জেনারেল কাশেম সোলেমানির হত্যাকে সিপিআই(এমএল) ধিক্কার জানাচ্ছে, যে হত্যার দায় মার্কিন রাষ্ট্রপতি ট্রাম্প নিজে নিয়েছেন। কোনো প্ররোচনা ছাড়াই ইরান সেনাবাহিনী ও রাষ্ট্রের অন্যতম প্রধান ব্যক্তিত্বের এই হত্যা এবং তার সাথে পপুলার মবিলাইজেশন ফোর্সেস-এর (ইরান সমর্থিত মিলিশিয়াদের এক ছাতা সংগঠন) ডেপুটি কম্যান্ডার আবু মাহাদি আল-মুহনদিস এবং অন্ততপক্ষে আরো ছয় ব্যক্তির হত্যা ইরানের বিরুদ্ধে সাম্রাজ্যবাদী যুদ্ধকে বাড়িয়ে তোলার উদ্দেশ্যেই সংঘটিত করা হয়েছে।
বর্ণবৈষম্যবাদী ইজরায়েলি সরকার এবং মার্কিন-ইজরায়েল গাঁটছড়া চালানো এই অঞ্চলের লুন্ঠনের পথে বিরোধী শক্তি হিসাবে দাঁড়িয়ে থাকা ইরান রাষ্ট্রকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং বিশেষভাবে ইজরায়েল দীর্ঘদিন ধরেই নিশ্চিহ্ন করতে চেয়ছে। ইরানের বিরুদ্ধে মার্কিনের যুদ্ধ গোটা অঞ্চলেই সংঘাতকে গভীরতর করে তুলে অপরিমেয় দুঃখকষ্ট এবং জীবনহানি ঘটাবে। এছাড়া, ট্রাম্প একতরফাভাবে ইরানের সঙ্গে পারমাণবিক চুক্তিকে বাতিল করে দেওয়ার ফলে বিষয়টা দুই পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্রের মধ্যে সংঘাতে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এবং তার অর্থ হবে অস্তিত্বের সংকটকে অকল্পনীয় মাত্রায় বাড়িয়ে তোলা।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান পদক্ষেপ এবং এই অঞ্চলে তার সামরিক সক্রিয়তাকে বাড়িয়ে তোলাটা অনিবার্যভাবেই গণতান্ত্রিক অধিকারের জন্য লড়াই করা সমস্ত প্রগতিশীল শক্তির উপর নিপীড়নকে তীব্রতর করে তুলবে। এদের মধ্যে ইরানের শক্তিগুলো রয়েছে এবং লক্ষনীয়ভাবে রয়েছে ইরাকে চলমান প্রতিবাদের শক্তিগুলিও, যারা ইরাককে মার্কিন এবং ইরানের মধ্যে সংঘাতের রণভূমিতে পরিণত হতে দেওয়ার বিরোধী।
জেনারেল সোলেমানির হত্যা সামনের নির্বাচনে ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারে মদত যোগাবে, এমন পরিকল্পনাও সুস্পষ্টভাবে ধরা পড়েছে। কেননা, ঐ নির্বাচনী প্রচার চালানো হবে সাম্রাজ্যবাদী বিজয় মত্ততা, ফ্যাসিবাদী জাতীয়তাবাদ এবং ইসলামোফোবিয়াকে আরো বাড়িয়ে তোলার কর্মসূচির ভিত্তিতে।
আমরা ইরান, ইরাক এবং এই অঞ্চলের জনগণের পাশে দাঁড়াচ্ছি। আমরা দাবি করছি, ভারত সরকারকে তার জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটাতে হবে এবং ট্রাম্পের অপরাধমূলক কার্যকলাপকে ধিক্কার জানাতে হবে এবং মার্কিন সরকার সামনের দিনগুলোতে ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ বাধালে তার দৃঢ় বিরোধিতা করতে হবে।
দীপঙ্কর ভট্টাচার্য,
সাধারণ সম্পাদক, সিপিআই(এমএল)