খবরা-খবর
ধনিয়াখালি ব্লকে আদিবাসী পরিবারের জমি গ্রাসের অপচেষ্টা
in Dhaniakhali block

থানায় বিক্ষোভ ডেপুটেশন সিপিআই(এমএল) লিবারেশনের

ধনেখালি থানার পার্শ্ববর্তী যদুপুর মৌজায় দরিদ্র আদিবাসী বর্গাদার পরিবার সিদ্ধেশ্বর মুর্মু, রাসমনি মুর্মুদের উপর অত্যাচার চলছে। এই আদিবাসী পরিবারটি প্রবাসী জমিদার মৃত যামিনী মুখোপাধ্যায়ের যদুপুর মৌজার জমি বর্গাদার হিসাবে দীর্ঘ ৬০/৭০ বছর চাষাবাদ করে চলেছেন। এঁদের পিতা মৃত গোবর্ধন মুর্মুর নামে জমিটি ভূমি দপ্তরে নথিভুক্ত। বরাবর যেভাবে চাষাবাদ করেন সেভাবেই এই বর্ষার শুরুতেই রাসমনিরা ঐ জমিতে ধানের চারা বপন করেন। গত ৩ আগস্ট সকালে রাসমনিরা দেখেন তাঁদের চাষ করা ঐ জমিতে পাশের গ্রামের প্রোমোটার মিলন আলি ও তার দলবল ট্রাক্টর দিয়ে রোয়া ধান নষ্ট করে দিচ্ছে। রাসমনিরা দৌড়ে জমিতে নেমে বাধা দিতে গেলে তাঁদের অশ্লীল ভাষায় জাত তুলে গালিগালাজ করে ওরা। রাসমনির গায়ে হাত তোলে। এরপরেও রাসমনি ফসল রক্ষা করতে মরিয়া হয়ে উঠলে তার উপর ট্রাক্টর চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে ওই দুষ্কৃতীরা। রাসমণি কোনক্রমে প্রাণ বাঁচান। ঐ অবস্থায় নিরুপায় রাসমনিরা আইন শৃঙ্খলা রক্ষার কাতর আবেদন নিয়ে কাদা মাখা, আহত অবস্থায় ছুটে আসেন পার্শ্ববর্তী ধনেখালি থানায়, জমির ফসল সহ আইন রক্ষার আবেদন করেন।

এই ঘটনায় দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে রাসমনি তাঁদের চাষ করা জমির ফসল নষ্ট করে দেওয়ার অভিযোগ করেন। রাসমনিকে অশ্লীল ভাষায় এবং জাত তুলে গালিগালাজ করার অভিযোগ করেন। তাঁর উপর দিয়ে ট্রাক্টর চালিয়ে দেওয়ার অপচেষ্টার উল্লেখ করেন। তাঁকে মারধর করা, তাঁর গায়ে হাত তোলার অভিযোগ করেন।

Attempts to grab the land

এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে ধনেখালি থানা একটি জিডিই করে। কিন্তু আদিবাসী কৃষক মহিলার গুরুতর অভিযোগগুলি সত্ত্বেও আইন শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব পালন না করে, ঐ সময়ে দায়িত্বে থাকা অফিসার উল্টে রাসমনিকে বোঝাতে থাকেন যে ঐ জমিতে রাসমনির চাষ করার অধিকার নেই। কোনও এফআইআর হয় না। পুলিশ ঘটনাস্থলেও যায় না। অভিযুক্তদের আইনি হেফাজতে আনা হয় না। এরপর রাসমণিরা বিএল অ্যান্ড এলআরও-তে অভিযোগ জানান এবং ধনেখালি গ্রামীণ হসপিটালে চিকিৎসা করান। পরদিন রাসমনি চুঁচুড়া আদালত থেকে তাঁর জমিতে আইন রক্ষায় আদালতের নির্দেশ নিয়ে আসেন। এরপরও ঐ প্রোমোটারের দলবল রাস্তাঘাটে রাসমনিকে অশ্লীল গালিগালাজ করছে, হুমকি দিচ্ছে।

গত ১২ আগস্ট ধনেখালি থানার সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচি সংগঠিত করে পার্টির ধনেখালি লোকাল সম্পাদক সজল দে ও রাজ্য কমিটি সদস্য সজল অধিকারির স্বাক্ষরিত ডেপুটেশনে সমগ্র বিষয়টি তুলে ধরা হয়। চিঠিতে আরও বলা হয়,

স্বাধীনতার ৭৫ বছর পালন চলছে। এরাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী আদিবাসীদের অধিকার রক্ষায় পুলিশ প্রশাসনকে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে বলছেন। বিপরীতে, দীর্ঘ কয়েক দশক নিরুপদ্রবে চাষ করে আসা ধনেখালির আদিবাসী বর্গাদার পরিবারটি উচ্ছেদের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে কোনও কার্যকর পুলিশী সহায়তা পেলেন না। শুধুমাত্র রাসমনিরা নন, ঐ যদুপুর মৌজায় অনুপস্থিত জমিদার মৃত যামিনী মুখোপাধ্যায়ের জমিতে কয়েক দশক চাষাবাদ করা অসংখ্য আদিবাসী বর্গাদার উচ্ছেদের আশংকায় দিন কাটাচ্ছেন। পার্টি তাঁদের পাশে সর্বশক্তি নিয়ে থাকবে।

খণ্ড-29
সংখ্যা-36