাত্মক আঘাত নেমে আসে মহিলাদের উপর। ৪৭ শতাংশ মহিলা বরাবরের জন্য কাজ হারান, মাত্র ১৯ শতাংশ মহিলা কোনক্রমে তাঁদের আগের কাজে টিকে থাকতে পেরেছেন। এদিকে, ৬১ শতাংশ পুরুষ তাঁদের কাজ টিকিয়ে রাখতে পারেন আর ৭ শতাংশ কাজ হারান। পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের উপর কোভিডের অভিঘাত অত্যন্ত নির্দয়। আরেকটা বিষয় সমীক্ষা দেখিয়েছে যে কর্মরত মহিলাদের তুলনায় ঘরের কাজে আবদ্ধ মহিলারা অনেক বেশি সময় ব্যয় করতে বাধ্য হয়েছেন।

সমীক্ষা অনুযায়ী, ১৫ থেকে ২৪ বছরের শ্রমিকদের মধ্যে ৩৩ শতাংশ পর্যন্ত এবং ২৫ থেকে ৪৪ বছরের শ্রমিকদের মধ্যে ৬ শতাংশ ডিসেম্বর ২০২০ অবধি কোনো কাজ জোগাড় করতে পারেননি। কোভিডের প্রথম ধাক্কায় মহিলাদের পরেই অল্প বয়সী শ্রমিকরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হন।

ফর্মাল থেকে ইনফর্মাল

প্রথম লকডাউনের পর অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ ও ইনফর্মাল কাজে যোগ দেওয়া ছাড়া শ্রমিকদের সামনে আর অন্য কোনো রাস্তা খোলা ছিল না। দেখা যাচ্ছে যে প্রায় অর্দ্ধেকের ও বেশি বেতনভুক ফর্মাল কাজের সাথে যুক্ত শ্রমিকরা বাধ্য হয়ে যুক্ত হন ঝুঁকিপূর্ণ ইনফর্মাল কাজের সাথে। এদের মধ্যে ৩০ শতাংশ স্বনিযুক্ত কাজে, ক্যাজুয়াল ও ইনফর্মাল কাজে যথাক্রমে ১০ এবং ৯ শতাংশ। আবার, এই কাজগুলোও জাতপাত ও ধর্মের ভিত্তিতে ভীষণভাবে বিভাজিত। দেখা গেল, হিন্দু ও সাধারণ বর্গের শ্রমিকরা স্বনিযুক্ত কাজের দিকে ঝুঁকেছেন, আর জাতপাতভিত্তিক প্রান্তিক শ্রমিক এবং মুসলমানেরা দৈনিক দিন মজুরের কাজে যোগ দিয়েছেন। এই সমীক্ষা একটা দৃষ্টি আকর্ষণকারী পর্যবেক্ষণ সামনে তুলে এনেছে। “কৃষি, নির্মাণ ও খুদে ব্যবসা হল এমনই ক্ষেত্র যেখানে কাজ হারানো মানুষগুলো ঠাঁই পেতে গেছে। শিক্ষা-স্বাস্থ্য-পেশাগত ক্ষেত্র থেকে সবচেয়ে বেশি মানুষ অন্যক্ষেত্রে সরে যেতে বাধ্য হয়েছেন। দেখা গেছে, শিক্ষাক্ষেত্র থেকে ১৮ শতাংশ মানুষ কৃষিক্ষেত্রে আর একই শতাংশ মানুষ স্বাস্থ্যক্ষেত্র থেকে কাজ হারিয়ে যোগ দিয়েছেন খুদে ব্যবসায়। হিন্দুদের বেলায় কৃষি হল এমন এক ক্ষেত্র যেখানে অন্যান্য ক্ষেত্র থেকে ১০-২০ শতাংশ শ্রমিক কাজে যোগ দেন। আর মুসলমানদের ক্ষেত্রে ব্যবসা হল সেই ক্ষেত্র যেখানে অন্যান্য পেশা থেকে ২০-৩৫ শতাংশ শ্রমিক যুক্ত হন।” ইনফর্মাল ক্ষেত্র ও নিম্নগামী আর্থিক অবস্থার দরুণ অতিমারির সময়ে শ্রমিকদের গড় আয় সংকুচিত হয় ১৭ শতাংশ। স্বনিযুক্ত ও ইনফর্মাল শ্রমিকদের উপার্জন সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

Working India-2021

 

ক্রমবর্ধমান বৈষম্য ও অসাম্য

দেশের গরিব মানুষদের সবচেয়ে বেশি মূল্য চোকাতে হয়েছে। দরিদ্রতম ২০ শতাংশ মানুষ খুইয়েছেন তাঁদের সমস্ত সঞ্চয়। আর, আদানি-আম্বানিরা এই কোভিডকালে সবচেয়ে বেশি লাভবান হয়েছে। প্রতি ঘণ্টায় আম্বানি কামায় ৯০ কোটি টাকা, আর আদানি এশিয়ায় দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ১৪নং স্থান দখল করে নেয়।

রিপোর্ট জানাচ্ছে, “এই অতিমারির সময়ে জাতীয় ন্যূনতম মজুরির (অনুপ সথপতি কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী যা দৈনিক ৩৭৫ টাকা) নীচে নেমে গেছে ২৩ কোটি মানুষ। এর অর্থ, নতুন করে দারিদ্রের কবলে এসেছেন গ্রামাঞ্চলের ১৫ শতাংশ আর শহরাঞ্চলে ২০ শতাংশ। অতিমারী গ্রাস না করলে, গ্রামাঞ্চলে ৫ শতাংশ ও শহরাঞ্চলে ১.৫ শতাংশ দারিদ্র হ্রাসপ্রাপ্ত হত ২০১৯-২০’র মধ্যে আর ৫ কোটি মানুষকে দারিদ্র সীমার নীচ থেকে উপরে টেনে তোলা যেত।”

সাধারণ মানুষ দিনে কম খেয়ে, নিত্যকার, জরুরি প্রয়োজন সামগ্রী কমিয়ে সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেছে এই অতিমারিকে। নিজেদের গচ্ছিত জিনিষপত্র বিক্রি করে, বন্ধু-আত্মীয় পরিজনের বা মহাজনদের কাছ থেকে ঋণ নিতে বাধ্য হচ্ছেন।

সরকারী সাহায্যের মরীচিকা

প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ যোজনা বহুকিছুর প্রতিশ্রুতি দেয় – বিনামূল্যে রেশন, নগদ টাকা অ্যাকাউন্টে পাঠানো, মনরেগা, পিএম-কিষাণ পেমেন্ট, পেনশন প্রদান ইত্যাদি। আত্মনির্ভর ভারত প্রকল্পও ঘোষণা করেছিল, বিপন্ন পরিবারগুলোকে অতিমারীর আঘাত থেকে পরিত্রাণ দেওয়া হবে। কিন্তু, রাজস্থান ও কর্ণাটকের এক সমীক্ষা দেখিয়েছে যে যাদের কাছে রেশন কার্ড রয়েছে, তাঁদের মধ্যে মাত্র ৬৫ শতাংশ মানুষ স্বাভাবিকের তুলনায় কিছু মাত্রায় বেশি শস্য পেয়েছেন, কিন্তু ৩৫ শতাংশ পেয়েছেন আগের বরাদ্দই। জনধন অ্যাকাউন্ট রয়েছে এমন ৬০ শতাংশ মহিলা আর্থিক সাহায্য পেয়েছেন, কিন্তু ৩০ শতাংশ মহিলা সেখান থেকে পুরোপুরি বঞ্চিত। আরও পরিতাপের বিষয় হল, ১০ শতাংশ মহিলা এই নগদ সাহায্যের ব্যাপারে বিন্দু-বিসর্গও জানেন না।

অতিমারির সময়ে গ্রামীম পরিবারগুলোর জন্য মনরেগার কাজটি খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। সমীক্ষা দেখিয়েছে, নভেম্বর ২০২০ পর্যন্ত ২৫২ কোটি শ্রমদিবস সৃষ্টি হয়েছে, গত বছরের তুলনায় এই বৃদ্ধির হার ৪৩ শতাংশ। গত বছরের তুলনায় এক কোটি বেশি মানুষ এই প্রকল্পে কাজ করেছেন। তাও দেখা যাচ্ছে যে আরও বেশি মানুষের তরফ থেকে কাজের চাহিদা ছিল। মোট কর্মপ্রার্থীর মধ্যে ৫৫ শতাংশ গ্রামীণ জনসংখ্যা এই কাজ পেয়েছে। আর্থিক অনটনকে কিছুটা সামলাতে আরও বেশি কাজের চাহিদা থাকলেও তা পূরণ হয়নি।

কাজ খোয়ানোর পাশাপাশি পরিযায়ী শ্রমিকরা বিরাটভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন। দেখা যাচ্ছে, লকডাউনের ফলে ৮১ শতাংশ পরিযায়ী শ্রমিক কাজ হারিয়েছেন, পরিযায়ী নন এমন শ্রমিকরা কাজ হারিয়েছেন ৬৪ শতাংশ, ৩১ শতাংশ রেশন পাননি, আর ১৫ শতাংশ অপরিযায়ী পাননি রেশন।

সুপারিশ

এই সমীক্ষার ভিত্তিতে তারা যে সুপারিশ করেছেন, তার মূল মূল কয়েকটি এখানে দেওয়া হল।

১) এখনো পর্যন্ত সরকার মোট জিডিপির মাত্র ১.৫-১.৭ শতাংশ বরাদ্দ করেছে, যা খুবই নগন্য। কোভিডের পরবর্তী ঢেউ’র প্রকোপ আরও বেশি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আর তা কর্মক্ষেত্র, আয়, খাদ্য নিশ্চয়তা, স্বাস্থ্য ও শিক্ষার উপর আরও প্রভাব ফেলবে। রাজ্য সরকারগুলো কোভিড পরিস্থিতিকে সামাল দিতে ইতিমধ্যেই আর্থিক সংকটের সম্মুখীন হয়েছে। তাই, এখন কেন্দ্রীয় সরকারকেই এগিয়ে এসে বাড়তি ব্যয় বরাদ্দ করতে হবে।

২) আমরা নিম্নোক্ত কয়েকটি জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণের সুপারিশ করছি।

  • এবছরের শেষ পর্যন্ত বিনামূল্যে রেশন বিতরণ।
  • শুধুমাত্র জনধন অ্যাকাউন্ট যাদের রয়েছে, তাঁদের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে, যত বেশি সংখ্যক বিপন্ন পরিবার আছে, তাদের পরিবার পিছু ৫,০০০ টাকা নগদ আগামী তিন মাসের জন্য দিতে হবে।
  • মনরেগার কাজের সম্প্রসারণ করতে হবে, ন্যূনতম ১৫০ দিনের কাজ দিতে হবে, রাজ্যগুলোর ন্যূনতম মজুরির সমান মজুরি দিতে হবে, এই খাতে অর্থ বরাদ্দ অন্তত ১১.৭৫ লক্ষ কোটি টাকা করতে হবে।
  • মহিলাদের অগ্রাধিকারে রেখে সবচেয়ে বিপর্যস্ত জেলাগুলোতে শহুরে কর্মসংস্থানের পাইলট প্রজেক্ট শুরু করা।
  • বয়স্কদের পেনশন প্রকল্পে ১,৫০০ টাকা বরাদ্দ করা।
  • যে সমস্ত মনরেগার কর্মীরা নির্মাণ কাজ করছেন, তাদের সবাইকে নির্মাণ শ্রমিকদের যে আইন রয়েছে তাতে অন্তর্ভুক্ত করে নেওয়া, যাতে তাঁরা ওই আইনের সামাজিক সুরক্ষার রক্ষাকবচের আওতায় আসতে পারেন।
  • ২৫ লক্ষ অঙ্গনওয়াড়ি ও ১,৩০,০০০ আশা কর্মীদের জন্য আগামী ৬ মাস ৫,০০০ টাকা কোভিড ভাতা চালু করা।

এই সমস্ত পদক্ষেপগুলো একযোগে নিলে বাড়তি ১৫.৫ লক্ষ কোটি টাকা খরচ করতে হবে, যা কোভিড ত্রাণ প্রকল্পে আগামী দু’বছরের জন্য মোট জিডিপির ৪.৫ শতাংশ হবে। সংকটের যা ব্যাপকতা ও গভীরতা, তাতে এই অর্থ বরাদ্দ যুক্তিযুক্ত।

৩) এই আশু পদক্ষেপগুলো না নিলে নেমে আসা দুরাবস্থা বজায় থেকে যাবে, যা এতদিন পর্যন্ত আর্থিক ক্ষেত্রে যা যা অর্জিত হয়েছে, তার সবটাই লোপাট করে নেবে। বেড়ে চলা দারিদ্র, সঞ্চয়ে ধারাবাহিক ক্ষয়, এবং উৎপাদনশীলতার উৎসগুলো শুকিয়ে আসলে দারিদ্রের পাপচক্রে আবর্তিত হবে। পরিবারগুলোর আর্থিক টানাটানি পুষ্টিকর খাদ্য ও শিক্ষার ক্ষেত্রে বিস্তার লাভ করলে তার ফল হবে সুদুরপ্রসারি। শ্রমবাজার থেকে মহিলাদের ক্রমে ক্রমে সরে আসা আগামীদিনে বিরাট জেন্ডার ঘাটতির জন্ম দেবে। এই কর্মহীন বছরগুলো যুবকদের উপার্জন ও উৎপাদনশীলতার উপরও বিস্তর প্রভাব ফেলবে।

৪) জাতীয় স্তরে এক কর্মসংস্থান নীতির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। যে সমস্ত কর্মীরা এই সংকটের সময়ে ফ্রন্টলাইনে থেকে ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করেছেন, এতোদিন পর্যন্ত তাঁদের ভূমিকার যে অবমূল্যায়ন করে আসা হয়েছে, তা এবার সংশোধন করার সময় এসেছে। নাছোড় ইনফর্মাল কর্মক্ষেত্রকে টিকিয়ে রাখা, অত্যন্ত অপর্যাপ্ত কর্মসংস্থানের সুযোগ – এই সবকিছু বদলানো, অর্থনীতির পুনরুজ্জীবনে কাঠামোগত পরিবর্তন আনা খুব জরুরি। রাষ্ট্রীয় বিনিয়োগকে বাড়ানো, সামাজিক পরিকাঠামোতে সরকারের পক্ষ থেকে অনেক বেশি বিনিয়োগ, শ্রমিকদের কল্যাণমূলক বোর্ডগুলোকে আরো মজবুত ও ঝুঁকিপূর্ণ কাজ অবলুপ্ত করা, মানুষের হাতে অর্থের জোগান বাড়ানো প্রভৃতি একগুচ্ছ সুপারিশ এই সমীক্ষা করেছে।

“আমরা আশা করব, দেশের সামনে আর্থিক পুনরুজ্জীবনের যে কঠিন চ্যালেঞ্জ সামনে রয়েছে, এই সুপারিশগুলো সেই কঠিন যাত্রাপথ অতিক্রম করতে সাহায্য করবে।

(সৌজন্য স্বীকার : ওয়ার্কার্স রেজিস্ট্যান্স, জুন সংখ্যা)

খণ্ড-28
সংখ্যা-21