ত্রিপুরায় সংখ্যালঘু মুসলমানদের মসজিদ, ব্যক্তিগত দোকানপাট ও বাড়িঘরে সহিংস আক্রমণ ও ভয়ভীতি প্রদর্শন অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। দোষীদের চিহ্নিত করে দ্রুত গ্রেপ্তার ও আইনানুগ কঠোর শাস্তিমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় সবাই এগিয়ে আসুন।
২৩ অক্টোবর এক প্রেস বিবৃতিতে উপরোক্ত বক্তব্য তুলে ধরেন সিপিআই(এমএল) লিবারেশন ত্রিপুরা রাজ্য সম্পাদক পার্থ কর্মকার।
ঐ বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক সহিংসতামূলক ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে গত কিছুদিন ধরে ত্রিপুরার বিভিন্ন জেলায় সংখ্যালঘু মুসলমানদের ধর্মীয় মসজিদ, ব্যক্তিগত বাড়িঘর ও দোকানপাটে বেশ কিছু আক্রমণের ঘটনা ঘটেছে, ভয়ভীতি প্রদর্শন করা হচ্ছে। উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলি সংখ্যালঘু মুসলমানদের ধর্মীয় নিশানা করে হিন্দু জনমানসে ঘৃণা ও বিদ্বেষ ছড়িয়ে দিতে তৎপর এবং তারাই এসমস্ত উস্কানিমূলক আক্রমণের ঘটনাবলী পরিকল্পিতভাবে সংগঠিত করছে। এই উদ্দেশ্যে তারা সামাজিক মাধ্যমকে ব্যবহার করে দেশভাগের সময়কার স্পর্শকাতর সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনাবলী প্রচার করছে এবং এক সাম্প্রদায়িক প্রতিহিংসামূলক আবহ তৈরি করতে চাইছে। ফলে মিশ্র বসতি অঞ্চলে মুসলমানরা নির্ভয়ে বাজার হাটে যেতে পারছে না। ২১ অক্টোবর উদয়পুরে রাধাকিশোরপুর থানার মহারানী ও উত্তর মহারানী মিশ্র বসতি অঞ্চলকে সফট টার্গেট করা হয়। গত কিছুদিন ধরে উস্কানি এবং উত্তেজনা রোধে প্রশাসন শেষ মুহূর্তে ১৪৪ ধারা জারি করে। তা অমান্য করার ফলে পুলিশের সাথে উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। উত্তেজনা এখনো প্রশমিত হয়নি। থানায় মামলা হয়েছে। কিন্ত গ্রেপ্তার নেই। উস্কানি অব্যাহত। কাকড়াবনে ইচাছড়াতে রাতের অন্ধকারে মসজিদ পোড়ানো হয়। দক্ষিণ মুড়াপাড়াতে মসজিদে ও বাড়িঘরের বাউন্ডারি ভাঙচুর করা হয়। জামজুরি বাজারে দোকান ভাঙচুর করা হয়। ধর্মনগরে, পানিসাগরে, কৈলাশহরে, আগরতলায় মসজিদের উপর, ব্যক্তিগত দোকানপাটে ও বাড়িঘরে আক্রমণের ঘটনা ঘটে। ধর্মনগরে একজন আইনজীবীর বাড়ি আক্রান্ত হয়। অথচ এই প্রশ্নে সংবিধান প্রদত্ত দায় দায়িত্ব পালনে বিজেপি পরিচালিত রাজ্য সরকার দায়সারা ভূমিকা গ্রহণ করেছে। কারণ আসলে বিজেপি’র কার্যকর্তারাই উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের আড়ালে এই সাম্প্রদায়িক আক্রমণ, ভয়-ভীতি প্রদর্শনের ঘটনা সংগঠিত করছে। ফলে এই পরিস্থিতিতে সরকারের যে যে পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি প্রয়োজন, কার্যত সরকার তা ইচ্ছা করেই করছে না। তাই সরকারের দুর্বলতার কারণে যে কোন সময় কোনও বড় ঘটনা ঘটে যেতে পারে।
সিপিআই(এমএল) লিবারেশন ত্রিপুরা রাজ্য কমিটি এই পরিস্থিতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে এবং এই সমস্ত ঘটনার তীব্র নিন্দা জানায়। দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও আইনানুগ শাস্তিমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করার দাবি জানায়।