খবরা-খবর
বেকারত্বের বিরুদ্ধে, কাজের দাবিতে নদীয়ার নওপাড়ায় প্রতিবাদ দিবস
Against unemployment

“যারা জন্মায় আর খাটে
খাটে আর মরে
যারা পিঁপড়ের মতো
পোকামাকড়ের মতো
শীতরাত্রির ঝড়া পাতার মতো...
যাদের দেখার জন্য
এবং ঠকাবার জন্য
আপনারা বিরাট মঞ্চে
উঠে দাঁড়ান ...”

(বেকারের চিঠি, মণিভূষণ ভট্টাচার্য)

করোনা লকডাউন অথবা বিধিনিষেধের প্রভাবে মাত্র এক সপ্তাহেই দ্বিগুণ হয়ে উঠেছে গ্রামাঞ্চলের বেকারত্ব। কৃষিকাজে মন্দার ফলে এখন কার্যত সঙ্কটের মুখে দেশের গ্রামীণ অর্থনীতি। এই প্রেক্ষাপটে দাবি উঠেছে ১০০ দিনের কাজ চাই। কিন্তু নদীয়ার গ্রামাঞ্চল ধুবুলিয়ার নওপাড়া অঞ্চলে বেছে বেছে দলীয় আনুগত্য দেখে অত্যন্ত সীমিত সংখ্যককে কাজ দেওয়া হচ্ছে। বঞ্চিত থেকে যাচ্ছে ব্যাপক কর্মহীন গ্রামীণ শ্রমজীবীরা। এর প্রতিবাদে বিক্ষোভ কর্মসূচি সংগঠিত হয় স্থানীয় সোনাতলা মোড়ে। স্থানীয় সিপিআই(এমএল) কর্মী কলমউদ্দিন বিশ্বাস বললেন, এই অঞ্চলে গত বছর স্বল্প সংখ্যক কিছু মানুষ কাজ পেয়েছে ৭০ দিন, আর ব্যাপক জবকার্ডধারীরা? কেউ পেয়েছে ৭ দিন! আদৌ কাজ পায়নি বহুসংখ্যক। এইভাবে তৃণমূলের রাজত্ব চলছে। যেখানে কাজের কোন হিসাব নেই, স্বচ্ছতা নেই, চলছে গোপন দুর্নীতির চক্র। অপরদিকে কেন্দ্রের মোদী সরকার কর্মনিশ্চয়তা প্রকল্পে বরাদ্দ অর্থ কমিয়ে দিয়ে এটাকে কার্যত তুলে দিতে চাইছে।

এদিনের প্রতিবাদ সভায় উপস্থিত ছিলেন আরওয়াইএ নেতা রণজয় সেনগুপ্ত, অমিত মন্ডল, সিপিআই(এমএল) নেতা জয়তু দেশমুখ, স্থানীয় নেতা সায়দুল মোল্লা প্রমুখ। ডিজেল পেট্রোল সহ নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধিকারী মোদী সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র ধিক্কার জানানো হয়। এরাজ্যে নিয়োগে সীমাহীন দুর্নীতির বিরুদ্ধে, শূন্য পদে নিয়োগের দাবিতে শ্লোগান প্ল্যাকার্ড নিয়ে প্রোগ্রামে জনবহুল সোনাতলার মোড় সরগরম হয়ে ওঠে। বহু মানুষ দাঁড়িয়ে বক্তব্য শোনেন। এরাজ্যে করোনা ভ্যাকসিন থেকে শুরু করে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে সরকারি মদতে যে দুর্নীতির কারবার চলছে তার বিরুদ্ধে এবং দোষীদের শাস্তির দাবিতে বক্তারা সোচ্চার হয়ে ওঠেন। সরকারি পরিসংখ্যান বলছে গত ৯ মে দেশে গ্রামাঞ্চলে বেকারত্বের হার ছিল ৭.২৯%। মাত্র এক সপ্তাহ পরে ১৬ মে সেই বেকারত্বের হার বেড়ে হয়েছে ১৪.৩৪%। ‘সেন্টার ফর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকোনমি’ সূত্রে মিলেছে এমনই পরিসংখ্যান।

বেকারত্বের ছায়া দেখা যাচ্ছে শহরাঞ্চলেও

সেখানে মে মাসের এক সপ্তাহে ৩% বৃদ্ধি পেয়েছে বেকারত্ব। সপ্তাহের শেষে বেকারত্বের হার দাঁড়ায় ১৪.৭১%। সম্মিলিতভাবে বেকারত্বের হার এই এক সপ্তাহে ৮.৬৭% থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ১৪.৪৫% হয়েছে। মোদী সরকার সরকারি ক্ষেত্রে নিয়োগ বন্ধ করে দিয়েছে। চলছে ব্যাপক ছাঁটাই, মজুরি হ্রাস। ফিরিয়ে আনা হচ্ছে পরোক্ষ দাস শ্রমিক প্রথা। ঠিকা-চুক্তি প্রথা, চরম অনিশ্চিত বা অসন্মানজনক কাজ সৃষ্টি করে চলেছে আধা বা ছদ্ম বেকারত্ব! এই মারাত্মক অবস্থায় কাজের অধিকারের দাবিতে এলাকায় এলাকায় যুবকদের সমাবেশিত করার কর্মসূচি নিয়েছে যুব সংগঠন আরওয়াইএ। প্রচারের পরিসমাপ্তিতে মোমবাতি জ্বালিয়ে করোনাকালে প্রয়াতদের স্মরণে শ্রদ্ধা ও শোকজ্ঞাপন কর্মসূচি সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে।

খণ্ড-28
সংখ্যা-25