ডঃ মেহের ছিলেন একইসাথে বিজ্ঞানের সাধক ও গণ আন্দোলনের সংগঠক

পশ্চিমবঙ্গে গণ আন্দোলনের ইতিহাসে এত বড় মাপের বিজ্ঞানী কখনও পথে নামেননি। তাঁর সঙ্গে খুব বেশি ঘনিষ্ঠতা না থাকলেও তাঁর সব খবরাখবর রাখতাম – বক্তা আরএসপি-র কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মনোজ ভট্টাচার্য। এআইপিএফ আয়োজিত ‘প্রয়াত মেহের ইঞ্জিনিয়ার ও নির্বাচনোত্তর পরিস্থিতি’ শীর্ষক এক স্মরণসভায় বক্তব্য রাখছিলেন নানা সংগঠনের প্রতিনিধিরা শিয়ালদহ সংলগ্ন ডেন্টাল কলেজের পাশে জর্জ ভবনে। গত ২৮ মে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায়। সপ্তদশ নির্বাচনোত্তর পরিস্থিতিতেও ডঃ মেহের ইঞ্জিনিয়ার পুনরায় রাস্তার লড়াইয়ে নামতেন ও আমাদের লড়াইয়ে নামতে প্রেরণা যোগাতেন বলেও বক্তারা জানান।

এদিনে অন্যান্য বক্তাদের মধ্যে ছিলেন আরেক রকম পত্রিকার সম্পাদক অধ্যাপক শুভনীল চৌধুরী, অধ্যাপক রতন খাসনবিশ, অশোক মুখোপাধ্যায়, তুষার চক্রবর্তী, অম্লান ভট্টাচার্য, রূপা খান চক্রবর্তী, অধ্যাপক শুভাশীষ মুখোপাধ্যায়, ডঃ মেহের ইঞ্জিনিয়ারের প্রতিবেশী মুকেশ পারেখ, বিজ্ঞানী পার্থ সারথী রায়, বন্দীমুক্তি আন্দোলনের ছোটন দাস প্রমুখ।

অধ্যাপক খাসনবিশ জানান ডঃ মেহের ইঞ্জিনিয়ারের সঙ্গে তাঁর পরিচয় আরও আগে হলে তাঁর সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠ হতে পারতেন। যেটুকু পরিচয় ঘটেছে তা সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম আন্দোলন পর্বে। তখনই তিনি দেখেছেন তাঁর যে কোনো কাজের প্রতি নিষ্ঠা ও আন্দোলনের প্রতি কমিটমেন্ট। শুভনীল চৌধুরী জানান তাঁর সঙ্গে ডঃ মেহের ইঞ্জিনিয়ারের পরিচয় না থাকলেও তাঁর সব খবর রাখতেন। শুভনীল জানান নির্বাচনোত্তর পরিস্থিতিতে কোনো একটি দলকে, অর্থাত্ সিপিআই(এম)-কে দোষারোপ না করে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ক্ষুদ্র বৃহৎ সব বাম দলের জোটবদ্ধ হয়ে কাজ করা আজ সময়ের দাবি। কারণ নিরঙ্কুশ গরিষ্ঠতা নিয়ে যে দল কেন্দ্রে ক্ষমতা দখল করেছে তার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ রাস্তার লড়াই-ই একমাত্র পথের সন্ধান দিতে পারে বলেও তিনি জানান। অধ্যাপক শুভাশীষ মুখোপাধ্যায় ডঃ মেহের ইঞ্জিনিয়ারের সঙ্গে তাঁর নিবিড় যোগাযোগের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, এত বড় মনের মানুষ তিনি কম দেখেছেন। বোস ইনস্টিটিউটের ডিরেক্টর থাকাকালীন ছাত্র, শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী থেকে সাফাইকর্মীকে সমান মর্যাদায় দেখতেন বলেও তিনি জানান। বিজ্ঞানী পার্থ সারথী রায় ডঃ ইঞ্জিনিয়ারের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে বলেন যে, বহু গণ আন্দোলনে তাঁকে কাছ থেকে দেখেছেন এবং একই সঙ্গে আন্দোলনের সাথী হয়েছেন।

এদিনের সভা পরিচালনা করেন এআইপিএফ-এর তরফে তুষার চক্রবর্তী, অমলেন্দু ভূষণ চৌধুরী ও অজয় দত্ত। শোক প্রস্তাব পাঠ করেন শ্রীকান্ত লাহা। অনুষ্ঠানের শুরুতে গণসংঙ্গীত গেয়ে শোনান বাবুনি মজুমদার ও নীতীশ রায়। অনুষ্ঠান শেষে ডঃ মেহের ইঞ্জিনিয়ারের উপর স্লাইড শো করে দেখান শঙ্খ দেব।

খণ্ড-26
সংখ্যা-15