খবরা-খবর
সলমন রুশদির ওপর হামলাকে ধিক্কার
Salman Rushdie

সলমন রুশদির ওপর আঘাত এল। এই আঘাত আমাদের আরেকবার মনে করিয়ে দিলো যে সমস্ত বিশ্বজুড়ে বিদ্যমান ও ক্রমবর্ধমান ধর্মান্ধতা ও ধর্মীয় উন্মাদনার বিরুদ্ধে আমাদের আরো জোরের সঙ্গে লড়াই চালাতে হবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এক সভায় তাঁর বক্তৃতা দেওয়ার কথা ছিল। সেখানেই তিনি ভয়াবহভাবে আততাতীর হাতে আক্রান্ত হন। আমরা এই বর্বর আক্রমণের তীব্র নিন্দা করি, তাঁর দ্রুত ও সম্পূর্ণ নিরাময় কামনা করি।

গত তিনদশক জুড়েই ধারাবাহিকভাবে রুশদিকে মেরে ফেলার হুমকি ছিল। তাঁর বিভিন্ন অনুবাদক ও প্রকাশকদের ওপরেও ছিল একই রকম হুমকি। নরওয়ে, ইতালি, জাপান প্রভৃতি জায়গায় তাঁরা বিভিন্ন সময়ে আক্রান্তও হয়েছেন। জাপানি অনুবাদক হিতোশি ইগারাশি এই ধরনের আক্রমণে মৃত্যুবরণও করেছেন। এইসব কথা মাথায় রেখে যে ধরনের নিরাপত্তা রুশদির জন্য দরকার ছিল, তা এই সভায় না থাকাও এক উৎকন্ঠার বিষয়।

ইরানের আয়াতোল্লা ইসলামকে রক্ষার নামে রুশদির ওপরে ফতোয়া জারি করেন। শুধু রুশদির জন্যই নয়, ফতোয়া সম্প্রসারিত হয়েছিল তাঁর বইয়ের অনুবাদক প্রকাশকদের জন্যও। ভারতেও গৌরী লঙ্কেশ, পানসারে, দাভোলকর, কালবুর্গির মতো মানুষদের সাম্প্রতিক বছরগুলোতে হিন্দু ধর্মকে রক্ষার নামে খুন হতে দেখেছি আমরা। এই সমস্ত খুনি ও হামলাকারীদের কঠোর শাস্তি দরকার। দরকার তাদের উষ্কানিদাতাদের শাস্তিও, যে উষ্কানিদাতারা ধর্ম রক্ষার নামে মানুষকে সন্ত্রাসবাদী হওয়ার পথ বেছে নিতে বলছে।

বিশ্বের নানা দেশের মধ্যে ভারতই প্রথম স্যাটানিক ভার্সেসকে নিষিদ্ধ করেছিল। এই সিদ্ধান্ত অবিলম্বে প্রত্যাহার করা দরকার। রুশদীর ওপর আক্রমণের ঘটনা থেকে যেন ইসলামোফোবিয়া না ছড়ায় সেদিকে খেয়াল রাখা দরকার। আমাদের মনে রাখতে হবে রুশদি সাহসের সঙ্গে সমস্ত ধরনের ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধেই বলেছেন, বলেছেন ভারতের হিন্দু আধিপত্যবাদী ফ্যাসিবাদ নিয়েও।

- সিপিআই(এমএল) লিবারেশন কেন্দ্রীয় টিম

খণ্ড-29
সংখ্যা-36