প্রতিবেদন
দানবীয় দেশদ্রোহ আইন এবং ইউএপিএ অবিলম্বে বাতিল করতে হবে
Act and the UAPA

মোদী সরকার ক্ষমতায় সাত বছর পার করে আট বছর চলার মধ্যে দিয়ে নিজের একটা পরিচিতিকে মার্কামারা করে তুলেছে। প্রকট হয়ে সামনে আসা এই পরিচিতিটা শুধু কর্পোরেটতন্ত্রের বিকাশের নির্দেশকই নয়, শাসনধারায় ঔপনিবেশিক দমনরীতির অনুগামী হওয়ারও পরিচায়ক। ভগৎ সিং-এর ব্যক্ত আশঙ্কা সত্যি হয়ে আজ রাষ্ট্রের মধ্যে চূড়ান্ত রূপে বিরাজমান — বাদামি সাহেবরা শাসন ক্ষমতায় বসে একনিষ্ঠভাবে ঔপনিবেশিক শাসনরীতির উপাসনা করে চলেছে। ঔপনিবেশিক শাসকদের মতই সরকারের সমালোচকদের ও বিরোধী মত পোষণকারীদের বরদাস্ত করা তাদের ধাতে নেই। আর তাই বিরোধীদের কয়েদে পুরতেই মোদী সরকার মেতে ওঠে এবং তার এই উদ্যোগে সে বড় অবলম্বন করে তোলে দুটো দানবীয় আইনকে। এই আইন দুটো হল দেশদ্রোহ/রাষ্ট্রদ্রোহ আইন এবং ইউএপিএ বা অবৈধ কার্যকলাপ নিরোধক আইন। আইন দুটো চরিত্রগতভাবে দানবীয় এবং মানবাধিকার হরণের উৎস হওয়ায় সেগুলো প্রত্যাহারের দাবি বারবারই উঠেছে এবং সম্প্রতি এনিয়ে সোচ্চার হলেন সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি আর এফ নরিম্যান। তিনি প্রস্তাব করেছেন — আইন দুটো প্রত্যাহারের বিষয়টা সরকারের শুভেচ্ছার ওপর ছেড়ে না রেখে সুপ্রিম কোর্টের উচিত নিজের ক্ষমতা প্রয়োগ করে দেশদ্রোহ আইনকে এবং ইউএপিএ’র ‘আপত্তিকর অংশকে’ বাতিল করা।

আইন দুটো প্রত্যাহারের দাবি কতটা ন্যায়সঙ্গত তার বিচারে মনোনিবেশ করাটা এখানে প্রাসঙ্গিক। ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২৪এ ধারাতেই দেশদ্রোহের সংজ্ঞা দেওয়া আছে এবং ঐ ধারাই হল দেশদ্রোহ আইন। স্বাধীনতা সংগ্ৰামীদের দমন করতে ও জেলে পুরতে আইনটা বানিয়েছিল ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসকরা এবং রং নির্বিশেষে পরের পর সরকারগুলো সাগ্ৰহে এই আইনকে চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। কোনো ব্যক্তি ব্যক্ত বা লিখিত কথার মধ্যে দিয়ে, অথবা সংকেত বা দৃষ্টিগ্ৰাহ্য উপস্থাপনার মধ্যে দিয়ে সরকারের প্রতি ‘রাজনৈতিক অসন্তোষ’ ব্যক্ত করলে তা দেশদ্রোহ বলে পরিগণিত হবে। ‘রাজনৈতিক অসন্তোষ’ শব্দবন্ধের মধ্যে সরকারের প্রতি বিদ্বেষ এবং বৈরিতার সমস্ত ধরনের অনুভূতি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট ১৯৬২ সালে কেদার নাথ সিং মামলায় বলেছিল যে, কেবলমাত্র হিংসা উস্কিয়ে তোলার উদ্দেশ্য থাকলে তবেই কাউকে দেশদ্রোহ আইনে অভিযুক্ত করা যাবে, অন্যথায় তার প্রয়োগ থেকে বিরত থাকতে হবে। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশিকাকে উপেক্ষা করাটাই রীতি হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং বিরোধিতার দমনে এই আইনের আকছার প্রয়োগ হচ্ছে। সরকারি তথ্য বলছে, ২০১৪ থেকে ২০১৯’র মধ্যে দেশদ্রোহ আইনে ৩২৬টা মামলা হয়েছে, এরমধ্যে মাত্র ৬ জনকে অপরাধী সাব্যস্ত করা গেছে। অর্থাৎ, এই আইনে অপরাধী সাব্যস্ত হওয়ার হার ২ শতাংশেরও কম। তবে, কিছু আইনজীবী, সাংবাদিক এবং বিদ্বজ্জন আর্টিকেল ১৪ নামে একটা পোর্টাল চালান এবং সেখানে দেশদ্রোহ আইনে অভিযোগ দায়েরের একটা পরিসংখ্যান রয়েছে। ঐ পোর্টালে ২০১০’র ১ জানুয়ারি থেকে ২০২০’র ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশদ্রোহ আইনে মামলার হিসাব রাখা হয়েছে, এবং তাদের দেওয়া তথ্য বলছে, নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতায় আসার পর এই আইনে মামলা বেড়েছে ৯৬ শতাংশ। ৩২৬ অভিযুক্তর মধ্যে ৬ জনের অপরাধী সাব্যস্ত হওয়ার সরকারি পরিসংখ্যান থেকে এটা একেবারেই পরিষ্কার যে, এই আইনে ব্যাপক সংখ্যাধিক অভিযুক্তকে বিনা দোষে জেলে আটক রাখাটাই সরকারের অভিপ্রায়।

এই আইন প্রত্যাহারের আবেদন জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে বেশ কয়েকটা মামলা হয়েছে। অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল ভমবাটকেরে তাঁর আবেদনে বলেছেন, এই আইন সম্পূর্ণরূপে অসাংবিধানিক এবং আইনটাকে “সুস্পষ্টরূপে ও দ্ব্যর্থহীনভাবে বাতিল করতে হবে”। এই আবেদনের শুনানি গ্ৰহণের সময় প্রধান বিচারপতি এন ভি রমণার নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ এবছরের ১৫ জুলাই এই ঔপনিবেশিক আইনকে অব্যাহত রাখা সম্পর্কে প্রশ্ন তোলেন। অ্যাটর্নি জেনারেলের উদ্দেশ্যে প্রধান বিচারপতির প্রশ্ন ছিল, “এটা ঔপনিবেশিক যুগের আইন আর এই আইনটা ব্রিটিশরা ব্যবহার করেছিল স্বাধীনতা আন্দোলনকে দমন করতে; মহাত্মা গান্ধী, গোখলে ও অন্যান্যদের কণ্ঠরোধ করতেই ব্রিটিশরা এটাকে ব্যবহার করেছিল। স্বাধীনতার ৭৫ বছর পরও আইনসমূহর মধ্যে এটাকে রাখার প্রয়োজনীয়তা কি এখনও রয়েছে। …” আইনটার অপব্যবহারের দিকে ইঙ্গিত করে তিনি আরও বলেন, “পরিস্থিতি এতটাই ভয়ংকর যে, কোনো রাজ্য বা কোনো দল কারুর কথা শুনতে না চাইলে তারা ঐ সমস্ত লোকজনকে মামলায় জড়াতে এই আইনটাকে ব্যবহার করবে”। তবে প্রধান বিচারপতি আইনটি প্রত্যাহার করে নেওয়ার পক্ষে মত দিলেও অ্যাটর্নি জেনারেল আইনটি চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার পক্ষে কথা বলেন এবং আইনটির উদ্দেশ্য সিদ্ধ হওয়ার জন্য সুপ্রিম কোর্টের কাছে কিছু নির্দেশাত্মক নীতি জারির অনুরোধ করেন। অ্যাটর্নি জেনারেলের কথা থেকে স্পষ্ট, মোদী সরকার যেকোনোভাবেই আইনটিকে অব্যাহত রাখার পক্ষে। সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি দীপক গুপ্তও বলেছেন, “বিরোধী মতের কণ্ঠরোধ করার লক্ষ্যে নাগরিকদের মধ্যে ভয়ের বাতাবরণ সৃষ্টির উদ্দেশ্যেই দেশদ্রোহ আইনকে ব্যবহার করা হচ্ছে এবং আইনটিকে অবিলম্বে বাতিল করতে হবে”।

ইউএপিএ তৈরি হয়েছিল নকশালবাড়িতে কৃষক অভ্যুত্থানের বছর ১৯৬৭ সালে। কেউ-কেউ বলে থাকেন, এই আইন তৈরির প্রেক্ষাপট ছিল চীন ও পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধ। আবার অনেক বিশেষজ্ঞের মতে, সেই সময়ের দেশজোড়া গণবিক্ষোভ দমনের লক্ষ্যেই তৈরি হয়েছিল এই আইন। আইনটাকে ২০০৪, ২০০৮ ও ২০১২ সালে তিন দফায় সংশোধন করে আজকের রূপ দেওয়া হয়েছে। এটা মূলত সন্ত্রাস মোকাবিলার আইন হলেও আজ এর প্রয়োগ বেশি হচ্ছে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ, সামাজিক ও মানবাধিকার আন্দোলনের কর্মী, সরকারের সমালোচকদের বিরুদ্ধে। অর্থাৎ, সন্ত্রাস প্রতিরোধের চেয়েও রাজনৈতিক প্রতিহিংসার চরিতার্থতাতেই সরকারের কাছে ইউএপিএ বড় অবলম্বন হয়ে উঠেছে। এই আইনটা যে দানবীয় তার সবচেয়ে বড় প্রমাণ হল, এই আইন প্রয়োগ করে সরকার তার অপছন্দের লোকজনকে বছরের পর বছর বিনা বিচারে জেলে আটক রাখতে পারে। এই আইনে চার্জশীট দেওয়ার সময়সীমা হল ছ’মাস। অর্থাৎ, বিচার প্রক্রিয়া শুরু না করে কোনো অভিযুক্তকে ছ’মাস জেলে বন্দী করে রাখা যাবে। এরপর পুলিশ ছ’মাস অন্তর একটা করে সাপ্লিমেন্টারি বা অতিরিক্ত চার্জশীট পেশ করে যায় আর অভিযুক্তর কারাবাসের মেয়াদ দীর্ঘায়িত হতে থাকে। ভীমা কোরেগাঁও মামলায় প্রথম চার্জশীট পেশ করা হয়েছিল ২০১৮ সালের নভেম্বরে। কিন্তু আজও অভিযুক্তরা জেলে আটক এবং বিচার শুরুই হয়নি। এই আইনে জামিন লাভ একরকম অসম্ভব হয়ে উঠেছে, এবং কেন তার আলোচনা একটু পরে করা হচ্ছে।

ইউএপিএ’তে পুলিশের হাতে বিপুল ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে যা রাষ্ট্রের হাতে নাগরিক পীড়নের আশঙ্কাকেই তীব্রতর করে তোলে। এই আইনে ‘সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ’এর পরিসরকে এতটাই ব্যাপ্ত করা হয়েছে যে সরকার চাইলে যে কোনো নাগরিককেই এই আইনে অভিযুক্ত করতে পারে। যে কোনো প্রতিবাদকেই এই আইনে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ বলে চালানো সম্ভব। ন্যায়বিচারের সাধারণ ধারণা বলে, অপরাধ প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত অভিযুক্তকে নির্দোষ বলে গণ্য করতে হবে। ইউএপিএ’তে এই ধারণার মান্যতা নেই। দানবীয় আইন টাডা ও পোটা বাতিল হয় যথাক্রমে ১৯৯৫ ও ২০০৪ সালে। কিন্তু ঐ আইন দুটোর যে ধারাগুলো অগণতান্ত্রিক, মানবাধিকার হরণকারী সন্ত্রাস সৃষ্টির জন্য সমালোচিত ও ধিক্কৃত হয়েছিল, সেগুলোকে ঠাঁই দেওয়া হল ইউএপিএ’তে।

ইউএপিএ’তে আগাম জামিনের কোনো সংস্থান নেই। এই আইনে জামিন লাভ সম্ভব হতে পারে যদি সরকার পক্ষের আইনজীবী, অর্থাৎ পিপি অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগকে যথার্থ বলে মনে না করেন। কিন্তু সরকার কাউকে আটক রাখতে চাইলে কোনো পিপি’র পক্ষে কি সেই অভিপ্রায়ের বাইরে যাওয়া সম্ভব? আবার, অভিযুক্ত সম্পর্কে কেস-ডায়েরি পড়ে আদালতের বিচারপতি যদি মনে করেন যে, অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলোকে সত্যি বলে মনে করার যুক্তিসম্মত কারণ রয়েছে, তবে পিপি জামিন দিতে সম্মত হলেও বিচারপতি জামিন খারিজ করতে পারেন। ইউএপিএ’তে জামিন আরো অসম্ভব হয়ে উঠেছে সুপ্রিম কোর্টের রায়ে। ইউএপিএ’তে একটা মামলায় জামিন সংক্রান্ত রায়ে বিচারপতি খানউইলকারের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ বলে, ইউএপিএ’তে অভিযুক্তর বিরুদ্ধে যে সমস্ত অভিযোগ আনা হয়েছে, আদালতকে প্রাথমিকভাবে সেগুলো সত্যি বলে মনে করতে হবে। ফলে, জামিনের শুনানির পর্যায়ে অভিযুক্তর পক্ষে পেশ করা সাক্ষ্যপ্রমাণগুলোর বিবেচনার কোনো সুযোগ আর থাকছে না। দিল্লী হাইকোর্ট ইউএপিএ’তে অভিযুক্ত দেবাঙ্গনা কলিতা, নাতাশা নারওয়াল এবং আসিফ তানহার জামিন মঞ্জুর করতে গিয়ে সরকারকে তিরস্কার করে বলে, ‘বিরোধী মতের দমনের’ জন্যই ইউএপিএ’কে ব্যবহার করা হয়েছে। তারা আরও বলে, সরকার যে কোনো প্রতিবাদকে ‘সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ’ বলে চালাতে চাইলে আদালত তাকে সমর্থন করবেনা। কিন্তু জামিন মঞ্জুরির দিল্লী হাইকোর্টের ঐ রায় সম্পর্কে সুপ্রিম কোর্ট আবার বলে, ঐ রায়ে ইউএপিএ’কে লঘু করে তোলা হয়েছে। এবং কোনো আদালত যেন ঐ রায়কে আইন-গ্ৰাহ্য দৃষ্টান্ত বলে কাজে না লাগায়। ফলে, ইউএপিএ’তে জামিন লাভ আকাশকুসুম ব্যাপার হয়েই উঠেছে এবং একটু আগে উল্লিখিত সুপ্রিম কোর্টের ঐ মতামতের পর কোনো আদালতের কোনো বিচারপতিই ইউএপিএ মামলায় জামিন দিতে প্রয়াসী হবেন না। আজ যখন অনেকেই এই অভিমত পোষণ করছেন যে, ইউএপিএ মামলায় জামিনের শুনানি প্রহসনের ব্যাপার হয়ে উঠেছে, সেটাকে আর অবান্তর বচন বলে মনে করার কোনো ভিত্তি থাকতে পারে না।

ওপরে যা উপস্থাপিত হল তার থেকে আইন দুটোর দানবীয় বৈশিষ্ট্য নিয়ে সংশয়ের কোনো অবকাশ থাকতে পারে না। যে কোনো বিরোধিতার দমনে মোদী সরকার এবং বিজেপি শাসিত রাজ্য সরকারগুলো আইন দুটোর যথেচ্ছ প্রয়োগ ঘটিয়েছে। জেএনইউ’র ছাত্র আন্দোলন, ভীমা কোরেগাঁওয়ের ঘটনা, সিএএ বিরোধী আন্দোলন — এই সমস্ত ন্যায়সঙ্গত সরকার বিরোধিতার দমনে এবং এমনকি দিল্লী দাঙ্গার তদন্তে কারচুপির মাধ্যমে বৈরি জ্ঞান করা মানুষজনদের মামলার জালে জড়াতে মোদী সরকারের কাছে পীড়নের হাতিয়ার হয়েছে এই দুটো আইন। আইন দুটোর নিরন্তর ও দুরভিসন্ধিমূলক প্রয়োগ গণতন্ত্রের বিপর্যয় ঘটিয়েছে ও ঘটিয়ে চলেছে, এবং রাষ্ট্রের পুলিশী চরিত্রকেও সংশয়াতীত করে তুলছে। আইন দুটোর বিলোপের প্রয়োজনীয়তা গণতন্ত্রের পক্ষে অপরিহার্য বলে প্রতিপন্ন হচ্ছে। বিচারপতি নরিম্যানের বক্তব্য তাই অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে দেখা দিচ্ছে — “আমি সুপ্রিম কোর্টের কাছে সনির্বন্ধ অনুরোধ করব, তাদের কাছে অমীমাংসিত থাকা দেশদ্রোহ আইনের মামলাগুলোকে তারা যেন কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে ফেরত না পাঠায়। সরকার আসবে এবং চলে যাবে, কিন্তু নিজের ক্ষমতা প্রয়োগ করে ১২৪এ ধারাকে এবং ইউএপিএ’র আপত্তিকর অংশগুলোকে বাতিল করাটা আদালতের কাছে গুরুত্বপূর্ণ এখানকার নাগরিকরা তখন আরও স্বচ্ছন্দে নি:শ্বাস নিতে পারবেন’’। বিচারপতি নরিম্যান দেশদ্রোহ আইনের সঙ্গে ইউএপিএ’র আপত্তিকর অংশগুলোকে বাতিলের পরামর্শ দিলেও আমরা আইন দুটোর আগাগোড়া বাতিলেরই প্রস্তাবই করছি। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট কি নিজের ক্ষমতা প্রয়োগ করে তা করতে সম্মত হবে? সুপ্রিম কোর্ট জুলাই মাসের মাঝামাঝি দেশদ্রোহ আইন নিয়ে প্রশ্ন তুললেও সাড়ে তিন মাস পেরিয়ে যাওয়ার পরও পরবর্তী শুনানির সময় স্থির করে উঠতে পারেনি। গণতন্ত্রের পুনরুদ্ধারে আইন দুটোর বাতিল যে অপরিহার্য, আশা করি সুপ্রিম কোর্টকে তা স্মরণ করিয়ে দিতে হবে না।

- জয়দীপ মিত্র

খণ্ড-28
সংখ্যা-39