ঘটনা ও প্রবণতা : ‘ই-শ্রম’ আবেদনে দ্বিতীয় স্থানে বাংলা, প্রথম উত্তরপ্রদেশ
first is Uttar Pradesh

গত অগস্ট মাসে কেন্দ্রীয় সরকার শুরু করেছিল ‘ই-শ্রম’ পোর্টাল। দেশের অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিকদের সামাজিক নিরাপত্তা দিতেই এই পোর্টালের উদ্যোগ নেওয়া হয়। সাম্প্রতিক রিপোর্ট জানা গিয়েছে, এখনও পর্যন্ত ওই পোর্টালে নিথভুক্তদের মধ্যে প্রায় ২ কোটি ৪০ লাখ শ্রমিক পশ্চিমবঙ্গের। প্রথমে রয়েছে যোগী আদিত্যনাথের উত্তরপ্রদেশ।

প্রসঙ্গত কেন্দ্রীয় শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রক পরিযায়ী শ্রমিক-সহ অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিকদের নথিভুক্তি শুরু করেছে ২০২০ সালের অগস্ট মাসে। কর্মীদের পোর্টাল ‘ই-শ্রম’ একটি জাতীয় ডেটাবেস। করোনাকালেই আন্দাজ পাওয়া যায় ভারতে কত পরিযায়ী শ্রমিক রয়েছেন। এতদিন তার কোনও তথ্য সরকারের হাতে ছিল না। তাই এই পোর্টালে নির্মাণ প্রকল্পে নিযুক্ত কর্মী, পরিযায়ী শ্রমিক, রাস্তাঘাটে পণ্য বিক্রেতা, গৃহ সহায়িকা-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের ৩৮ কোটি শ্রমিককে নথিভুক্ত করার লক্ষ্য ঠিক হয়। এরপরে নথিভুক্ত শ্রমিকদের ১২ ডিজিটের ‘ই-শ্রম’ কার্ড দেওয়া হবে, যাতে শ্রমিকরা সরকার-প্রদত্ত সামাজিক নিরাপত্তা প্রকল্পগুলির সুবিধা পেতে পারেন। কেন্দ্রীয় সরকার ইতিমধ্যেই ঘোষণা করেছে, নথিভুক্ত শ্রমিকদের ২ লাখ টাকা করে দুর্ঘটনা বিমার ব্যবস্থা করা হবে। প্রয়োজন অনুযায়ী নথিভুক্ত শ্রমিকদের আর্থিক সহায়তাও দেওয়া হতে পারে। বিধানসভা নির্বাচনের আগে কেন্দ্রের পোর্টালে রাজ্যের নথিভুক্ত শ্রমিকদের এক হাজার টাকা করে অনুদানের ভাবনাচিন্তাও করছে উত্তরপ্রদেশ সরকার।

সরকারের তরফে আগেই জানানো হয়েছে, ‘ই-শ্রম’ পোর্টালে নথিবদ্ধ কেউ দুর্ঘটনার কবলে পড়লে বিমার সুবিধা পাবেন। মৃত্যু হলে বা পুরোপুরি অক্ষম হলে দেওয়া হবে ২ লক্ষ টাকা। আংশিকভাবে অক্ষম হলে ১ লক্ষ টাকা। জাতীয় টোল ফ্রি নম্বর ১৪৪৩৪এ ফোন করে প্রয়োজনীয় খোঁজ-খবর নেওয়া যাবে। নথিভুক্তির পরে মিলবে ‘ই-শ্রম কার্ড’। কেন্দ্রের দাবি, সমাজ কল্যাণমূলক প্রকল্পগুলিকে একসঙ্গে এক জায়গায় আনাও সরকারের লক্ষ্য।

শুক্রবার ওই পোর্টাল সম্পর্কে যে তথ্য প্রকাশিত হয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে আবেদনকারীদের মধ্যে মহিলারা এগিয়ে। ৫২.৮৩ শ‌তাংশ রেজিস্ট্রেশন করিয়েছেন মহিলারা। সেখানে পুরুষ শ্রমিক ৪৭.১৭ শতাংশ। মোট আবেদনকারীর মধ্যে ৪৫.২৯ শতাংশ অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির। সাধারণ জাতির ২৫.৮০ শতাংশ। তফশিলি জাতি ও উপজাতি যথাক্রমে ২১.৯৮ এবং ৬.৯৩ শতাংশ।

এখনও পর্যন্ত নথিভূক্ত শ্রমিকের সংখ্যা ৩৭ কোটি ২৩ লাখ ৬৩৯ জন। এরমধ্যে, ‘ই-শ্রম কার্ড’ পেয়েছেন ২০ কোটি ৫৯ লাখ ১৮ হাজার ৩৫০ জন। উত্তরপ্রদেশের মোট ৭ কোটি ২৭ লাখ ৭১ হাজার ৫০০ জন নথিভুক্ত হয়েছেন। এর পরেই পশ্চিমবঙ্গের নথিভুক্ত সংখ্যা ২ কোটি, ৩৯ লাখ ৫ হাজার ৯৬৫। আর তৃতীয় স্থানে থাকা বিহারের নথিভুক্ত শ্রমিক ১ কোটি ৯০ লাখ ৭৪ হাজার ৪৬ জন। চতুর্থ ও পঞ্চম স্থানে রয়েছে যথাক্রমে ওড়িশা এবং ঝাড়খণ্ড।

- আনন্দবাজার পত্রিকা, ৮ জানুয়ারি ২০২২

খণ্ড-29
সংখ্যা-2