আবেদন
জেনেটিক্যালি মডিফায়েড (জিএম) খাবার সংক্রান্ত খসড়া বিধিমালা প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন
draft rules regarding GM food

মাননীয়া,

খাদ্য সুরক্ষা দপ্তর (এফএসএসএআই — ফুড সেফটি এ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ডস্ অথরিটি অব ইন্ডিয়া) জেনেটিক্যালি মডিফায়েড (জিএম) খাবার সংক্রান্ত একটি খসড়া বিধিমালা প্রকাশ করেছে নভেম্বর মাসে। এবং আগামী ৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে তা নিয়ে মতামত চাইছেন। এপ্রসঙ্গে আমরা আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই, যে নানা গবেষণা থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী জিএম খাবার অপ্রয়োজনীয়, অস্বাস্থ্যকর এবং প্রকৃতির পক্ষেও ক্ষতিকর। জনস্বাস্থ্য একটি রাজ্য নিয়ন্ত্রিত বিষয় হলেও এই বিধিমালা প্রস্তুতিতে সম্ভবত রাজ্য সরকারকে সম্পূর্ণভাবে উপেক্ষা করা হয়েছে। এছাড়াও খসড়া বিধিমালায় বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি যা জিএম খাবারের বিজ্ঞানভিত্তিক নিয়ন্ত্রণের জন্য অপরিহার্য। এছাড়াও ভারতের বৈচিত্র্যময় খাদ্য ব্যবস্থা, স্বাস্থ্য এবং খাবারের পছন্দের অধিকারটিকেও গুরুত্ব দিয়ে দেখা হয়নি। জিএম খাবারগুলি নিয়ন্ত্রিত করতে হচ্ছে কারণ তারা মানুষের স্বাস্থ্য এবং পরিবেশের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ এবং নাগরিকদের এই জাতীয় খাবারের ঝুঁকি থেকে রক্ষা করা দরকার। বাণিজ্য নিরাপত্তা, কৃষকদের বীজ সার্বভৌমত্বও এরসঙ্গে জড়িয়ে।

আমাদের আবেদন এই যে আপনি এই খসড়া বিধিমালা সংক্রান্ত নিম্নলিখিত বিষয়গুলি পর্যালোচনা করুন এবং সংশ্লিষ্ট দপ্তরে রাজ্যবাসীর পক্ষ থেকে এই দাবি/আবেদনগুলি দয়া করে নথিবদ্ধ করান।

আমরা জিএম খাবার চাইনা, লেবেল যুক্ত বা লেবেলবিহীন — এফএসএসএআই’এর বিধিমালায় এটি নিশ্চিত করা হোক। একমাত্র নিয়ন্ত্রক ব্যবস্থা যা আমরা দেখতে চাই তা হল জিএম খাবারের উপর কঠোর নজরদারি।

রাজ্য সরকারের জিএম খাবারের এবং সাধারণভাবে জিএমও চাষের প্রসঙ্গে নীতিগত অবস্থানগুলি যাতে সম্মান করা হয়।

জিএম খাবারের স্বাভাবিক ও প্রাকৃতিক বিকল্প আমাদের দেশে প্রচুর। সেগুলোর যথাযথ মূল্যায়ন না করে জিএমও খাবারের জন্য চূড়ান্ত অনুমোদন একধরণের হঠকারিতা। প্রয়োজন না থাকলে জিএম আনার কী দরকার?

এফএসএসএআই কোনও ধরণের জিএম খাবারের জন্য প্রাপ্ত অ্যাপ্লিকেশনগুলির উপর সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য কোনও স্বাধীন, দীর্ঘমেয়াদী, কঠোর এবং স্বচ্ছ জৈব সুরক্ষা পরীক্ষার প্রক্রিয়া/প্রোটোকল প্রস্তাব করছেনা। এই অবৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি দেশের শীর্ষ খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কাছ থেকে গ্রহণযোগ্য নয়, যা সকলের জন্য খাদ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য বাধ্যতামূলক।

জিএম উপাদানের উপস্থিতির পরিমাণ ১ শতাংশ থেকে থ্রেশহোল্ড স্তর ০.০১ শতাংশে নামিয়ে আনা উচিত।

এফএসএসএআই’এর ভারতে জিএম খাবারের গোপন আমদানি রোধ নিশ্চিত করা উচিত, এবং লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

আমরা আপনার হস্তক্ষেপের মাধ্যমে এও আশা করছি যে এফএসএসএআই এমন নিয়মকানুন আনবে যা স্বাস্থ্যকর খাবার উৎপাদন ও আমদানীতে জোর দেবে — জিএম খাবার আমদানির মাধ্যমে ভারতীয়দের পরীক্ষাগারের ইঁদুর করা হবে না।

এই চিঠির সঙ্গে বিধিমালা সংক্রান্ত বিস্তারিত সমালোচনা দেওয়া হল।

আন্তরিকভাবে, ‘জিএম মুক্ত পশ্চিমবঙ্গ’এর পক্ষে

অংশুমান দাশ (কৃষি প্রশিক্ষক),
বিতান দত্ত (কৃষক),
বহ্নি চক্রবর্তী (অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকা),
অরূপ রক্ষিত (ব্যবস্যায়ী),
দেবাশীষ পান্ডা (সমাজকর্মী),
বিশ্বরূপ চক্রবর্তী (জৈব কৃষক),
বিকাশ চন্দ্র পতি (জৈব চাষি),
অন্তরা রায় (শিক্ষকতা),
মহুয়া দত্ত (পাঠাগার আন্দোলন কর্মী),
সুব্রত দাস (জৈব কৃষক),
নির্মাল্য ঘোষ (টোনা অর্গানিক ফার্ম),
উদয় ভানু রায় (টোনা অর্গানিক ফার্ম),
প্রবীর কুমার সরকার (জৈব চাষি),
সঞ্জয় সরকার (পরিবেশ কর্মী),
অদিতি সিংহ রায় (ডিজাইনার),
অরূপ দাস (সমাজকর্মী),
নীলাঞ্জন মিশ্র (সমাজকর্মী ও ছাত্র),
বাবলু ব্যানার্জি (রাজনৈতিক কর্মী),
রূপা চক্রবর্তী খান (সমাজকর্মী),
প্রদীপ বসু (গণবিজ্ঞান কর্মী),
নীলাঞ্জন মিশ্র (ছাত্র, শিল্পী ও সমাজকর্মী),
বুদ্ধদেব নায়েক (কৃষক, সমাজকর্মী),
প্রদীপ গিরি (শিক্ষক, সমাজকর্মী),
অসীম বেরা (ছাত্র ও সমাজকর্মী),
আইভি দত্তরায় (সমাজকর্মী),
টুম্পা মন্ডল (সমাজকর্মী),
দীপঙ্কর জানা (সমাজকর্মী),
সঞ্জয় সেনগুপ্ত (শিল্পী ও গবেষক),
অনীত ঘোষ (পরিবেশবিদ),
স্বপন ভট্টাচার্য (সমাজকর্মী),
শিবনাথ মাইতি (বিজ্ঞানী), প্রমুখ আরও অনেকে।

খণ্ড-29
সংখ্যা-6