খবরা-খবর
কাজ ও আবাস : পঞ্চায়েতের কিসসা
work and accommodation

লকডাউনে গ্রামীণ মজুরদের ভরসা ১০০ দিনের কর্মনিশ্চয়তা প্রকল্প। কিন্তু তাতে কাজ হয়েছে খুবই নগণ্য! সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হল সেই কাজ পেলেন কারা? লকডাউনের কর্মহীন সংকটকালে গ্রামের সমস্ত গরিব মজুররা কাজ পেলেন কি? এ প্রশ্নের জবাবে পঞ্চায়েত প্রধান বললেন, মেম্বাররা কাজের আবেদন ৪ক পূরণ করে যাদের নাম জমা দিয়েছে,তারাই কাজ পেয়েছে! মেম্বাররা কেন? জবকার্ডধারী মজুররা আবেদন করেনি? আমতা আমতা করে তিনি বললেন, হ্যাঁ লেবাররাই করেছে, তবে মেম্বার সাহায্য করেছে। তাহলে কাজ হবে বলে আগাম কোনও প্রচার করা হয়নি কেন? আইনে লেখা আছে কাজ শুরুর আগে মাইক দিয়ে বা সংসদ সভা ডেকে গ্রামের সকলকে জানাতে হবে। সে সব হয়নি কেন? বেছে বেছে বিরোধী দলের গরিবদের নাম বাদ দিয়ে কাজ হল কেন? দলবাজি চলছে কেন? পঞ্চায়েত প্রধান নিরুত্তর!

২৭ জুলাই নদীয়ার ধুবুলিয়া ব্লকের নওপাড়া ২নং অঞ্চলে ডেপুটেশনে গিয়ে সিপিআই(এমএল) প্রতিনিধিরা এই প্রশ্নগুলি তুলে ধরলেন। দাবি জানালেন, সমস্ত গরিবদের কাজ দিতে হবে, আইনসঙ্গত মজুরি দিতে হবে, কাজের হিসাব বা মাস্টার রোল দিতে হবে। চাপের মুখে প্রধান রাজি হলেন। এদিকে রাজ্যের মূখ্যমন্ত্রী লাগাতার বলে চলেছেন ১০০ দিনের কাজ সম্পূর্ণ করে দেওয়া হয়েছে, সারা দেশে বাংলা নাকি রেকর্ড গড়েছে! কিন্তু বাস্তবটা ঠিক তার বিপরীত! এই অঞ্চলে বিগত কয়েকমাসে কাজ হয়েছে মাত্র ৬ দিন! ডেপুটেশনের পর সোনাতলার মোড়ে এক প্রতিবাদ সভায় আরও বলা হয়, কেন্দ্রের বিজেপি সরকার লাগাতার ১০০ দিন কাজে বরাদ্দ কমিয়ে চলেছে। এখন তপশীলী জাতি উপজাতি শংসাপত্র না থাকলে মজুরি পাবে না এই বিধি চালু করে ওরা গরিব মজুরদের এই প্রকল্প থেকে বাদ দিতে চাইছে। বস্তুত নাগরিকত্ব যেমন ধর্ম দিয়ে হয় না, মজুরের পরিচয় জাতপাত দিয়ে হয় না। বিজেপি শুরু করেছে জাতের নামে বজ্জাতি।

সম্প্রতি গ্রামাঞ্চলে আবাস যোজনার একটা লম্বা লিস্ট বার করা হয়েছে। দেখা যাচ্ছে সেই তালিকায় এক একটি গ্রামে ৩০০/৪০০ নাম আছে। এমনকি একই পরিবারের মধ্যে ২/৩ জনের নাম আছে। পাকা বাড়ি রয়েছে, কিন্তু গোয়াল ঘর কিংবা রান্নার চালাঘরের ছবি তুলে নাম লেখানো আর কি! সমস্ত দিক থেকে বঞ্চিত গ্রামীণ মানুষের কাছে এটাই যেন দস্তুর হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেই তালিকায় এখন জবকার্ড নম্বর সংযোগ করার কাজ চলছে। পঞ্চায়েত প্রধান জানালেন ঝাড়াই বাছাই করে পরবর্তীতে চুড়ান্ত তালিকা তৈরি করা হবে। প্রখমে নিমরাজি হলেও অবশেষে সেই তালিকা আমাদের দেওয়া হবে বলে আশ্বাস পাওয়া গেল। গ্রামে গ্রামে মানুষের নজরদারী চালু করে প্রকৃত আবাসহীনরা যাতে বঞ্চিত না হয় সেটা সুনিশ্চিত করতে পাল্টা তালিকা জমা দেওয়া হবে বলে প্রতিনিধিরা জানিয়ে দিলেন। এই কর্মসূচিতে ছিলেন নওপাড়া পঞ্চায়েতে পার্টির একমাত্র মেম্বার ছবি বিশ্বাস,স্থানীয় নেতা সাইদুল মোল্লা, কলমউদ্দিন সেখ, শংকর রায় ও জয়তু দেশমুখ।

খণ্ড-28
সংখ্যা-28