বিবৃতি
দক্ষিণ ভারতে প্রবেশের অনুমতি মিলল না বিজেপি’র
bjp-did-not-get-permission

জনবিরোধী ও বিচ্ছিন্নতাবাদী বিজেপি এবং সঙ্ঘ পরিবারের সমস্ত চক্রান্তকে ব্যর্থ করে তাদের চূড়ান্তভাবে পরাজিত করার জন্য সিপিআই(এমএল), কর্নাটকের জনগণকে সংগ্রামী অভিনন্দন জানাচ্ছে। ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি’কে পরাস্ত করতে কর্নাটকের সাধারণ জনগণের এই গণরায় এক পূর্বাভাস হয়ে উঠুক।

বিজেপির বিভাজনের রাজনীতি, তাদের পরিচালিত রাজ্য সরকারের নজিরবিহীন দুর্নীতি, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের অতিরিক্ত মূল্যবৃদ্ধি, জীবনযাপনের ক্রমবর্ধমান খরচ, কৃষক ও শ্রমিক বিরোধী আইন, ভেঙে পড়া পরিকাঠামো, আকাশছোঁয়া বেকারত্ব, রাজ্যের পঙ্গু অর্থনীতি, মহিলাদের উপর, তাঁদের স্বাধীনতার উপর সহিংস নির্যাতন-নিপীড়ন, ক্রমবর্ধমান জাতিগত অত্যাচার, সাম্প্রদায়িক বিভাজন ও ধর্মীয় বিদ্বেষ ও গোঁড়ামির বিরুদ্ধে কর্নাটকের জনতা গণরায় দিয়েছে।

স্বয়ং নরেন্দ্র মোদী রাজ্যজুড়ে বিজেপির বিভিন্ন রোড-শো ও জনসভায় উপস্থিত থাকা সত্ত্বেও বিজেপির এই পরাজয় দেখিয়ে দিল যে ‘মোদী’ ব্র‍্যান্ডটি অবিনশ্বর নয়। অন্যদিকে ঠুটোঁ জগন্নাথের মতো বসে থাকা নির্বাচন কমিশন ঘৃণাভরা বক্তৃতা, এমনকি নির্বাচনী প্রচার শেষ হওয়ার পরের পর্বে ও নানা আদর্শ আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে নীরব থেকে রাজ্যের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াগুলিকে অবজ্ঞা করেছে।

এই নির্বাচনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী সুধাকর সহ বর্তমান বিজেপি সরকারের বেশ কয়েকজন মন্ত্রী পরাজিত হয়েছে। কর্নাটকে কোভিড-১৯ সঙ্কটের সময় বিজেপি সরকারের চরম অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে স্পষ্ট অভিযোগ উঠে আসে। শিক্ষামন্ত্রী বি সি নাগেশ, যিনি অন্যায়ভাবে হিজাব পরার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিলেন, মুসলিম মহিলা শিক্ষার্থীদের অপমানিত করেছিলেন এবং তাঁদের শিক্ষা থেকে বঞ্চিত করেছিলেন, তিনিও পরাজিত হয়েছেন। বিজেপির জাতীয় সম্পাদক সি টি রবির পরাজয় কর্নাটকের জনগণের বিজেপির সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষপূর্ণ রাজনীতির প্রত্যাখানকেই দেখিয়ে দেয়।

কেআরপুরা এবং কানাকাগিরি নির্বাচনী এলাকায় সিপিআই(এমএল) প্রচুর কাজ করা সত্ত্বেও, পার্টি প্রত্যাশিত ফল পায়নি। আগামীদিনে এই বিষয়ে পার্টি প্রয়োজনীয় পর্যালোচনা এবং সংশোধন করবে। সিপিআই(এমএল) লিবারেশন, বিজেপির ফ্যাসিবাদী আক্রমণের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে জনগণের দাবির পাশে দাঁড়াবে। পাশাপাশি, নবনির্বাচিত সরকার যাতে জনগণের মতামত মেনে চলে এবং তার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পূরণ করে তারজন্য সোচ্চার হবে।

“বিজেপি হারাও, কর্নাটক বাঁচাও” এই স্লোগানকে সামনে রেখে বিজেপি’কে ভোটে হারানোর জন্য এবং দুটি নির্বাচনী এলাকায় আমাদের ভোট দেওয়ার জন্য সিপিআই(এমএল) কর্নাটকের জনগণকে ধন্যবাদ জানায়। এছাড়াও বাহুতভা কর্নাটক, এডেলু কর্নাটক ও অন্যান্য সুশীল সমাজ সংস্থা ও এই কয়েক মাস ধরে যারা অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন এবং অসংখ্য সেক্টর নির্দিষ্ট রিপোর্ট কার্ডের মাধ্যমে বিজেপির জনবিরোধী নীতিগুলি প্রকাশ করেছেন যা বিজেপির পরাজয়ে সাহায্য করেছে, সেইসকল বিশিষ্ট ব্যক্তিদেরও কুর্নিশ জানাই।

আমরা এখন ছত্তিশগড়, মধ্যপ্রদেশ, মিজোরাম, রাজস্থান এবং তেলেঙ্গানার জনগণের দিকে তাকিয়ে আছি, যেখানে আগামী কয়েক মাসে বিধানসভা নির্বাচন হতে চলেছে। আশা করা যায়, কর্নাটকের মতো গোটা দেশজুড়ে মানুষ ভোট দেবেন বিজেপির জনবিরোধী ও ঘৃণার রাজনীতির বিরুদ্ধে দেশের গণতন্ত্র ও ভারতীয় সংবিধানকে বাঁচাতে।

- কর্নাটক রাজ্য কমিটি, সিপিআই(এমএল) লিবারেশন

খণ্ড-30
সংখ্যা-15