প্রতিবেদন
‘এ তুমি কেমন তুমি’

সেতার সরোদ বীণায় দ্রুত সঞ্চরমান আঙুলে রত্নখচিত আংটি হয়তো কখনও দেখেছি। কিন্তু বেশ কিছু কাল ধরে দেখছি, ধনী-নির্ধন নারী পুরুষ নির্বিশেষে আঙুলে তো বটেই (পারলে দশ আঙুলেই পরেন আর কি!) মণিবন্ধে বাহুমূলে নানান রঙীন পাথরে পাথরে ছয়লাপ।এমনকি তিনি বামপন্থী বিজ্ঞান গবেষক, সর্বোচ্চ ডিগ্রিধারী হলেও!

সমানুপাতিকভাবে চ্যানেলে চ্যানেলে আসর সাজিয়ে হাজির ‘ভাগ্যনিয়ন্তা’ জ্যোতিষীরা। গয়নার দোকানেও ক্রেতাদের ‘পাথর’ কেনায় আকৃষ্ট করার জন্য হরেক লোভনীয় অফার!

অর্থাৎ একেবারে হতদরিদ্র মানুষজন প্রাত্যহিক শোষণ লাঞ্ছনা বঞ্চনাগুলোকে যারা সমাজ ও রাষ্ট্রের কাছে প্রাপ্য বলে ধরে নিয়েছেন এবং যারা জ্যোতিষের দ্বারস্থ হওয়া ও পাথর কেনার ক্ষমতারহিত তারা এবং মুষ্টিমেয় কিছু মানুষ যারা বিজ্ঞানকে রক্ত-মজ্জায় গ্রহণ করেছেন (‘উচ্চশিক্ষিত’ না হলেও) তারা ছাড়া, গোটা সমাজটাই যেন ‘অমুক বাবা’, ‘তমুক মাতা’র ‘প্রসাদনিয়ন্ত্রিত’! এছাড়া তেত্রিশ কোটি দেবদেবীর ‘বরাভয়’ যাচা তো আছেই!

যারা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রসাদ পুষ্ট হয়েও, ব্যবহারিক জীবনে বিজ্ঞানের আশ্রয়ে থেকেও, ‘ভাগ্য’নিয়ন্ত্রিত এবং তাবিজ কবচ মাদুলি বিড়ম্বিত তারা সমাজকে আর কী বার্তা দেবেন? ফলে যা হওয়ার তাই হচ্ছে , ‘অমুক বাবা’ ‘তমুক মাতাদের’ দাপট বেড়েই চলেছে। আর গরিব নিম্নবিত্তের কষ্টার্জিত অর্থে এই ‘পরজীবী’রা ফুলে ফেঁপে উঠছেন।

আমাদের সিরিয়াল-শাসিত সন্ধ্যাগুলোর কথায় আসা যাক। সেখানে ইদানীং ‘কুচক্রী’দের নানা ‘অশুভ শক্তি’র আশ্রয় নেওয়া ও তাকে পরাস্ত করতে ‘দৈব তথা অলৌকিক শক্তি’র আসরে আবির্ভূত হওয়া এবং তার অনুষঙ্গে তন্ত্র মন্ত্র ঝাড় ফুঁক ভূত প্রেত ওঝা বৈদ্যের ব্যাপক আমদানি লক্ষ করা যাচ্ছে। গ্রাম শহরে বিশেষ করে সেইসব মহিলা যাদের হাতে অ্যানড্রয়েড ফোন (সে-ও আরেক বিড়ম্বনা) নেই, ফেসবুক হোয়াটস্অ্যাপের সর্বগ্রাসী তাড়না নেই, তারা সারাদিনের ক্লান্তি আর একঘেয়েমি কাটাতে বোকাবাক্সের শরণ নেন। নানা আখ্যানের অলিতে গলিতে অলীক রহস্যের গূঢ় জালে জড়িয়ে যেতে যেতে কখন যেন অবচেতন মনে ঐ অলৌকিকতা ছায়া ফেলে যায়। সমাজ পরম্পরায় চলে আসা নানা কুসংস্কার তো আছেই। শিশুরাও প্রভাবিত হচ্ছে। এমনকি তাদের জন্য নির্দিষ্ট অনুষ্ঠানেও অধিবিদ্যার আধিপত্য। সেগুলো সযত্নরচিত হলেও ‘যত্ন’টা ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে, তাদের মনের উপযুক্ত খোরাকের কথা ভেবে নয়। ফলে কচি কোমল মনের উপর পড়ছে ভয়ঙ্কর রূঢ় অনভিপ্রেত আঁচড়। বৈদ্যুতীন মাধ্যমে অপবিজ্ঞান ও কুসংস্কারের এই ঢালাও প্রচার রমরমিয়ে চলছে। কিন্তু দেশের সেন্সর বোর্ডের তাতে বিন্দুমাত্র হেল দোল নেই! কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই! তাজ্জব ব্যাপার!!

আশির দশকে একদিকে বিজ্ঞান সচেতনতা বাড়ানোর উদ্দেশ্যে বিভিন্ন ক্লাব ও সংস্থা, যুক্তিবাদী সমিতি, ‘উৎস মানুষ’সহ বিভিন্ন পত্র পত্রিকার তরফে যেমন উদ্যোগ গড়ে উঠেছিল তেমনই জনস্বাস্থ্য আন্দোলনও বেশ প্রসার লাভ করেছিল। ফলে সামাজিক নানা কুআচার ও কুসংস্কারের বিরুদ্ধে যেমন একটা সচেতনতা গড়ে উঠছিল তেমনই বিভিন্ন অসুখ বিসুখের প্রকৃত কারণ ও তার যথাযথ চিকিৎসা সম্পর্কেও মানুষের মধ্যে একটা আগ্রহ জাগানোর সুযোগ তৈরি হয়েছিল। কিন্তু নব্বইয়ের দশকে অর্থনীতির ভুবনায়ন, বিলগ্নিকরণ, ‘গোল্ডেন হ্যান্ডশেক’— এ সব কিছুর অভিঘাতে হয়তো সে আন্দোলন একসময় হারিয়ে গেল। রাজনৈতিক পট পরিবর্তন সমাজের ওপর ছায়া ফেলে। সমাজজীবনে আবার বিজ্ঞান বিমুখতা জাঁকিয়ে বসল। এখন দেখছি, ‘ভাগ্য ফেরাতে’ বা তাৎক্ষণিক বিপর্যয় কাটাতে — এমনকি উচ্চশিক্ষিত উচ্চবিত্ত পরিবারেও (কথাটা খুব জোর দিয়েই বলছি) — পুজো আচ্চা হোম যজ্ঞ শান্তি স্বস্ত্যয়নের ওপর অগাধ আস্থা, ঢালাও আয়োজন।দেখে শুনে মনে হচ্ছে, বাংলা যেন সেই ‘নব জাগরণ’ পূর্ববর্তী অবস্থায় চলে যাচ্ছে! সাড়ে তিন দশকের বাম শাসনে শুধুই কি তাহলে প্রসাধনী প্রলেপ পড়েছিল! ভেতরের রোগ থেকেই গেছে?

সাম্প্রতিক কয়েকটি ঘটনা ভীষণ উদ্বিগ্ন করে তুলেছে। সম্ভবত আপনাদেরও। পশ্চিম মেদিনীপুর গ্রামীণ থানার অন্তর্গত নিরঞ্জনবাড় অঞ্চলে চোদ্দবছরের এক নাবালক তান্ত্রিক নিজের দৈব ক্ষমতা দেখাতে গিয়ে সাত বছরের একটি শিশুকে মেরে ফেলেছে। পুলিশ তান্ত্রিকসহ চোদ্দজনকে গ্রেফতার করেছে যার মধ্যে তার বাড়ির লোকসহ প্রতিবেশীরাও আছে। তান্ত্রিক প্রসাদের লোভ দেখিয়ে শিশুটিকে ঘরে নিয়ে গিয়ে ভারী কিছু দিয়ে আঘাত করে মেরে ফেলেছে। জানা যায় কিশোরটির ওপর নাকি নানা দেবদেবীর ‘ভর’ হত। তার কিছু কিছু ‘ভবিষ্যদ্বাণী’ ফলেও যেত। ফলে চারপাশের অভাবী সমস্যাজর্জর মানুষ ভীড় জমাতে থাকে। এই নৃশংস ঘটনার পর অনেকের কাছেই গ্রামের কোনে কোনে বাড়িতে ‘ঢিল পড়া’ ‘চুরি হওয়া’ এসব ঘটনার আড়ালে আসল রহস্য ধরা পড়ে যায়। পুলিশের অনুমান নাবালক তান্ত্রিক তার কেরামতি দেখাতে গিয়ে (মেরে আবার বাঁচিয়ে তোলা) ঐ অঘটন ঘটিয়ে ফেলে।

গত ২৬ সেপ্টেম্বর নদিয়ার নাকাশিপাড়া থানার বেথুয়াডহরি কাঁঠালবেড়িয়ায় আরেকটি মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে যায়। টুটুবিবি নামে এক মহিলা ওঝা দশ বছরের অসুস্থ জাহান্নরী শেখকে ‘ভূতে পেয়েছে’ বলে ‘ভূত তাড়ানোর’ জন্য সমানে গরম তেল ঘিয়ের ছ্যাঁকা দিতে দিতে ছেলেটিকে মেরেই ফেলে। তার সাত বছরের ভাই জাহাঙ্গীরকেও একই ভাবে আরও অসুস্থ করে তোলায় জোর করে ওঝার হেফাজত থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ায় শিশুটি প্রাণে বেঁচে যায়।

কিছু দিন আগে পশ্চিম মেদিনীপুরের গড়বেতায় ‘ডাইনি’ অপবাদ দিয়ে এক আদিবাসী প্রৌঢ়াকে তার নিজের আত্মীয় ও পড়শিরা মিলে মেরে ফেলে। এসব ঘটনা মাঝেমধ্যেই ঘটছে।

এই সব ক’টি মৃত্যুর জন্যই দায়ী অন্ধ কুসংস্কার। এই কুসংস্কারকে কোন স্বার্থান্বেষী ব্যক্তি, পরিবার বা সংগঠন নিজের আর্থিক উন্নতি বা সামাজিক প্রতিপত্তি বাড়ানোর উদ্দেশ্যে ব্যবহার করে কালক্রমে কেউ আশারাম বাপু, কেউ রাম রহিম, কেউ আবার ‘বিল্লুবাবা’ হয়ে উঠছে। কিন্তু এরা কেউ সমাজবিচ্ছিন্ন নয়, ঘটনাগুলোকেও আর ‘বিচ্ছিন্ন’ বলে পাশ কাটানোর উপায় নেই।

মনোবিদ বা সমাজতাত্ত্বিকরা কী বলবেন জানা নেই। তবে একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে রাজনীতির অঙ্গনে পদচারণার সুবাদে যেটুকু বুঝেছি, ছোট পরিসরে যে ঘটনাগুলো ঘটছে তার অনেক ক্ষেত্রেই ‘কম সময়ে কম পরিশ্রমে অনেক আয় করার’ দুরাকাঙ্খা সক্রিয় থাকছে। কীভাবে থাকছে, সে প্রসঙ্গে চোখে দেখা একটি ঘটনার কথা সংক্ষেপে উল্লেখ করছি। এক উদ্বাস্তু পল্লীর গরিব বাড়িতে সোয়া পাঁচজনের এক গরিব পরিবার ভাড়া এল। পরিবারের দীর্ঘাঙ্গী শ্যামলা মেয়েটি খুব আলাপী। মাঝে মধ্যেই স্নিগ্ধ চেহারার মিষ্টি স্বভাবের মেয়েটি দুপুর বেলা এর তার ঘরে গিয়ে মেয়েদের সঙ্গে গল্পে মশগুল হয়ে যেত। কে বন্ধ্যা, কার স্বামী পরকীয়ালিপ্ত, কোন্ মাসিমা পুরোনো গেঁটেবাতে কষ্ট পাচ্ছেন, কোন জ্যেঠু হেঁপোরুগী, কোন ভাই চাকরির জন্যে মাথা কুটে মরছে, কোন বোনটি প্রেমে ব্যর্থ হওয়ার হতাশায় মাধ্যমিকের গণ্ডি পেরোতে পারছে না — সব তার নখদর্পণে। ক্রমশ জানা গেল শনি মঙ্গলবার তার ‘ভর’ হয়। ব্যাস, কয়েক দিনের মধ্যে পশার জমে উঠলো। সপ্তাহের ঐ দু’দিন গোটা মহল্লা ভীড়ে ভীড়াক্কার হতে লাগল। বেশ চলছিল। হঠাৎ বাড়িওলার চতুর্থ কন্যা কিশোরী মেয়েটি উধাও হয়ে গেল। পাড়ার মহিলারা অনেক থানাপুলিশ দৌড়ঝাঁপ করার পর মেয়েটিকে পুলিশ পাঞ্জাব থেকে উদ্ধার করে। আর তখনই জানা যায় — এই পাচারের পিছনে ঐ ‘ভর’ হওয়া মেয়েটির দিদি ও তার অবাঙালি স্বামী জড়িত। এইবার জনরোষ আছড়ে পড়ে মেয়েটি ও তার বাবা মায়ের ওপর। বাকিরা (ছেলে বৌমা নাতি) পগাড় পার। তখনই রটে যায় — ঐ’মেয়েটি’ আসলে নাকি ‘পুরুষ’! তখনও গণপ্রহার এখনকার মতে এত হিংস্র ও ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠেনি। তবে মেয়েরা ঝাঁটা, চটি পেটা করে ক্ষোভ মিটিয়ে ছিল — ‘নিরালা দুপুরে ঘরে ঘরে ঢুকে — ছি ছি ছি’। পুলিশের জেরায় ছেলেটি জানিয়েছিল — ছোট থেকেই সে ‘মেয়ে’ সাজতে ভলোবাসতো। সেটাকেই কাজে লাগায় অভাবী পরিবার, পরিবারের চাপে ও পরিকল্পনা মাফিক সে নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধে এসব করতে বাধ্য হয়। সে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে চায়। (পরে শোনা যায়, বেশ কিছুদিন জেল খেটে বেরিয়ে সে শ্রমিক হিসেবে জীবন শুরু করার অল্পদিনের মধ্যেই দুষ্কৃতীদের হাতে খুন হয়ে যায়।) পাচার হওয়া কিশোরী পুলিশকে জানায়, সে আবার পাঞ্জাবেই ফিরে যেতে চায়। কারণ সেখানে সে পেট পুরে খেতে পায়। চলেও গিয়েছিল।

দেশে শিল্প পরিস্থিতি নিদারুণ সংকটে। রাষ্ট্রায়ত্ত ভারী ও মাঝারি শিল্পে বিলগ্নীকরণের জন্য ব্যাপক ছাঁটাই, জিএসটি’র জন্য বহু ছোট শিল্প বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কর্মসংস্থানে অভূতপূর্ব হ্রাস (বিগত ৪৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ), কৃষির সংকট, পরিষেবা ক্ষেত্রেও কর্মীসংকোচন —ভয়ঙ্কর মন্দা পরিস্থিতি দেশের অর্থনীতিকে গ্রাস করেছে। সব মিলিয়ে সাধারণ মানুষের দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। গরিব আরও গরিব হয়েছে। অথচ দেশের ২৫জন ধনীতম মানুষের সম্পত্তির পরিমাণ দেশের জিডিপি’র ১০ শতাংশেরও বেশি! মোদী সরকারের আমলে এই বৈষম্য অনেক বেড়েছে। এই বিপুল বৈষম্য সমাজে ভারসাম্যহীনতা তৈরি করেছে।

জাতপাত ধর্ম বর্ণ সম্প্রদায়গত হাজারো বিভাজনের অজস্র ফাটল সমাজের দেহে।ধর্মান্ধতা ও কুসংস্কারের আদর্শ সূতিকাগার। কেন্দ্র যাদের শাসনাধীন, সেই বিজেপি তথা আর এস এস ২০২৫ (আরএসএস-এর প্রতিষ্ঠার শতবর্ষ পূর্তি)-এর মধ্যে দেশটাকে ‘হিন্দুরাষ্ট্রে’ পরিণত করার জন্য বদ্ধপরিকর। এইজন্য তারা হিংসা ও ঘৃণাকে ইন্ধন করে ব্রাহ্মণ্যবাদী হিন্দুত্ববাদের মতাদর্শ প্রচারে উঠেপড়ে লেগেছে। ধর্মান্ধতা ও কুসংস্কার হল এই হিংসা ও ঘৃণার উৎস। তাই কেন্দ্রের শাসকদল এই ধর্মান্ধতা ও কুসংস্কারের বিরোধিতা তো করবেই না, বরং সম্ভাব্য সমস্ত উপায়ে তার পুষ্টিবিধান করে চলেছে। রাজ্যের শাসকদলও তাদের প্ররোচনায় পা দিয়ে ‘হিন্দুত্ব’ জাহিরের প্রতিযোগিতায় নেমেছে। সুতরাং কোন শাসকদলেরই সমাজের এই কুৎসিত ব্যধিটি দূর করার সদিচ্ছা বা দায় নেই। থাকলে কেন্দ্রীয় বাজেটে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির গবেষণার জন্য ১ শতাংশেরও কম অর্থ ধার্য হত না। আর সাংসদ- মন্ত্রীরা রোগ নিরাময়ে গোমূত্র আর গঙ্গাজলের মাহাত্ম্যকীর্তন করতেন না। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী যেখানে বিজ্ঞান কংগ্রেসের মতো একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানে গণেশের ‘প্লাস্টিক সার্জারির’ কথা বলেন এবং অপবিজ্ঞানের চর্চাকে উৎসাহিত করেন সেখানে আমাদের কপাল চাপড়ে কোনো লাভ নেই। কুসংস্কার সমাজে আবহমান কাল ধরেই আছে। কিন্তু পৃথিবীর বৃহত্তম গণতন্ত্রের দেশ দাবি করা একটি কেন্দ্রীয় সরকার যেভাবে অপবিজ্ঞান তথা কুসংস্কারকে বিজ্ঞাপিত করছে, উৎসাহ দিচ্ছে, গোটা বিশ্বে তা এক সর্বকালীন জঘন্য নজির সৃষ্টি করে চলেছে।

কুসংস্কারের বিরুদ্ধে লড়াইটা কোন বিচ্ছিন্ন লড়াই নয়। নিরন্ন মানুষের পেটে ভাত চাই। তার জন্য হাতে কাজ চাই। কারও দয়া, অনুগ্রহে নয়, একজন স্বাধীন নাগরিকের মর্যাদা নিয়ে বাঁচার অধিকার চাই। সত্যিকারের বিজ্ঞাননির্ভর শিক্ষা চাই। প্রতিটি মহল্লায়, প্রত্যেকটি কুটিরের দরজায় বিজ্ঞানকে পৌঁছে দেওয়া চাই। জীবনধারণের নিশ্চিত নিরাপত্তা চাই। এর কোনোটাই বর্তমান শাসকের থেকে সহজে পাওয়ার নয় যারা সংবিধানটাই পাল্টে দিতে চায়। তার ফ্যাসিবাদী আগ্রাসনের থাবা থেকে সমাজটাকে মুক্ত করার এক সর্বাত্মক লড়াই ভীষণ কঠিন, কিন্তু ভীষণ জরুরি আজ।

খণ্ড-26
সংখ্যা-31