খবরা-খবর
আগস্ট বিপ্লব দিবস ও আদিবাসী দিবসের মেলবন্ধন কর্মসূচি পান্ডুয়ায়
Indigenous Day program

৯ আগস্ট ঐতিহাসিক ‘ভারত ছাড়ো’ দিবসে বিভিন্ন গণসংগঠনের পক্ষ থেকে ‘কোম্পানিরাজ নিপাত যাক’, ‘ফ্যাসিস্ট মোদীরাজ নিপাত যাক’ আওয়াজ তুলে আগস্ট ক্রান্তি দিবসের দুই বীরাঙ্গনা মাতঙ্গিনী হাজরা ও অরুণা আসফ আলি নামাঙ্কিত মঞ্চে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালিত হয় হুগলির পান্ডুয়ায়।

এই দিনটি আদিবাসী দিবসও, তাই কর্মসূচির একটি পর্বে আদিবাসী অধিকার ও বিকাশ মঞ্চ জল জঙ্গল জমি থেকে আদিবাসীদের উচ্ছেদ রদ, ‘হাসা ভাষা লায় লাকচার’, লোকশিল্প ভাতা নিয়ে বঞ্চনার অবসান ইত্যাদি দাবিগুলি নিজস্ব ভাষায় তুলে ধরেন। আদিবাসী অধিকার ও বিকাশ মঞ্চের অন্যতম সংগঠক পাগান মুর্মুর তোলা স্লোগানে গলা মেলান অবস্থান মঞ্চে উপস্থিত দাবি সম্বলিত পোস্টার হাতে আদিবাসী মহিলারা। কৃষি আইন বাতিল করার দৃঢ় পণ, কৃষক সংগ্রামকে সংহতি জানিয়ে এবং তার পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গের কৃষকদের নির্দিষ্ট দাবি আলু ধান সহ ফসলের ন্যায্য দাম প্রদানে রাজ্য সরকারকে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তোলা হয়। ক্ষুদ্রঋণে জর্জরিত গরিব মহিলাদের দুঃখ এবং ক্রোধ ও লড়াইয়ের কথা তুলে ধরেন ঋণমুক্তি কমিটির রুমা আহেরি। ক্ষেতমজুর ঘরের মেয়ে শ্রাবণী মালিক জোরালো ভাষায় রেশন কার্ডে আধার সংযুক্তি নিয়ে গরিব মানুষদের হয়রানির বিরুদ্ধে ক্ষোভ ব্যক্ত করেন। আবাস যোজনা, কোভিড টিকাকরণে দুর্নীতি, শিক্ষক পদে চাকুরী প্রার্থীদের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ওপর পুলিশি হামলা প্রভৃতিতে রাজ্য সরকারের ভূমিকার তীব্র সমালোচনা করা হয়।

ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের এই ঐতিহাসিক দিনে নতুন করে কোম্পানিরাজ প্রতিষ্ঠা করার বিজেপির চক্রান্ত, রাষ্ট্রায়ত্ত ক্ষেত্রগুলোতে কর্পোরেটদের অনুপ্রবেশ ঘটানো এবং শ্রমকোডের বিরুদ্ধে বক্তব্য রাখেন ট্রেড ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দ। বক্তব্য রাখেন সজল অধিকারী (আয়ারলা রাজ্য সম্পাদক), গোপাল রায়, প্রগতিশীল মহিলা সমিতির চৈতালি সেন ও অর্পিতা রায়, বিপ্লবী যুব সমিতির সজল দে, আইসার সৌরভ, এআইসিসিটিইউ জেলা সম্পাদক বটকৃষ্ণ দাস, প্রদীপ সরকার, ভিয়েত ব্যানার্জি, মানবাধিকার কর্মী স্বপন মাতব্বর, এআইকেএম নেতা শুভাশিস চ্যাটার্জি। আবৃত্তি পরিবেশন করেন দীপনিকা সাহা ও তুষার বসু, সঙ্গীত পরিবেশন করেন বালির সংযোগ সাংস্কৃতিক দল, কর্মসূচি সঞ্চালনা করেন এআইকেএম জেলা সম্পাদক মুকুল কুমার। দীর্ঘ প্রায় ছ’ঘন্টা ধরে চলা এই অবস্থানে আদ্র এবং উষ্ণ আবহাওয়া উপস্থিত সাথীদের সংগ্রামী মেজাজকে টলাতে পারেনি, অবস্থান মঞ্চের অদূরে অবস্থিত নমাজগ্রামের মিড-ডে-মিলের মহিলা কর্মীরা দল বেঁধে অবস্থানে যোগদান করেন, জিটি রোডের পথ চলতি মানুষ এবং অন্যান্য বেশ কিছু অন্য বামপন্থী সংগঠনের কর্মীরাও উৎসাহের সাথে বক্তব্য শোনেন।

শ্লোগান

  • রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস প্রতিরোধ করুন, গণহত্যার রাজনীতি বিরোধিতা করুন।
  • শত শহীদের রক্ত, হবে নাকো ব্যর্থ।
  • ৫০ বছর অতিক্রান্ত, কাশীপুর-বরানগর গণহত্যার তদন্তে ভীত রাষ্ট্র।
  • গণহত্যার সন্ত্রাসী রাজনীতি সমাজ বদলের স্বপ্ন মুছে দিতে পারে না।
  • সত্তর দশকে কাশীপুর-বরানগর গণহত্যার প্রেক্ষিতে সরকারী কমিশনের রিপোর্ট প্রকাশ কর।
  • গণহত্যায় জড়িত পুলিশ অফিসার ও রাজনৈতিক গুন্ডাদের শাস্তি চাই।
খণ্ড-28
সংখ্যা-30