খবরা-খবর
নির্মাণ শ্রমিক ইউনিয়নের চতুর্থ দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলা সম্মেলন

১ সেপ্টেম্বর বাখরাহাটে পশ্চিমবঙ্গ গৃহ ও অন্যান্য নির্মাণ শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের চতুর্থ দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। প্রয়াত পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কমরেড ডিপি বক্সীর নামে সম্মেলন নগর, নির্মাণ শ্রমিক কমরেড কমল ঘোষের নামে মঞ্চের নামকরণ করা হয়। সম্মেলনের শুরুতে শহীদ স্মরণ কর্মসূচিতে রক্তপতাকা উত্তোলন করেন নির্মাণ শ্রমিক শেখ শাহালম, শহীদ বেদীতে মাল্যদান করেন সংগঠনের রাজ্য সভাপতি প্রবীর দাস, রাজ্য সম্পাদক কিশোর সরকার, জেলা সম্পাদক নিখিলেশ পাল, জেলা সভানেত্রী কাজল দত্ত, পার্টির রাজ্য কমিটির সদস্য নবকুমার বিশ্বাস, জেলা কমিটির সদস্য দিলীপ পাল, আইসার পক্ষে দীপ মালিক, আরওয়াইএ-র পক্ষে শুভদীপ পাল, মহিলা সমিতির পক্ষে অঞ্জনা মাল, কৃষক সমিতির পক্ষে জগদীশ মন্ডল, আয়রালার পক্ষে দেবযানী গোস্বামী ও নির্মাণ শ্রমিক সাথীরা।

সম্মেলনের উদ্বোধনী ভাষণ দিতে গিয়ে কিশোর সরকার বলেন, মোদী দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর শ্রমিক বিরোধী একের পর এক পদক্ষেপ নিয়ে চলেছেন। ধর্মের নামে মানুষকে বিভাজিত করে ৪৪টি শ্রম আইনকে ৪টি লেবার কোডে পরিণত করে নির্মাণ শ্রমিকদের ১৯৯৬ আইন, কল্যাণ পর্ষদ তুলে দেওয়া ও কল্যাণ পর্ষদে জমা ৩০ হাজার কোটি টাকা বেহাত করে নির্মাণ শ্রমিকদের ভবিষ্যৎ অন্ধকারে ঠেলে দিতে চাইছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। কর্পোরেটদের স্বার্থে রাস্ট্রায়ত্ব সংস্থাগুলির বেসরকারিকরণের চেষ্টায় মত্ত মোদী সরকার, সাথে বিভিন্ন দপ্তরে কর্মী ছাটাই করার পরিকল্পনাও চলছে। বি এস এন এল-এর কর্মীরা বেতন পাচ্ছেন না, রেলে ৩.৫ লক্ষ কর্মী ছাটাইয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে, অপর দিকে অর্ডিন্যান্স ফ্যাক্টারিগুলোর বেসরকারিকরণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, যা শ্রমিকরা রুখে দিয়েছেন লাগাতার ধর্মঘটের মধ্যে দিয়ে। নির্মাণ শ্রমিকদের অর্জিত অধিকার হরণ করার জন্য কেন্দ্র ও রাজ্য উভয় সরকারই ষড়যন্ত্র করছে। রাজ্য সরকারের এসএসওয়াই স্কীমের ফলে নির্মাণ শ্রমিকদের নথিভুক্ত করা যাচ্ছে না, এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হলে নির্মাণ শ্রমিকদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। না হলে তাদের অর্জিত অধিকার হরণ হবে। এছাড়া বক্তব্য রাখেন অর্ঘ্যজ্যোতি পাল, দীপ মালিক, দেবযানী গোস্বামী, দিলীপ পাল। মিতা চক্রবর্তী কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের কবিতা আবৃত্তি করে শোনান। বিদায়ী জেলা সম্পাদক নিখিলেশ পাল খসড়া প্রতিবেদনে পেশ করেন এবং শ্রমিক সাথীরা খসড়া প্রতিবেদনের উপর বক্তব্য রাখেন। প্রতিবেদন পাঠ ও প্রতিনিধিদের বক্তব্যের পর সংগঠনের রাজ্য সভাপতি কমরেড প্রবীর দাস বক্তব্য রাখেন।

সম্মেলনে সর্বসম্মতিক্রমে ১১ জনের নতুন জেলা কমিটি নির্বাচিত হয়। সভাপতি হিসাবে নির্বাচিত হন বহু আন্দোলনের সাথী নির্মাণ শ্রমিক ইন্নাস সেখ, সম্পাদিকা নির্বাচিত হন কাজল দত্ত, কোষাধ্যক্ষ নির্বাচিত হন নিখিলেশ পাল। “মোদী হঠাও দেশ বাঁচাও” শ্লোগানের মধ্য দিয়ে সম্মেলনের সমাপ্তি হয়।

খণ্ড-26
সংখ্যা-27