খবরা-খবর
সারা দেশজুড়ে বিক্ষোভ সংগঠিত হল মোদী-যোগী সরকারের কৃষক হত‍্যার বিরুদ্ধে
against the killing of farmers

এআইকেএসসিসি’র এক প্রেস বিবৃতিতে বলা হয়, ৩ অক্টোবর উত্তরপ্রদেশে (লখিমপুর খেরী) নৃশংসভাবে কৃষক হত্যার বিরুদ্ধে এআইকেএসসিসি’র ডাকে ৪ অক্টোবর কলকাতায় মৌলালি মোড়ে বিক্ষোভ সমাবেশে সমন্বয় সমিতির সাথে সংযুক্ত বিভিন্ন কৃষক সংগঠন ছাড়াও আরও বহু সংগঠন যোগ দেয়। এছাড়াও পূর্ব বর্ধমান, নদীয়া, বাঁকুড়া, দক্ষিণ চব্বিশ পরগণা, দার্জিলিং সহ বিভিন্ন জেলায় প্রায় একশ’টি জায়গায় অনুরূপ বিক্ষোভ সংগঠিত হয়।

মৌলালির বিক্ষোভসভা পরিচালনা করেন এআইকেএসসিসি’র রাজ‍্য সম্পাদক কার্তিক পাল। বক্তব‍্য রাখেন সর্বভারতীয় কৃষক নেতা হান্নান মোল্লা, অভীক সাহা, প্রদীপ সিংহ ঠাকুর, সুশান্ত ঝাঁ, স্বপন দেবনাথ, তুষার ঘোষ, তরুণ গাঙ্গুলী, মিহির পাল সহ সমন্বয় সমিতির অন্যান্য নেতারা। এছাড়া বন্দীমুক্তি কমিটির ছোটন দাস, নো-এনআরসি মুভমেন্টের অরূপ মজুমদার, আইসা’র অন্বেষা, এআইসিসিটিইউ’র বাসুদেব বোস, নেতাজী ভগৎ সিং সমিতির নৌসিন বাবা খান, এআইপিডব্লিউএ’র ইন্দ্রানী দত্ত, ইয়ং বেঙ্গলের অনির্বান তলাপাত্র, এআইআরডব্লিউএ’র শিখা সেন সহ আরও অনেকে। শেষে মোদী ও যোগী সরকারের কুশপুতুল পোড়ানো হয়।

বক্তারা বলেন, লখিমপুর খেরীতে যেভাবে মন্ত্রীর কনভয় কৃষকদের পিষে দিল তা পরিকল্পিত, কৃষক আন্দোলনকে হিংস্রতার পথে ঠেলে দিয়ে পিষ্ট করতে চায় সরকার। প্রতিবাদীদের জেলে পুরছে, সংখ‍্যালঘুদের হত‍্যা করে মৃতদেহের বুকের ওপর লাফাচ্ছে, কৃষকদের পিষে দিচ্ছে গাড়ির কনভয়ে — বিজেপি সরকারগুলো তাদের নৃশংস কদর্য ফ‍্যাসিস্ট চেহারা প্রকাশ করছে। কিন্তু এই অপশক্তির বিরুদ্ধে দেশের মানুষ আরও এককাট্টা হবে।

কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী অজয় মিশ্র টেনির অপসারণ ও তার পুত্র আশীষ মিশ্র টেনির বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজু করে গ্রেপ্তার ও সমগ্র ঘটনার বিচারবিভাগীয় তদন্ত দাবি করা হয়।

সভার শেষে কার্তিক পাল বলেন আগামী কয়েকদিন রাজ‍্যের বিভিন্ন জায়গায় স্থানীয়স্তরে আন্দোলন চলবে। এরাজ‍্যে কৃষকদের দাবি নিয়ে আন্দোলন আরও জোরালো করা হবে।


নদীয়ার ধুবুলিয়ায় ধিক্কারসভা

৪ অক্টোবর ধুবুলিয়ায় আয়োজিত প্রতিবাদী কর্মসূচিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, উঃ প্রদেশে ঘাতকের নৃশংস হামলাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে অন্নদাতারা আজ যে বার্তা তুলে ধরেছেন তা হলো হাজারো আক্রমণ সত্বেও চলমান কৃষক আন্দোলন কখনই মাঝপথে থেমে যেতে পারে না। কৃষি সংকটের চরিত্রই জন্ম দেবে কৃষকের প্রত্যাঘাত। কৃষক হত্যার মধ্য দিয়ে আসলে দেশের সংবিধান ও গণতন্ত্রকে হত্যা করছে বিজেপি। দেশের ব্যাপক মানুষ এই অপরাধ ক্ষমা করবে না। ক্ষমতার দম্ভের পতন হবেই।

এই বার্তা তুলে ধরে ধিক্কার সভার পর ৩৪নং জাতীয় সড়ক অবরোধ করে দাহ করা হলো উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের কুশপুতুল। শ্লোগানে শ্লোগানে উত্তাল হয়ে উঠলো গোটা ধুবুলিয়া বাজার। খুনী মন্ত্রী অজয় মিশ্র ও তার ছেলে আশীষ মিশ্রকে গ্রেপ্তার করে খুনের মামলা দায়ের করতে হবে,কঠোর শাস্তি দিতে হবে। মুখ্যমন্ত্রী যোগীকে বরখাস্ত করতে হবে। তিন কৃষি আইন বাতিল করতে হবে। কৃষক হত্যাকারী মোদী-যোগী হঠাও দেশ বাঁচাও,গণতন্ত্র বাঁচাও। এই কর্মসূচি এলাকার ব্যাপক মানুষের দৃস্টি আকর্ষণ করে। বহু মানুষ সহমর্মিতা জানায়।

ধিক্কারসভায় বক্তব্য রাখেন সিপিআই(এমএল) জেলা সম্পাদক জয়তু দেশমুখ সহ সন্তু ভট্টাচার্য, ঠান্ডু সেখ, গিয়াসউদ্দিন সেখ, আরওয়াইএ জেলা দায়িত্বশীল অমিত মন্ডল, রাজ্য সম্পাদক রণজয় সেনগুপ্ত। ছিলেন আনসারুল হক, ইসলাম ঢাকি প্রমূখ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।


হুগলীর বৈঁচিতে মিছিল ও সভা

৫ অক্টোবর বৈঁচিতে সিপিআই(এমএল) অফিসের সামনে থেকে বামপন্থীদের সংযুক্ত মিছিল সমগ্র বাজার এলাকা পরিক্রমা করে। মিছিল থেকে আওয়াজ ওঠে : উত্তরপ্রদেশের লখিমপুর খেরীতে বিজেপির গুন্ডাদের হামলায় নিহত বীর কৃষকদের জানাই লাল সেলাম।শহিদ লাভপ্রীত,দলজিৎ,নক্ষত্র ও গুরবিন্দার সিং লাল সেলাম।কেন্দ্রীয় উপ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অজয় মিশ্রের পুত্র কৃষক হত্যাকারী আশিস মিশ্রকে গ্রেপ্তার করতে হবে। হত্যাকাণ্ডের নৈতিক দায় স্বীকার করে অজয় মিশ্র ও যোগী আদিত্যনাথকে ইস্তফা দিতে হবে।

জিটি রোড চৌমাথায় বিক্ষোভসভায় বক্তব্য রাখেন খেতমজুর ইউনিয়নের সুশান্ত চ্যাটার্জি, সারা ভারত কৃষক সভার সুনীল ক্ষেত্রপাল, ডিওয়াইএফের ঊজ্জ্বল ঘোষ এবং আয়ারলার হুগলী জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন বাগ। কিষাণ মহাসভার মুকুল কুমার সভা সঞ্চালন করেন।


দক্ষিণ ২৪ পরগণার বজবজে প্রতিবাদ

৪ অক্টোবর বজবজে জেলা অফিসের সামনে, গ্রামাঞ্চলে এবং ৫ অক্টোবর বাখরাহাটের বুড়িরপোল নতুন রাস্তা মোড়ে সিপিআই(এমএল) লিবারেশনের প্রতিবাদী কর্মসূচি আয়োজিত হয়।জেলা অফিসের সামনে কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন সম্পাদক কিশোর সরকার, উপস্থিত ছিলেন দেবাশীষ মিত্র, লক্ষীকান্ত অধিকারী, যুবনেতা সেখ সাবির সহ আরো অনেকে।বজবজ গ্রামাঞ্চলে কর্মসূচির নেতৃত্ব দেন গ্রামীণ লোকাল সম্পাদক ইন্দ্রজিৎ দত্ত, উপস্থিত ছিলেন জেলা নেত্রী দেবযানী গোস্বামী, শ্যামসুন্দর গোস্বামী, ছাত্র নেতা দীপ মালিক, অনিন্দিতা মালিক সহ আরো অনেকে। বাখরাহাটে বক্তব্য রাখেন কৃষক নেতা দিলীপ পাল, উপস্থিত ছিলেন লোকাল সম্পাদক নিখিলেশ পাল, নেত্রী পূর্ণিমা হালদার, শাহালম সেখ সহ আরো অনেকে।

হাওড়ার বালীতে বিক্ষোভসভা

৫ অক্টোবর মোদী সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ কর্মসূচি হয়। শুরুতে চলমান কৃষক আন্দোলনে নিহত শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে নিরবতা পালন করা হয়। অত্যাচারী মোদী সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে বক্তব্য রাখেন দীপক চক্রবর্তী, পার্থ সারথি মিত্র, বাবলু গুহ। ২০২০ কৃষি আইন এবং মোদী, যোগীর কুশপুতুল পোড়ানো হয়। দাবি তোলা হয় অবিলম্বে কৃষক বিরোধী মানুষ বিরোধী কৃষি বিল বাতিল করতে হবে, মন্ত্রী অজয় মিশ্রর পুত্র আশিষ মিশ্রর কঠোরতম শাস্তি দিতে হবে। এলাকার সর্বস্তরের মানুষকে বন্যা কবলিতদের পাশে থাকার আহ্বান জানানো হয়। সভার সঞ্চালক মাধব মুখার্জি সকল শ্রেণীর মানুকে ধন্যবাদ জানিয়ে সভার সমাপ্তি ঘোষণা করেন।

খণ্ড-28
সংখ্যা-36