রাজ্য জুড়ে পালিত হল মে দিবস
mayday

দার্জিলিং জেলার রিপোর্ট

প্রতিবারের মতো এবারেও উত্তরবঙ্গ জুড়ে রক্ত পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে মিছিলে শ্লোগানে শপথে শ্রমিকরা মে দিবস পালন করেছে।

দার্জিলিং জেলা পার্টি অফিস : শ্রমজীবী পরিবারের প্রতিনিধি কমরেড রীতা দাসের পতাকা উত্তোলনের পরে শহীদ স্মরণ করে শ্রমিক শ্রেনীর ঐক্যকে সুসংহত করে সাম্প্রদায়িকতা ও ফ্যাসিবাদকে পরাজিত করার শপথে শ্লোগানে শ্লোগানে শেষ হয় মে দিবসের কর্মসূচী। উপস্থিত ছিলেন জেলা সম্পাদক অভিজিৎ মজুমদার, অপু চতুর্বদী, মীরা চতুর্বদী, মোজাম্মেল হক, ময়না সূত্রধর, লক্ষ্মী দাস প্রমুখ।

sakti

 

শক্তিগড় ব্রাঞ্চ কমিটি: শক্তিগড় ব্রাঞ্চ কমিটির পক্ষ থেকে মে দিবসের কর্মসূচিতে পতাকা উত্তোলন করেন পার্টির জেলা কমিটির সদস্য এবং শ্রমিক নেতা পুলক গাঙ্গুলী। শহীদ স্মরণ শেষে পুলক গাঙ্গুলী উপস্থিত কমরেডদের কাছে মে দিবসের তাত্পর্য বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে তুলে ধরেন। যে রক্তক্ষয়ী লড়াইয়ের মধ্যে দিয়ে ৮ ঘণ্টা কাজের অধিকার অর্জন করেছিল, ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকার করেছিল, বর্তমান দেশের ফ্যাসিবাদী সরকার তা কেড়ে নিতে চাইছেন এর বিরুদ্ধেই আগামীর লড়াইকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার শপথে শেষ হয় মে দিনের কর্মসূচি। উপস্থিত ছিলেন রজত বর্মণ, রুবী সেনগুপ্ত, মিলি ভট্টাচার্য, শাশ্বতী সেনগুপ্ত, ছবি দত্ত, গঙ্গা রায়, কল্পনা সরকার, ভাগ্য মন্ডল, আরতি বর্মণ, মনি ভট্টাচার্য, রমা রায় প্রমুখ।

kha

 

খড়িবাড়ি : চা বাগানের শ্রমিক মহল্লায় লকডাউন সঙ্কটেও ধ্বনিত হল মে দিবসের শ্লোগান। সোনা চাঁদি চা বাগান সংলগ্ন মাঠে কমরেড বন্ধু বেক পতাকা উত্তোলন করেন। ছাত্র কমরেড চা শ্রমিক সুমন্তির দুনিয়ার মজদুর এক হও শ্লোগানে ততক্ষণে গলা মিলিয়েকেন নকশালবাড়ির আন্দোলনের প্রবীন নেতৃত্ব কান্দরা মুর্মু  থেকে এ প্রজন্মের চা শ্রমিক নেতা তাসিলাল জোসেফ থেকে সদ্য প্রয়াত লালু ওঁরাওয়ের স্ত্রী মনিয়ারা ওঁরাও  রাজকুমার এক্কারা। কর্মসূচির অঙ্গ হিসেবে চা শ্রমিক দাবি দিবসের দাবির ধারাবাহিকতাকে বজায় রেখে কান্দরা মুর্মুর নেতৃত্বে একটি মিছিলে চা বাগান এলাকায় সংঘটিত হয়।

ফাঁসিদেওয়া : রাঙাপাণি স্টেশন মুটিয়া মজদুর ইউনিয়ন অফিসে এআইসিসিটিইউ-র পক্ষ থেকে পতাকা উত্তোলন করা হয়। বিভিন্ন দাবির সম্মিলিত প্ল্যাকার্ড দিয়ে সাজানো অফিসে কমরেডরা শ্লোগানে শ্লোগানে নেন মে দিবসের শপথ। উপস্থিত ছিলেন নেমু সিংহ, পবিত্র সিংহ, পৈষানজু সিংহ, পঞ্চা বর্মণ, শরত সিংহ প্রমুখ।

jal

জলপাইগুড়ি

মে দিবসে জলপাইগুড়ি পার্টি অফিসে পতাকা উত্তোলন করেন শ্যামল ভৌমিক। শহীদ স্মরণ এবং শ্লোগানে শপথে আগামী দিনের লড়াইয়ে মেহনতি মানুষের ঐক্যকে সুদৃঢ় করার শপথে শেষ হয় মে দিবসের কর্মসূচি। উপস্থিত ছিলেন সুভাষ দত্ত, প্রদীপ গোস্বামী, গোপাল রায়, শিল্পী দত্তগুপ্ত প্রমুখ।

বেরুবাড়ি : বেরুবাড়িতে মে দিবসে রক্ত পতাকা পতাকা উত্তোলন করেন বাছিরুদ্দিন হক। উপস্থিত ছিলেন হিমাংসু মজুমদার, ফরিদুল হক সহ বেশ কিছু শ্রমজীবী মানুষ।

হেলাপাকরি: জলপাইগুড়ি হেলাপাকরিতেও মে দিবসের কর্মসূচী পালিত হয়। উপস্থিত ছিলেন রতন সরকার, হরেন বসাক, নারিয়া বাদক এবং সিপিআই(এম)-এর অজয় সরকার।

coch

কোচবিহার

কোচবিহার পার্টি অফিসে মে দিবসে কর্মসূচী পালিত হয়। পতাকা উত্তোলন করেন সুজিত দে। উপস্থিত ছিলেন রাজা, প্রজাপতি, বীণা সিংহ এবং আরো কিছু শ্রমজীবী মানুষ। এছাড়া জলপাইগুড়ি জেলার রংধামালিতে মুকুল চক্রবর্তী এবং ময়নাগুড়ির রাজার হাটে রেবা অঞ্জনা প্রমুখর নেতৃত্বে মে দিবসের কর্মসূচী পালিত হয়েছে।

mursh

মুর্শিদাবাদের মে দিবস উদযাপন

বহরমপুর শহরের জেলা পার্টি অফিসে ১ মে সকাল সাড়ে আটটার সময় মে দিবসের অনুষ্ঠান শুরু হয়। প্রথমেই পতাকা উত্তোলন, শহীদ বেদীতে মাল্যদান শ্লোগানের পর এক মিনিট নিরবতা পালন করা হল। আন্তর্জাতিক মে দিবস জিন্দাবাদ, পুঁজিবাদের বিরুদ্ধে, সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে, মজদুর ঐক্যের শ্লোগান উঠে। পর্যাপ্ত রেশন দেওয়ার দাবি, রেশন নিয়ে দুর্নীতির বিরুদ্ধে, পরিবার পিছু ১০হাজার টাকার করোনা ভাতার দাবি, পরিযায়ী শ্রমিকদের সরকারী ঘরে ফেরানোর দাবি ও অন্যান্য দাবিতে শ্লোগান তোলেন কমরেড অপুর্ব লাহিড়ী। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন কমরেড রাজীব রায়। তারপর অফিস ঘরে বসে সাধারণ সম্পাদক কমরেড দীপঙ্কর ভট্টাচার্য এর লেখাটার পাঠ করা হল। তারপর লেখাটার সংক্ষিপ্ত ব্যাখা রাখেন রাজ্য কমিটির সদস্য কমরেড সজল পাল। বর্তমান পরিস্থিতির উপর জেলার বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করার প্রচেষ্টার উপর জোর দেওয়ার ব্যাপার নিয়ে আলোচনা হয়। রাজীব রায় জেলার বিভিন্ন ব্লকের উদ্যোগ গ্রহণ করার ব্যাপারে আলোচনা করেন।

রানীনগর ব্লকের গ্রামের মধ্যে মে দিবস উদযাপন করা হয়। এবং বেলডাঙা ২নং ব্লক-এর কাশীপুর গ্রামে মে দিবস পালন করা হয়।

nd

নদীয়া

নদীয়া জেলা সদর কৃষ্ণনগর শহরে পার্টি কার্যালয়ে মে দিবসের লাল পতাকা উত্তোলন কর্মসূচী অনুষ্ঠিত হয়। এর পর শহরের এআইসিসিটিইউ-র পক্ষ থেকে কৃষ্ণনগর বাস ষ্ট্যান্ডেও অনুরূপ কর্মসূচী সংগঠিত হয়। পরিবহন শ্রমিকরা লকডাউনের পরিস্থিতিতে চরম সংকটের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। মে দিবসের দাবীগুলি ছাড়াও পরিবহন শ্রমিকদের খাদ্য ও লকডাউন ভাতার দাবিও তুলে ধরা হয়। সেখানে কয়েকজন শ্রমিক এগিয়ে আসেন ও কর্মসূচীতে অংশগ্রহণ করেন।

ধুবুলিয়াতে পার্টি ও এআইসিসিটিইউ-র পক্ষ থেকে পার্টি কার্যালয়ে পতাকা উত্তোলন করা হয়। মে দিবস উপলক্ষে পার্টিঋর সাধারণ সম্পাদকের লিখিত বার্তা উপস্থিত কমরেডরা পাঠ করেন। ধুবুলিয়ায় বিড়ি ইউনিয়ন, রেলহকার ও লোডিং আনলোডিং ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দও কর্মসূচীতে অংশগ্রহণ করেন। নাকাশীপাড়া ব্লকের গাছা বাজারে পার্টি অফিসেও লাল পতাকা উত্তোলন ও শহীদ স্মরণ কর্মসূচী সংগঠিত হয়। চাপড়া পার্টি অফিসেও অনুরূপ কর্মসূচী সংগঠিত হয়। নবদ্বীপে পার্টি, এআইসিসিটিইউ ও ব্যান্ডেল কাটোয়া রেল হকার ইউনিয়নের কর্মী ও নেতৃত্বের অংশগ্রহণে শহরের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে লালপতাকা,ব্যানার ও শ্রমজীবী মানুষের দাবি সম্বলিত প্ল্যাকার্ড সহকারে প্রচার করা হয়। তাহেরপুরে মে দিবসে পার্টি ও এআইসিসিটিইউ কর্মীদের অংশগ্রহণে লালপতাকা উত্তোলন, শহীদবেদীতে মাল্যদান, জনবহুল স্থানে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখা প্রভৃতির মধ্য দিয়ে সংগঠিত হয়। তারপর রেল স্টেশন নিকটবর্তী স্থানে বামপন্থী ট্রেডইউনিয়নগুলির সাথে যৌথ ভাবে মে দিবস উদযাপন করা হয়। চাকদা শহরের পৌরসভার সামনে যৌথ ভাবে মে দিবস পালন করা হয়। স্লোগান ও সংক্ষিপ্ত বক্তব্যর মধ্যদিয়ে ৮ ঘণ্টার কাজের অধিকার খর্ব করে ১২ ঘণ্টা করার বিরুদ্ধে, লকডাউনে শ্রমিকদের খাদ্য ও অর্থ দেওয়া, শ্রমিকের কাজ ও মজুরীর গ্যারান্টি দেওয়া সহ বিভিন্ন দাবিগুলি তুলে ধরা হয়।

kol

কোলকাতা

যথাযোগ্য মর্যাদার সঙ্গে কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় পালিত হল মে দিবস। ঐদিন মৌলালির রাজ্য পার্টি ও এআইসিসিটিইউ অফিসে শহিদ বেদিতে পতাকা উত্তোলন ও মাল্যদান করা হয়। এই সংক্ষিপ্ত কর্মসূচীতে উপস্থিত ছিলেন এআইসিসিটিইউ-র রাজ্য সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক যথাক্রমে অতনু চক্রবর্তী ও বাসুদেব বোস, রাজ্য নেতা ও কলকাতা এআইসিসিটিইউ-র সভাপতি প্রবীর দাস।

এরপর বিরসুলহাটে মে দিবসের কর্মসূচী পালিত হয়। সেখানে হকার ইউনিয়নের কর্মী ও নেতারা উপস্থিত ছিলেন। বাসুদেব বোস র সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। উপস্থিত ছিলেন অতনু চক্রবর্তী, প্রবীর দাস, মহঃ শামিম, আমিন, রুস্তম ও অন্যান্যরা।

jadv

 

যাদবপুর-ঢাকুরিয়া এলাকায় এআইসিসিটিইউ ও পার্টি লোকাল কমিটির উদ্যোগে একাধিক স্থানে পালিত হয় মে দিবস। গড়ফা রিক্সা স্ট্যান্ড-পালবাজার-৮বি-সিআইটি মার্কেট ও গাঙ্গুলিপুকুর রিক্সাস্ট্যান্ডে শহিদ বেদিতে মাল্যদান করা হয়। এই কর্মসূচীতে উপস্থিত ছিলেন জয়তু দেশমুখ, বাবুন চ্যাটার্জি, অমলেন্দু চৌধুরী, সুষান্ত দেবনাথ, মমতা ঘোষ এবং রিক্সা ইউনিয়নের কর্মীবৃন্দ।

bans

 

বাঁশদ্রোণিতে বেলতলা রিক্সা স্ট্যান্ডে উদযাপিত হয় মে দিবস। রিক্সা চালক ছাড়াও সেখানে উপস্থিত ছিলেন সৌরভ, স্বপন রায় চৌধুরী, গণেশ পুষ্টি, রাজিব গুহ, মিলন হালদার, মিঠু জ্বালানি প্রমুখ।

টালিগঞ্জ কমিটির তরফ থেকে মে দিবস পালিত হয় শ্রীকলোনি মাঠের সামনে। শহিদ বেদির সামনে পতাকা, পোস্টার নিয়ে কমরেডরা দাঁড়ান। বক্তব্য রাখেন, মলয়, ছাত্র কর্মী রুদ্র, সৌরভ। শান্তনু ভট্টাচার্য সঙ্গীত পরিবেশন করেন। উপস্থিত ছিলেন সৌমিত্র, শীলা, শংকর, আইসার কর্মী বর্ষা, আকাশ প্রমুখ। রামগড়ে মিড ডে মিল কর্মীরা পোস্টার প্রদর্শন করে পালন করেন মে দিবস।

behala

 

বেহালায় তিনটি ব্রাঞ্চের উদ্যোগে তিন জায়গায় মে দিবস পালিত হয়। কালিতলা ব্রাঞ্চের পক্ষ থেকে স্থানীয় পার্টি অফিসে মাল্যদান ও নীরবতা পালনের মাধ্যমে মে দিবস উদযাপিত হয়। পুলিশী হুমকিকে অগ্রাহ্য করেই, কমরেডদের উল্লেখযোগ্য উপস্থিতিতে কর্মসূচী সম্পন্ন হয়।

সরশুনা ব্রাঞ্চের তরফ থেকে সতীন সেন পার্কে এর সামনে কর্মসূচী পালিত হয়। নীরবতা পালন করে শহিদদের স্মরণ করার পর ব্রাঞ্চের পক্ষ থেকে ছাত্র নেতা শুভদীপ পার্টির সাধারণ সম্পাদকের প্রেরিত বার্তা পাঠ করেন ও অভিজিৎ সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন। রবীন্দ্রনগর ব্রাঞ্চের পক্ষ থেকে সেখানে অবস্থিত কমঃ চারু মজুমদার ও সরোজ দত্তের প্রতিকৃতিতে মাল্যদান করার পর মে দিবসে পার্টির আহ্বানকে সামনে রেখে বক্তব্য রাখেন ছাত্র নেতা অত্রি।

bel

উত্তর ২৪ পরগণা

মে দিবস শ্রমিকদের কাছে নতুন চ্যালেঞ্জ নিয়ে উপস্থিত হয়েছে। কোভিড-১৯ সংক্রমণের সুযোগ নিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্যের শাসকরা শ্রমিকদের কাজের ঘণ্টা বাড়িয়ে মজুরি সংকোচন করছে ও লকডাউনের সময়কার মজুরি থেকে শ্রমিকদের বঞ্চিত করেছে। এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের শপথ নেওয়া হয়। বেলঘরিয়া কার্যালয়ে আঞ্চলিক কমিটির সদস্য কমরেড বিষ্ণু রায়, কামারহাটি কার্যালয়ে চটকল ইউনিয়নের সম্পাদক কমরেড মাজাহার খান, জেলা কার্যালয় রাষ্ট্রীয় পরিবহন ইউনিয়ন সদস্য কমরেড পরিমল দাস, মিড ডে মিল ইউনিয়ন কামারহাটি শাখার সম্পাদিকা কমরেড শিখা গুহরায়, জেলা অফিস সম্পাদক কমরেড অশোক সাহা শহীদ বেদীতে পুষ্পার্ঘ্য নিবেদন করেন। শহীদ স্মৃতিতে নীরবতা পালন এবং শ্লোগানের মধ্য দিয়ে কর্মসূচী শেষ হয়।

as

 

অশোকনগরের শহর ও গ্রামের পার্টি অফিসে, বীজপুরের হালিশহর জেটিয়া বাজার ও দাসপাড়া অঞ্চলে, নৈহাটির শিবদাসপুর গ্রামে, ও নৈহাটি জুটের ইউনিয়ন অফিসে পতাকা উত্তোলন হয়। স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রায় তিরিশজন শ্রমিক এই কর্মসূচীতে উপস্থিত ছিলেন। হালিশহর জেঠিয়া অঞ্চলে, জগদ্দলের কাঁকিনাড়া জুটমিলে ও জেজে আইতেও শ্রমিকেরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে মে দিবস পালনে সামিল হন। কাঁচরাপাড়া অঞ্চলে রেল শ্রমিকেরা মে দিবস পালন করেন। রাজারহাট, মধ্যমগ্রাম, বসিরহাট অঞ্চলে ও গাইঘাটার চাঁদপাড়া পার্টি অফিসে মে দিবস পালিত হয়।

barasat

 

জেলা সদর বারাসাতে বারাসাত লিডিং টিমের উদ্যোগে ঐতিহাসিক মে দিবস প্রতিপালিত হলো। সভায় বক্তব্য রাখেন আজকের দেশব্রতী পত্রিকার সম্পাদক কমরেড অনিমেষ চক্রবর্তী, শহীদবেদীতে মাল্যদান করেন দিলীপ দত্ত, রনজিৎদা, সুশান্ত বিশ্বাস, সমীর চাটার্জি, পবন, মায়া মুখার্জি ও জয় মুখার্জি।

offc

দক্ষিণ ২৪ পরগণার রিপোর্ট

ঐতিহাসিক মে দিবসে দঃ ২৪ পরগণার জেলাজুড়ে কর্মসূচী পালিত হয়। করোনা ভাইরাস আক্রমনের সময় যখন মানুষ ক্ষুধা, অধিকার,সম্মান ও রোগের হাত থেকে বাঁচতে মরনপণ লড়াই চালাচ্ছে তখন সরকারী হামলাও নেমে এসেছে‌। একদিকে সাম্প্রদায়িক বিভেদের বিষ ছড়াচ্ছে অন্যদিকে ৮ ঘণ্টা শ্রমদিবসকে ১২ ঘণ্টায় পরিণত করার জন্য গুজরাট সরকার ফতোয়া জারি করেছে। কেন্দ্র সরকার গোপনে এই মতলবে আছে। চিকিৎসা/নগদ অর্থ প্রদানে/বিনামূল্যে রেশন সরবরাহে টালবাহানা ও দুর্নীতি অব‍্যহত রয়েছে। এর প্রতিবাদে আজ দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার জেলা কার্যালয়ে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন পার্টির জেলা সম্পাদক কমরেড কিশোর সরকার। রক্ত পতাকা তোলেন সিটু হকার্স ইউনিয়ন থেকে আগত কমরেড শশাঙ্ক ব্যানার্জী, বজবজ শহর লোকাল কমিটির  সম্পাদক অঞ্জন ঘোষ, দেবাশিষ মিত্র, স্বপন নস্কর, সুকান্ত দাস , সেখ সাবির, নন্দন মন্ডল সহ অন্যান্যরা। বজবজের নিশ্চিন্তপুর গ্রামে রক্ত পতাকা তোলেন আয়ারলা-র জেলা নেত্রী কমরেড দেবযানি গোস্বামী, যুব নেতা আশুতোষ মালিক, আইসা নেত্রী সঞ্জনা ধাড়া, নির্মাণ শ্রমিক ইউনিয়নের নেত্রী অঞ্জনা মাল সহ আরো অনেকে।

bakra

 

বাখরাহাট স্কুল মোড়ে রক্ত পতাকা উত্তোলন পশ্চিমবঙ্গ গৃহ ও অন্যান্য নির্মাণ শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের দঃ ২৪ পরগণা জেলা সভাপতি কমরেড ইন্নাস সেখ, শহীদ বেদীতে মাল্যদান করেন সারাভারত কিষাণ মহাসভার জেলা সম্পাদক কমরেড দিলীপ পাল, পার্টির লোকাল সম্পাদক কমরেড নিখিলেশ পাল, বিপ্লবী যুব অ্যাসোশিয়েশনের পক্ষে কমরেড শুভদীপ পাল, কমরেড অর্ঘজ্যোতি পাল, সারাভারত প্রগতিশীল মহিলা সমিতি বিষ্ণুপুর-২ ব্লক কমিটির সম্পাদিকা কমরেড পূর্ণিমা হালদার, সারাভারত কৃষি ও গ্রামীণ মজুর সমিতির পক্ষে কমরেড অনুপ সরদার ও অন্যান্য সংগ্রামী সাথীরা। পরিচালনা করেন কমরেড শুভদীপ পাল। সভায় পার্টির সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের মে দিবস উপলক্ষে লেখা পাঠ করেন কমরেড শুভদীপ পাল। সভা শেষে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন কমরেড দিলীপ পাল। উস্থি বাজারে রক্ত পতাকা তোলেন নির্মাণ ইউনিয়নের জেলা নেতা জয়দেব নস্কর, শহীদ বেদীতে মাল্যদান করেন এআইকেএম-এর জেলা নেতা কমরেড জগদীশ মন্ডল, কমরেড ভবোতোষ মন্ডল সহ আরো অনেকে। বজবজের জামালপুরে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন ও সভা পরিচালনা পার্টির জেলা সম্পাদক। রক্ত পতাকা তোলেন আয়রলা-র জেলা নেতা কমরেড শ্যাম সুন্দর গোস্বামী, শহীদ বেদীতে মাল্যদান করেন কমরেড মমতাজ বেগম সহ আরো অনেকে। বারুইপুর এআইসিসিটিইউ অনুমোদিত হরিহরপুর-লাঙ্গলবেড়িয়া রিক্সাচালক ইউনিয়ন ১ মে উদযাপন করে। রক্ত পতাকা উত্তোলন ও শহীদবেদীতে মাল্যদান করেন সম্পাদক কমরেড স্বপন ব্যানার্জী ও অন্যান্য ইউনিয়ন নেতৃত্ব।

বাখরাহাট অঞ্চলে নিজস্ব কর্মসূচী ছাড়াও সিপিআই(এম)-র কার্যালয়ে যৌথভাবে কর্মসূচী পালিত হয়। বাখরাহাটে যৌথ কর্মসূচীতে বক্তব্য রাখেন পার্টির জেলা নেতা কমরেড দিলীপ পাল। বাটা অঞ্চলে সিপিআই(এম) কার্যালয়ে যৌথ কর্মসূচীতে আমাদের প্রতিনিধিত্ব করেন জেলা নেতা কমরেড শিবন ধর।
রিপোর্ট- শুভদীপ।

hind

হুগলি

ওরা কাজ করে মাঠে, বন্দরে, ওরা কাজ করে পথে প্রান্তরে। মে দিবস ওদের কথা বলে, ওদের কথা ভাবায় তাই স্বাভাবিক ভাবেই ওদের নিরাপদে ঘরে ফেরানোর দাবিতে, প্রত্যেকের রেশনের দাবিতে, লকডাউনকালে মজুরি বন্ধ না করা ও বিশেষ ভাতা দেওয়ার দাবিতে এবং লকডাউনের ক্ষতি পোষাতে ওদের ঘাড়ে দৈনিক ১২ ঘণ্টা কাজের বোঝা না চাপানোর দাবিতে গ্রাম, শহর সোচ্চার হল ১ মে ২০২০।

bainchi

 

হুগলী জেলার গ্রামীণ এলাকায় পাণ্ডুয়া ব্লকের

ইলছোবায় সকালে শহীদ স্মরণ হয়, পতাকা উত্তোলন করেন লোকাল কমিটির সদস্য রাম হাঁসদা, সাঁচিতারায় পার্টি ব্রাঞ্চ সম্পাদক দিবস মালিক পতাকা উত্তোলন করেন, বৈঁচির মুরলী কোল্ডস্টোরের কর্মসূচীতে রক্তপতাকা তোলেন বিনোদ আহির এবং কোঁচমালির রায়পাড়ায় পার্টির সঙ্গে প্রায় চল্লিশ বছর যুক্ত থাকা গরিব কৃষক নেত্রী লক্ষী রায়ের নেতৃত্বে শহীদ স্মরণ হয়। বৈঁচি পার্টি অফিসে মে দিবস শপথে পতাকা তোলেন ব্লক কমিটি সদস্য সরস্বতী তুড়ি ও হালদারদীঘিতে বর্ষীয়ান গরিব কৃষক নেতা মেঘনাথ সর্দার। বিকালে দ্বারবাসিনীতে শহীদ স্মরণে রক্তপতাকা তোলেন জেলা কমিটি সদস্যা শিপ্রা চ্যাটার্জী। বলাগড় ব্লকের গুপ্তিপাড়া ব্রাঞ্চ, ইছাপুর ও ইটাগড়েও মে দিবস উদযাপন করেন ক্ষেতমজুর ও গ্রামীণ শ্রমজীবি মানুষরা। সায়রা গ্রামে আদিবাসী অধিকার ও বিকাশ মঞ্চে সামিল নতুন সদস্যরা আন্তরিকতার সাথে শহীদ স্মরণ ও রক্তপতাকা উত্তোলন করেন। পোলবা-দাদপুর ব্লকের বালিটানায় আয়ারলা ও আদিবাসী মঞ্চের কমরেডরা পতাকা উত্তোলন ও শহীদ স্মরণ করেন।

dhe

 

ধনিয়াখালিতে আয়াররা, আর ওয়াই এ ও আদিবাসী মঞ্চের তরফ থেকে যথাযোগ্য মর্যাদার সাথে কমরেডরা লাল পতাকা উত্তোলন ও শহীদ স্মরণ করেন। হুগলী শিল্পাঞ্চলে ভদ্রেশ্বরে অ্যাঙ্গাস জুট মিলের গির্জা গেটের সামনে এআইসিসিটিইউ-র পক্ষ থেকে রক্তপতাকা উত্তোলন ও শহীদবেদীতে মাল্যদান হয়। চাঁপদানির কমরেডরাও নিজ নিজ বাড়িতে শহীদ স্মরণ করেন পরিবারের সদস্যদের সাথে। কোন্নগরের ১, ২ ও ৩ নং শাখা ও জয়ন্তনগর-বিধানপল্লী শাখায় এআইসিসিটিইউ-র নেতৃত্বে নির্মাণ শ্রমিকরা লাল ঝাণ্ডা উত্তোলন ও শহীদ স্মরণের সাথে করোনা আতঙ্ককে সাম্প্রদায়িকতার সুযোগ হিসাবে কাজে লাগানোর বিজেপির বিভিন্ন ধরনের অপচেষ্টাকে সরাসরি রাস্তাতেই মোকাবিলার হুঁশিয়ারি দেন। হিন্দমোটর ৪নং শাখার উদ্যোগে বিপিন ভিলা মোড়ে শহীদ বেদীতে রক্তপতাকা উত্তোলন ও মাল্যদান হয়। জেলার সমস্ত অঞ্চলেই মে দিবস স্মরণে সাধারণ সম্পাদকের লেখাটি পাঠ ও আলোচনা হয়।

রিপোর্ট - সৌরভ

bdn

পূর্ব বর্ধমান –

বর্তমান লকডাউন-এর পরিস্থিতির মধ্যেই শাসক কুল করোনার অজুহাত দেখিয়ে শ্রমিক এবং মেহনতি জনগণের জীবন-জীবিকার এবং শ্রমের উপর নামিয়ে এনেছেন আক্রমন তখন এবারের মে দিবস উদযাপনের ও গুরুত্ব ও বৈশিষ্ট্য আলাদা মাত্রা যোগ করেছে।নতুন নতুন দাবি ও সামনে চলে আসছে। শাসক কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের অপরিকল্পিত হঠাৎই গরিব মানুষের বিরুদ্ধে চক্রান্তমুলক ভাবে লকডাউন ঘোষণার ফলে ব্যাপক গরিব মেহনতি মানুষ অসহায় অবস্থার মধ্যে পড়ে। খাদ্য মজুরি চিকিৎসার অভাবের ফলে চরম বিপদের সম্মুখীন হন। বিশেষ করে যারা দৈনিক মজুরি বা আয়ের উপর নির্ভর করেই সংসার চালান ।লক্ষ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিকদের দুরবস্থার মধ্যে ফেলে দেওয়া হয়েছে।কাজ বন্ধ মজুরি নেই খাদ্য নেই থাকার জন্য আস্তানা নেই। রাস্তায় থাকতে চাইলেও পুলিশী অত্যাচার মোট কথায় মরনোন্মুখ অবস্থার পথে দাঁড় করিয়ে দেওয়া হল। আর রাষ্ট্র নায়করা ঘন ঘন টিভির সামনে দাঁড়িয়ে জাতির উদ্দেশ্যে আত্মত্যাগ ও কষ্ট স্বীকার করার বাণী বর্ষণ করতে থাকছেন। জয়ের গল্প শোনাচ্ছেন। হাত তালি বাজাচ্ছেন, বাজি ফাটাচ্ছেন, বাতি জ্বালাচ্ছে, গোমুত্র সেবনের অনুষ্ঠান করাচ্ছেন। এই পরিস্থিতির উপর দাঁড়িয়ে পুর্ব বর্ধমান জেলায় গত ১২ এপ্রিল সিপিআই(এম-এল) লিবারেশন-এর কেন্দ্রীয় কমিটির ডাকা বিক্ষোভ কর্মসূচী, ১৮-১৯ এপ্রিল এআইসিসিটিইউ-র ডাকা অনশন বিক্ষোভ, ২৩ এপ্রিল সারা ভারত প্রগতিশীল মহিলা সমিতির ডাকা অনশন আন্দোলন, ২২ এপ্রিল সিপিআই(এম-এল)-এর ৫১তম প্রতিষ্ঠা দিবসও কমরেড লেনিনের ১৫০তম জন্মদিবস, ২৭ এপ্রিল এআইকেএম ওআয়ারলা ডাকা বিক্ষোভ অবস্থান কর্মসূচী সমস্ত ক্ষেত্রেই ভাল সাড়া পাওয়া যায়।

এই সমস্ত কর্মসূচির মধ্যে দিয়ে যে দাবি গুলো উঠে আসছে তাহল –

১৷ রেশন কার্ড নেই এমন পরিবার সহ সমস্ত গরিব পরিবারের জন্য বিনামুল্যে পর্যাপ্ত রেশন দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে ।
২৷ প্রতিটি গরিব পরিবার পিছু ১০হাজার টাকার করোনা ভাতা দিতে হবে ।
৩৷ সমস্ত পরিযায়ী শ্রমিকদের সরকারী খরচে ঘরে ফেরানোর ব্যবস্থা করতে হবে ।
৪৷ আট ঘণ্টার শ্রম দিবস আইন সুরক্ষিত রাখতে হবে ।
৫৷ ব্লকে ব্লকে করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে ।
৬৷ সাম্প্রদায়িক হিংসা, বিভেদ ও ঘৃণা ছড়ানোর বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে ।
৭৷ সমস্ত গ্রামীণ শ্রমিকদের সামাজিক কল্যাণ পরিষদে নথিভুক্ত করতে হবে ।

শেষ বিচারে ক্ষুধার বিরুদ্ধে লড়াই এবং করোনার বিরুদ্ধে লড়াইকে এগিয়ে নিয়ে চলুন। তাই এবারের মে দিবস উদযাপনের মধ্যে দিয়েও এই সমস্ত দাবিগুলো সমদান করার আওয়াজ ধ্বনিত হয়। জেলার ১০টা জায়গায় মে দিবস উদযাপনের করা হয়। বর্ধমান সদর ২নং ব্লক-এর করন্দা গ্রামের কমরেড সুকুমার সোমের নেতৃত্বে গ্রামের কমরেডরা অংশ গ্রহণ করেন। শক্তিগড়ে কমরেড ঠাকুর-দার নেতৃত্বে মে দিবস উদযাপন করা হয়।

mant

 

বর্ধমান সদর ১নং ব্লকের কামারকিতা গ্রামের কমরেড সমীর হাজরার নেতৃত্বে মে দিবস পালিত হয়। বর্ধমান শহরে কমরেড শ্রীকান্ত রানা ও কমরেড কুনাল বক্সীর নেতৃত্বে মে দিবস উদযাপিত হয়। মেমারী ১নং ব্লকের নিমো অফিসে কমরেড সাধন কর্মকারের নেতৃত্বে মে দিবস উদযাপন করার ব্যবস্থা করা হয়। কালনা ২নং ব্লক এর অকালপোষ অঞ্চলের আগ্রাদহ গ্রামে কমরেড রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে মে দিবস উদযাপন সংগঠিত করা হয়। মন্তেশ্বর ব্লকের কুলুট গ্রামের অফিসে কমরেড আনসারুল আমন মন্ডলের নেতৃত্বে মে দিবস পালন করা হয়। নাদনঘাট থানার ইসলাম পুর গ্রামে কমরেড জিয়াদুল সেখের নেতৃত্বে মে দিবস পালিত হল।

pbs

 

পুর্বস্থলী ২নং ব্লকের ফলেয়া অফিসে কমরেড শিবু সাঁতরা ও কমরেড সমীর বসাকের নেতৃত্বে মে দিবস উদযাপন করা হয়। কাটোয়া থানার সাহাপুর গ্রামে কমরেড স্বপন মণ্ডল-এর নেতৃত্বে মে দিবস পালিত হয়।প্রায় সমস্ত ক্ষেত্রেই পতাকা উত্তোলন ও শহীদ বেদীতে মাল্যদান ও নিরবতা পালন করা হয়। উপরোক্ত দাবি তুলে শ্লোগান দেওয়া হয়েছিল এবং আন্তর্জাতিক মে দিবস জিন্দাবাদ পুঁজিবাদের বিরুদ্ধে সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে শ্লোগান উঠে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সাধারণ সম্পাদক কমরেড দীপঙ্কর ভট্টাচার্য-এর লেখা পড়া হয়। আয়ারলা-র ঘোষণা অনুযায়ী অনেক ক্ষেত্রেই মাথায় লাল পেট্টি বাঁধা হয়।

rail

গান এন্ড শেল ফ্যাক্টরী ওয়ার্কার্স ইউনিয়নর মে দিবস উদযাপন

১ মে, আন্তর্যাতিক শ্রমিক দিবস। বিশ্বের শ্রমিক শ্রেণী এবারের মে দিবস এক সংকটময় পরিস্থিতিতে অভিনব ভাবে পালিত হল। সাধারণ শ্রমিকের জমায়েতের মাধ্যমে চিরচরীত মে দিবস উদযাপনের বিপরীতে গিয়ে কোথাও বাড়িতে থেকে, কোথাও খুব ছোট্ট জমায়েতের মধ্য দিয়ে লকডাউনের নিয়ম বিধি মেনে এবারের মে দিবস পালিত হল। সাধরণ শ্রমিকদের এক বড় অংশ এবারের উদযাপনে শামিল হতে পারল না। শ্রমিকদের সবথে বড় অংশই আজ গভীর সংকটে নিম্মজিত। মে দিবসের দিশাই এই শংকট মুক্তির একমাত্র পথ। গান এন্ড শেল ফ্যাক্টরি ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন নিজ নিজ বাড়িতে থেকে আন্তর্যতিক শ্রমিক দিবস পালন করল। ঘটমান বর্তমানের পাতা ওলটালে তার পাতায় পাতায় দেখা যায় মে দিবসের প্রাসঙ্গিকতা আজও অমলিন ।

নতুন মারণ অস্ত্র করোনা কোভিদ-১৯ বিশ্ববাসীকে আতঙ্কগ্রত করে তুলেছে। সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শ্রমিক শ্রেণী। কাজ হারানো, বেতন হ্রাস, কাজের সময় বৃদ্ধি এসবের থেকেও বড় সংকট অস্তিত্বের। কর্পোরেট নিজের সংকটা থেকে রেহাই পেতে সরকারের থেকে আয়কর ছাড়, ঋণ মুকুব ইত্যাদির সুযোগ গ্রহণ করছে। এই সুযোগে কর্মী ছাঁটাই করে কাজের সময় বৃদ্ধি মাধ্যমে উৎপাদন ঠিক রেখে মুনাফা বাড়িয়ে নিচ্ছে। সরকার ও শ্রম আইন সংশোধনের মাধ্যমে কাজের সময় ৮ থেকে ১২ ঘণ্টা করতে চাইছে। ইতিমধ্যে গুজরাট, রাজস্থান সহ কয়েকটি সরকার শ্রম আইন পরিবর্তন করে দৈনিক কাজের সময় ১২ ঘণ্টা করে নিয়েছে। সংবিধানের ৫নং ধারা প্রয়োগ করে এটা করা হয়েছে বলা হচ্ছে। যদিও ঐ ধারায় আজকের মতো অবস্থার কথা বলা হয়নি, বলা হয়েছে দেশ বিপন্ন, সেটা বহিঃশত্রুর আক্রমন, গৃহযুদ্ধ ইত্যাদি পরিস্থতির কথা বলা হয়েছে।

গান এন্ড শেল ফ্যক্টরি সহ প্রতিরক্ষা শিল্পের শ্রমিকরাও এই সংকটের থেকে বাইরে নয়। প্রতিরক্ষা শিল্পকে করপোরেটদের কাছে বেচে দেওয়ার সরকারি চক্রান্তের বিরুদ্ধে এখানকার শ্রমিকরা কয়েক বছর ধরে লাগতার লড়াই আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। দু-দফায় প্রতিরক্ষা শিল্পে আটদিনের ধর্মঘট সফল করেছে। ২২০ বছর ধরে দেশের সামরিক প্রয়োজনে দক্ষতার সঙ্গে উন্নতমানের সমরাস্ত্র সরবরাহ করার পরেও সরকার প্রতিরক্ষা কারখানায় উৎপন্ন পণ্যের মান ও দামের দোহাই দিয়ে এই ক্ষেত্রকে কর্পোরেটদের হাতে তুলে দিতে চায় ।

করোনা কোভিদ-১৯ ভাইরাস আক্রমনের ফলে বিশ্বের সঙ্গে আমাদের দেশেরও যখন টাল মাটাল অবস্থা প্রতিরক্ষা শ্রমিকরা কিন্তু বসে নেই। লকডাউনে অস্ত্রের উৎপাদন যখন বন্ধ, কলকারখানা, অফিস কাচারি বন্ধ, সবাই যখন নিভৃতবাসে, প্রতিরক্ষা শ্রমিকরা তখন ব্যাস্ত করোনা যুদ্ধের সৈনিকদের জন্য সরঞ্জাম তৈরিতে । প্রতিরক্ষা কারখানায় আপাতকালীন পরিস্থিতিতে তৈরি হচ্ছে এই চিকিতসায় উপযোগী ভেন্টিলেটর, পিপিই , ফেসশিল, ওটি ড্রেস, ডিপোজেবল গাউন, বিভিন্ন ধরনের মাস্ক, স্যনিটাইজার ইত্যাদি। সারাদেশে দশটি প্রতিরক্ষা হাসপাতাল কে কোভিদ আসোলেশন হাসপাতাল হিসাবে চিহ্নত করা হয়েছে ।

গান এন্ড শেল ফ্যাক্টরি হাসপাতাল কাশীপুর ওএমএসএফ হাসপাতাল ইছাপুর-এর মধ্যে পড়ে। প্রতিরক্ষা কারখানায় তৈরি এই সব চিকিৎসা সামগ্রী দেশীয় ও বিশ্বমান অনুযায়ী স্বীকৃত। আর দাম যে কোনো ব্র্যান্ডের থেকে অনেক কম ।

সরকারীভাবে ও বিভন্ন মিডিয়াতে কর্পোরেটের লেজুড় বৃত্তিকারী ব্যাক্তি বর্গের দ্বারা যখন সরকারী প্রতিষ্ঠান গুলোর বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের মধ্যে বিরূপ ধারণা তৈরির নিরন্তর প্রয়াস চলছিল। করোনার আক্রমণে সাধারণ মানুষের চোখের সামনে থেকে কালো পর্দাটা সরে গেল। এমন কি যারা এতদিন সরকারী প্রতিষ্ঠানের  বিরুদ্ধে একটা কথা না বলে সারাদিনে এক গ্লাস জলও খেত না তারাও এখন সরকারী প্রতিষ্ঠানের গুণগান করছে কেউ আড়ালে, কেউ একটু অন্য ভাবে।

লড়াইটা সব সময় শ্রমিকরাই করে। এই প্রতিকুল পরিস্থিতির মধ্যে জিএসএফ ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন নেতৃত্ব বাড়িতে থেকে এবারের আন্তর্যাতিক শ্রমিক দিবস পালন করল। শ্রমিক সহ সমস্ত সাধারণ মানুষের ওপর করোন ও কর্পোরেটের দ্বারা নেমে আসা আক্রমণ গুলোকে প্রতিহত করার জন্য প্লাকার্ড-এর মাধ্যমে গণমাধ্যমে প্রচার করা হয়।

ক) ক্ষুধার্ত মানুষের খাবারের ব্যাবস্থা, করোনা ও দারিদ্রকে পরাস্ত করা
খ) লকডাউন পর্যায়ে অসংগঠিত, কৃষি ও গ্রামীণ শ্রমিকদের আগামী ছ-মাস প্রতি মাসে ১০০০০ টাকা করে দিতে হবে ।
গ) কাজের সময় বৃদ্ধি করে ৮ থেকে ১২ ঘণ্টা করা চলবে না।
ঘ) শ্রমিক বিরোধী কোড বাতিল কর।
ঙ) করোনার সঙ্গে সাম্প্রদায়িকতাকে মেশানো চলবে না।
চ) সকলের জীবন ও জীবিকার সুরক্ষা দিতে হবে।

মে দিবসের প্রাসঙ্গিকতা আগে যেমন ছিল এখনও আছে এবং আগামী দিনেও থাকবে। দুনিয়ার শ্রমজীবী মানুষ এক হও।

খণ্ড-27