খবরা-খবর
২৮ জুলাই কমরেড চারু মজুমদারের শহীদ দিবস পালন
charu majumdar


২৮ জুলাই কমরেড চারু মজুমদারের মৃত্যুদিন, ১৯৭২ সালে তাঁকে পুলিশী হেফাজতে হত্যা করা হয়েছিল। এবার ছিল ৪৯ তম শহীদ স্মরণ বার্ষিকী। ২৮ জুলাই আবার একইসাথে পার্টি কেন্দ্র পুনর্গঠনেরও দিন, পার্টি কেন্দ্রের পুনর্নির্মাণ হয় ১৯৭৪ সালে।

প্রত্যেক বছরের মতো এবছরেও ২৮ জুলাই যথাযোগ্য মর্যাদার সাথে শহীদ স্মৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন ও অন্যান্য কর্মসূচির মধ্য দিয়ে পালন করা হয়। কর্মসূচি সংগঠিত হয় রাজ্যজুড়ে জেলায় জেলায় অঞ্চলে অঞ্চলে। মিটিং, মিছিল, কর্মীসভা, গণ শপথগ্রহণ, সদস্যপদ প্রদান আলোচনা সভা, শিল্পকলা ও ডিজিটাল প্রদর্শন, সাংস্কৃতিক পরিবেশন ইত্যাদির মাধ্যমে দিনটি মনে রাখার মতো করে উদযাপন করা হয়। দাবি তোলা হয় — ইউএপিএ, সিডিশন অ্যাক্ট, এনএসএ ইত্যাদি রাষ্ট্রদ্রোহ আইন সহ সমস্ত দমন আইন প্রত্যাহার কর! মিথ্যা মামলা সহ রাজনৈতিক বিষয় ও আন্দোলন সম্পর্কিত সমস্ত মামলা তুলে নাও! সমস্ত রাজনৈতিক বন্দীদের মুক্তি চাই! পার্টি নেতৃবৃন্দ, কর্মী ও সমর্থকশক্তি একসাথে আরও একবার পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বান নিয়ে চর্চা করেন। পার্টিকে জনগণের মধ্যে শক্তিশালী করে তোলা, ব্যাপক গণপ্রচার এবং আন্দোলন সংগঠিত করার সমন্বয়ে পার্টি সংগঠনকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া, বিস্তার ঘটানোর অঙ্গীকার করা হয়।

কিছু কার্যক্রমের কথা বিশেষ উল্লেখের দাবি রাখে। শিলিগুড়িতে কমরেড চারু মজুমদারের বাসভবনে তাঁর মূর্তিতে মাল্যদান করা হয়।

nadia-jadavpur

 

এছাড়া শহীদ স্মরণে মিছিল করে গিয়ে বাঘাযতীন পার্কে শহীদের আবক্ষ মূর্তির সামনে সভা করা হয়। বক্তব্য রাখেন অভিজিৎ মজুমদার, বাসুদেব বসু ও অন্যান্যরা। কলকাতায় পার্টির রাজ্য অফিসের সামনে শহীদ বেদীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করা হয়, বক্তব্য রাখেন দিবাকর ভট্টাচার্য। অফিস ঘরে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান আলোচক ছিলেন অতনু চক্রবর্তী। পার্টির যাদবপুর-ঢাকুরিয়া আঞ্চলিক কমিটি এক আলোচনা সভার আয়োজন করে গড়ফা “সংস্কৃতি চক্র” সভাঘরে। বিষয় ছিল ‘রাজনৈতিক মতপ্রকাশের অধিকারের ওপর রাষ্ট্রের আক্রমণ’। বক্তব্য রাখেন বন্দীমুক্তি আন্দোলনের সুপরিচিত সংগঠক ছোটন দাস, পিইউসিএল-এর অম্লান দত্ত, এনআরসি বিরোধী আন্দোলনের সংগঠক প্রসেনজিৎ বসু, অধ্যাপক শুভনীল চৌধুরী, অধ্যাপক মানস ঘোষ এবং নিজের জীবনে ইউএপিএ আইনের নিপীড়ন কি দুর্বিষহ বিভীষিকাময় হয়ে উঠেছিল সেকথা বলেন ডাঃ বিনায়ক সেন।

কৃষ্ণনগরে কমিউনিস্ট বিপ্লবীদের ও মানবাধিকার আন্দোলনের প্রতিনিধিদের সমন্বিত করে শহীদ স্মরণে মিছিল শহরের একাংশ পরিক্রমা করে। পরে তা এক সংক্ষিপ্ত সভার মধ্য দিয়ে শেষ হয়। বক্তাদের মধ্যে ছিলেন তাপস চক্রবর্তী, ইন্দ্রনীল চ্যাটার্জী ও জয়তু দেশমুখ। সঞ্চালনা করেন অমল তরফদার।

পার্টির উত্তর ২৪ পরগণা জেলা কার্যালয়ে (বেলঘরিয়া) দিনের বিশেষ কর্মসূচি ছিল আঞ্চলিক কমিটির পুনর্গঠনের উদ্দেশ্যে সভা। বিশেষত ছাত্র-মহিলা-শ্রমিক কমরেডদের উপস্থিতিতে এক প্রাণবন্ত আলোচনা হয়। সভাকে সমৃদ্ধ করতে সহজবোধ্য বক্তব্য রাখেন পার্টির জেলা সম্পাদক সুব্রত সেনগুপ্ত, সেই সঙ্গে উজ্জীবিত করে তোলা উপলব্ধি রাখেন ছাত্র সংগঠক দীপায়ন; স্থানীয় সংগঠক তন্ময় নন্দীর সমাপ্তি বক্তব্য ছিল প্রাঞ্জল।

বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরে এদিন গণ শপথকরণের মধ্য দিয়ে নতুন পার্টি সদস্যপদ প্রদান করা হয়। পার্থ ঘোষ দীর্ঘ কয়েক মাস যাবত কঠিন অসুস্থ থাকার মধ্যেও এদিন সংগঠনের উত্তরপাড়া-কোন্নগড় আঞ্চলিক সভায় আসেন এবং বক্তব্য রাখেন। কার্তিক পাল ছিলেন আসানসোলে শহীদ স্মরণ কর্মসূচিতে ও আলোচনা সভায়।

খণ্ড-28
সংখ্যা-28