বিবৃতি
সংবাদ মাধ্যমের ওপর ফ্যাসিস্ট হামলাকে ধিক্কার!
attack on the media

সম্প্রতি আয়কর তল্লাশির নামে বেনজির এক বর্বর হামলা চালানো হয়েছে কলকাতা টিভি’র সাংবাদিক-কর্মীদের ওপর। কলকাতা টিভি’র অফিসে টানা ৮০ ঘণ্টা তল্লাশি, নিউজরুমে সংবাদ সম্প্রচারে বাধা দেওয়া, জোর করে সিসিটিভি পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া, নথিপত্র তছনছ করা, সাংবাদিক-কর্মীদের মোবাইল ফোন কেড়ে নেওয়া, তাদের অফিসে আটকে রেখে বাড়িতে পরিজনদের খবর না দিতে দেওয়া, মহিলা কর্মীদের ভয় দেখানো, শিশুপুত্র নিয়ে একা থাকা মহিলা সাংবাদিকের বাড়িতে ভোর রাতে হানা এবং ৬০ ঘণ্টা জেঁকে বসে থেকে বাড়িঘর লণ্ডভণ্ড করা, জেরার নামে সম্প্রচার সম্পর্কেতথ্য জেনে নেওয়ার চেষ্টা (যা সম্পূর্ণ অনধিকার চর্চা), তার পরিজনের বাড়িতে একে-৪৭ ধারী জওয়ানদের পাঁচিল টপকে দরজা ভেঙে ঢোকা, চ্যানেল সম্পাদকের অনুপস্থিতিতে তার অসুস্থ বৃদ্ধ বৃদ্ধা আত্মীয়দের হেনস্থা ও ৮০ ঘণ্টা ঘরে আটকে রেখে চরম অভব্যতা করা — এসবের আসল উদ্দেশ্য যে হয়রান করা ও ভালোরকম সন্ত্রস্ত করা তা খুব স্পষ্ট। এমনকি একা ঘরে অসুস্থ শয্যাশায়ী বাবার পাশেও সাংবাদিককে যেতে দেওয়া হয়নি যেমন, অসুস্থ স্ত্রীকে ভিনরাজ্যের হাসপাতালে একা ফেলে রেখে আধিকারিককে কলকাতায় টেনে আনা হয়েছে।

কলকাতা টিভি’র ‘চতুর্থ স্তম্ভ’ অনুষ্ঠানটি তাঁর নির্ভীক, বলিষ্ঠ উপস্থাপনার জন্য বিশেষ জনপ্রিয়। বিজেপি-আরএসএস তথা কেন্দ্রীয় সরকারের সমস্ত অনাচার, ভ্রষ্টাচার, অর্থনৈতিক লুণ্ঠন ও রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক নির্লজ্জ আগ্রাসনকে ‘চতুর্থ স্তম্ভ’ দিনের পর দিন উন্মোচিত করেছে। বাংলার মানুষকে ফ্যাসিবাদের নখ-দাঁতকে চিনতে সাহায্য করেছে। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির ভরাডুবির পিছনে অনুষ্ঠানটির ভূমিকা অনস্বীকার্য। আর দক্ষ, সাহসী উপস্থাপনার জন্য মূল উপস্থাপক তথা কলকাতা টিভি’র মুখ্য সঞ্চালক সুচন্দ্রিমা যেমন ফ্যাসিবাদ বিরোধিতায় এক পরিচিত ‘মুখ’ হয়ে উঠেছেন, তেমনই তার নিশানাও হয়ে উঠেছেন। আর সেজন্যই তাঁকে আটকে রেখে ‘চতুর্থ স্তম্ভ’ অনুষ্ঠান বন্ধ রেখে, সন্ত্রাস সৃষ্টি করে আক্রোশ মেটানো হয়েছে।

আমরা কলকাতা টিভি’র ওপর এই হিংস্র তাণ্ডবকে ধিক্কার জানাচ্ছি। নির্ভীক নিরপেক্ষ যে কোন সংবাদ মাধ্যমের ওপর যে কোনও হামলার বিরোধিতা করি, কারণ সংবাদ মাধ্যম হল গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভ।

খণ্ড-29
সংখ্যা-34