পুঁজিবাদ এক ক্রমপ্রসারমান ক্ষুধার সাম্রাজ্য
expanding hunger

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা, ইন্টারন্যাশনাল ফান্ড ফর এগ্রিকালচারাল ডেভেলপমেন্ট (আইএফএডি), জাতিসংঘ শিশু তহবিল (ইউনিসেফ), জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক যৌথভাবে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে কিছু তথ্য।

২০২১ সালে ৮২.৮ কোটি মানুষ অনাহারের কবলে। তার আগের বছরের থেকে ৪.৬ কোটি বেশি এবং ২০১৯’র থেকে ১৫ কোটি বেশি।

২০১৫ সাল থেকে তুলনামূলকভাবে অপরিবর্তিত থাকার পর ২০২০ সালে ক্ষুধায় আক্রান্ত মানুষের অনুপাত লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে থাকে এবং ২০২১ সালে বিশ্ব জনসংখ্যার ৯.৮ শতাংশ অনাহারক্লিষ্ট। এটি ২০১৯এ ছিল ৮ শতাংশ এবং ২০২০তে ৯.৩ শতাংশ।

২০২১ সালে বিশ্বের প্রায় ২৩০ কোটি মানুষ (২৯.৩ শতাংশ) মাঝারি বা গুরুতরভাবে খাদ্য নিরাপত্তাহীন অবস্থায় ছিল। এই সংখ্যা কোভিড১৯ মহামারীর প্রাদুর্ভাবের আগের তুলনায় ৩৫ কোটি বেশি। প্রায় ৯২.৪ কোটি মানুষ (বিশ্বের জনসংখ্যার ১১.৭ শতাংশ) গুরুতর মাত্রায় খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার সম্মুখীন হয়েছে, যা দু’বছরে ২০.৭ কোটি বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২১ সালে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় লিঙ্গ ব্যবধান বাড়তে থাকে। বিশ্বের ৩১.৯ শতাংশ নারী মাঝারি বা মারাত্মক মাত্রায় খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ছিল, পুরুষদের ক্ষেত্রে তা ছিল ২৭.৬ শতাংশ। ৪ শতাংশের বেশি পয়েন্টের ব্যবধান, ২০২০ সালে এই ব্যবধান ছিল ৩ শতাংশ পয়েন্ট।

প্রায় ৩১ কোটি মানুষ ২০২০ সালে স্বাস্থ্যকর খাদ্য পায়নি। ২০১৯ সালের তুলনায় ১১.২ কোটি বেশি, কোভিড১৯ মহামারী ও তার মোকাবিলায় নেওয়া পদক্ষেপগুলির কারণে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধির ফলে এটা হয়েছে।

পাঁচ বছরের কম বয়সী আনুমানিক ৪.৫ কোটি শিশু অপুষ্টির সবচেয়ে মারাত্মক রূপ ‘অবক্ষয়ে’ ভুগছিল। যা শিশুদের মৃত্যুর ঝুঁকি ১২ গুণ পর্যন্ত বাড়িয়ে দেয়। অধিকন্তু, পাঁচ বছরের কম বয়সী ১৪.৯ কোটি শিশুর খাদ্যে প্রয়োজনীয় পুষ্টির দীর্ঘস্থায়ী অভাবের কারণে তাদের বৃদ্ধি ও বিকাশ থেমে গেছে। এবং তার উল্টোদিকে ৩.৯ কোটি শিশু ওভারওয়েট।

কেবল বুকের দুধ খাওয়ানোর মাত্রা বাড়ছে। ২০২০ সালে বিশ্বব্যাপী ছয় মাসের কম বয়সী প্রায় ৪৪ শতাংশ শিশুকে কেবলমাত্র বুকের দুধ খাওয়ানো হচ্ছে। ২০৩০ সালের মধ্যে তা ৫০ শতাংশ করার লক্ষ্য আছে। অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয়, প্রতি তিনজনের মধ্যে দুজন শিশুকে তাদের বৃদ্ধি ও পূর্ণ সম্ভাবনা বিকাশের জন্য প্রয়োজনীয় ন্যূনতম বৈচিত্র্যপূর্ণ খাদ্য খাওয়ানো হয় না।

খণ্ড-29
সংখ্যা-34