খবরা-খবর
রামপুরহাটে গণহত্যার বিচারবিভাগীয় তদন্ত চাই!
Rampurhat genocide

তৃণমূল আশ্রিত সমাজবিরোধীদের সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান!
সোচ্চারে উত্তাল প্রতিবাদী সভা মৌলালীতে

রামপুরহাটের গণহত্যার বিরুদ্ধে এক প্রতিবাদ সভা সংগঠিত হয় ২৩ মার্চ কলকাতার মৌলালীতে। সিপিআই(এমএল) লিবারেশন ছাড়াও পিডিএস, স্বরাজ ইন্ডিয়া, সিপিবি, বন্দীমুক্তি কমিটি সহ আরও কয়েকটি সংগঠন এতে যুক্ত হয়। সভায় সিপিআই(এমএল) পলিটব্যুরো সদস্য কার্তিক পাল বলেন, মুখ্যমন্ত্রী বলছেন রাজ্যে নাকি ষড়যন্ত্র চলছে! আসলে সত্য ঘটনা ধামাচাপা দেওয়া, সন্ত্রাসের সমস্ত ঘটনাকে আড়াল করা এটা তৃণমূলেরই বড় ষড়যন্ত্র। এর মধ্য দিয়েই ওরা রাজ্যের বুকে খুনের রাজনীতি কায়েম করতে চাইছে। রামপুরহাটে নারী শিশু হত্যা, তথা গণহত্যা করে ওরা সমগ্র বিরোধীপক্ষকে দমন করে রাখতে চাইছে। চোরাকারবারি, তোলাবাজি, আর্থিক লেনদেনের অবৈধ কারবার চালানোই এই গণহত্যার পেছনে অন্যতম কারণ। পুলিশকে শাসকদলের আজ্ঞাবহ করে তোলা হয়েছে যেখানে পুলিশ মহিলা আন্দোলনকারীদের ধর্ষণ করার হুমকি দিচ্ছে। গণতন্ত্র ও সুশাসনের সপক্ষে পশ্চিমবাংলার মানুষের গণরায়ের প্রতি এভাবে তৃণমূল বিশ্বাসঘাতকতা করছে।

পার্টির রাজ্য কমিটি সদস্য ও কলকাতা জেলা সম্পাদক অতনু চক্রবর্তী বলেন, বিরোধীদের নিকেশ করার নীতি নিয়ে চলেছে তৃণমূল, যারা আজ আপাদমস্তক দুর্নীতিগ্রস্ত। তাদের এই স্বৈরতান্ত্রিক আচরণের বিরুদ্ধে মানুষের প্রতিবাদ প্রতিরোধ গড়ে উঠবেই। স্বরাজ ইন্ডিয়ার সহ সভাপতি কল্যাণ সেনগুপ্ত বলেন, শাসকের লুঠের ভাগবাটোয়ারার জন্য নিরীহ মহিলা ও শিশুদের প্রাণ চলে গেল। একে বাংলার মানুষ মেনে নেবে না। বন্দীমুক্তি কমিটির নেতা মানবাধিকার কর্মী ছোটন দাস বলেন, যাদের প্রাণ চলে গেল শাসক তৃণমূলের নেতারা বলছে তারা ‘আমাদের লোক’! তিনি প্রশ্ন তোলেন, তাহলেই কী তাদের হত্যা করার অধিকার জন্মে যায় নাকি! মানুষের বেঁচে থাকার অধিকারই আজ কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। ঘটনার পর ঐ এলাকায় গিয়ে তথ্য সংগ্রহ — অনুসন্ধানের কাজে বাধা দেওয়া হচ্ছে। এতেই প্রমাণ হয়, ডাল মে কুছ কালা হ্যায়! সত্যকে আড়াল করার এই প্রচেষ্টা কেন?

প্রগতিশীল মহিলা সমিতির ইন্দ্রাণী দত্ত বলেন, বাংলার মানুষ এ রাজ্যকে মৃত্যু উপত্যকা বানাতে দেবে না। অমিত দাশগুপ্ত বলেন, তৃণমূলের মনোভাব হলো ক্ষমতা — আরো ক্ষমতা চাই, বিরোধীদের শূন্য করে দিতে হবে। এইভাবে এক খুনের রাজত্ব কায়েম করা হয়েছে। গণহত্যা প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী চুপ। পুলিশ কি তাহলে চোখ বুজে থাকবে? মুখ্যমন্ত্রী বলছেন এ রাজ্যে নাকি কর্মসংস্থান হয়েছে ১ কোটি ২০ লক্ষ! কোথায় কাজ হয়েছে তিনি বলতে পারেননি। তাহলে কী চোরাচালান, তোলাবাজিতে কর্মসংস্থান হয়েছে! প্রতিবাদ সভায় এছাড়াও বক্তব্য রাখেন সিপিবি-র বর্ণালী মুখার্জি, আইসার সায়ন্তন প্রমুখ। সঞ্চালক রাজ্য কমিটি সদস্য জয়তু দেশমুখ বলেন, রুটি-রুজি-জীবন-জীবিকার প্রতিটি প্রশ্নে, স্বাধীন মতপ্রকাশের উপর এ রাজ্যে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করা হয়েছে। মানুষ বেঁচে থাকার লড়াই চালানোর মধ্য দিয়েই সন্ত্রাসের মোকাবিলা করবে। তবে ঘোলাজলে মাছ ধরার বিজেপির চক্রান্ত রাজ্যের মানুষকে অবশ্যই প্রতিহত করতে সচেতন থাকতে হবে।

খণ্ড-29
সংখ্যা-12