শোক সংবাদ
শোক সংবাদ
Mourning

কমরেড মলয় ভট্টাচার্য প্রয়াত

বেলঘরিয়া অঞ্চলের কমরেড মলয় ভট্টাচার্য গত ২০ ডিসেম্বর প্রয়াত হন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৭ বছর। কমরেড মলয়ের বাবা ছিলেন স্বাধীনতা সংগ্রামী এবং মা ছিলেন প্রগতিশীল প্রতিবাদী সাহসী মহিলা। মলয় স্কুলে বিপিএসএফ করতেন। ১৯৭৪ সালে মুর্শিদাবাদের কমরেড তপন ভট্টাচার্যের সংস্পর্শে আসেন এবং ঐবছর ২৮ জুলাই পুনর্গঠিত সিপিআই(এমএল)-এর সাথে যুক্ত হয়ে যান।

১৯৭৭ সালে জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার ও সাধারণ নির্বাচনে এরাজ্যেও কংগ্রেস পরাজিত হয় এবং বামফ্রন্ট আসে ক্ষমতায়। ঐসময় মলয়দের বাড়ি ছিল পার্টির আশ্রয়স্থল। বিশেষ করে মলয়ের মা — আমাদের সবার মাসিমা ছিলেন এই কর্মকাণ্ডের মধ্যমনি। ওদের পরিবারের সবাই পার্টির সেই সময়কার আশ্রয় দেওয়ার গুরুত্বপূর্ণ কাজ নিঃশব্দে করে গেছেন। প্রয়াত পার্টি নেতৃবৃন্দ যেমন বিনোদ মিশ্র, ধূর্জটি প্রসাদ বক্সী, সুদর্শন বসু সবাই আশ্রয় নিয়েছেন। এমনকি বর্ধমান, পুরুলিয়া, বাঁকুড়ায় জেল ভেঙে আসা কমরেডরাও আশ্রয় নিয়েছেন।

মলয় প্রথম জীবনে স্থানীয় এক চিকিৎসকের কম্পাউন্ডার হিসাবে কাজ করেছেন। এই সময় পুলিশের চোখ এড়িয়ে বহু জখম কমরেডকে চিকিৎসকের সহযোগিতায় সুস্থ করে তুলেছিলেন।

১৯৯০ সালে মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে ব্যারাকপুর কোর্টে ১২ দলের আইন আমান্য আন্দোলনে পুলিশের লাঠির ঘায়ে মলয়ের হাত ভেঙে যায়, সুস্থ হয়ে আবার মিছিল মিটিংয়ে অংশ গ্রহণ করতেন। পেশাগত জীবনের দ্বিতীয় অধ্যায় শুরু হয় সিইএসসি’তে ঠিকা শ্রমিক হিসাবে। ইতিমধ্যে ওর শরীরে মধুমেহ রোগ দানা বাঁধে। অবসরের পর প্রায়ই অসুস্থ থাকতেন। তা সত্ত্বেও পার্টির প্রতিটি মিটিংয়ে উপস্থিত থাকার চেষ্টা করতেন। বিগত কয়েকমাসে শরীর আরও ভেঙে গেলে, পানিহাটি হাসপাতালে ভর্তি হন। তারপরে বাড়িতেই চিকিৎসা চলছিল, অবশেষে চিরবিদায় নিলেন। কমরেড মলয়কে পার্টির বেলঘরিয়া পার্টি কমিটি রক্তপতাকা, ফুল ও লাল সেলাম জানিয়ে শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করে এবং ওঁর পরিবারকে সমবেদনা জানায়। মলয় রেখে গেছেন স্ত্রী, কন্যা, জামাতা ও একজন দৌহিত্রী।

কমরেড মলয় ভট্টাচার্য লাল সেলাম।

কমরেড নবকুমার হাজরা প্রয়াত

গত ৫ ডিসেম্বর পুর্ব বর্ধমান জেলার মেমারী ১নং ব্লকের কাকডাঙ্গা গ্রামের দীর্ঘদিনের পার্টি সদস্য নবকুমার হাজরা ৬০ বছর বয়সে অসুস্থ অবস্থায় প্রয়াত হয়েছেন। তিনি কৃষিমজুর ছিলেন। এলাকার বিভিন্ন সময়ে মজুরি আন্দোলন ও অন্যান্য আন্দোলনে সক্রিয় ভুমিকা নিয়েছিলেন। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তিনি পার্টির প্রতি অনুগত ছিলেন। এই কমরেডের মৃত্যুতে পার্টির জেলা কমিটির পক্ষ থেকে গভীর শোকপ্রকাশ এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করা হয়। কমরেড নবকুমার হাজরা লাল সেলাম।

খণ্ড-28
সংখ্যা-45