বিপন্ন মানবাধিকার
Endangered human rights

সুপ্রিম কোর্ট যখন প্রস্তাব করছে যে, আদালতগুলোতে দলিত, পশ্চাদপদ, সংখ্যালঘু, নারীদের মধ্যে থেকে বেশি সংখ্যায় বিচারপতি নিয়োগ করতে হবে, ঠিক সে সময় প্রান্তিক ও বঞ্চিত এই গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে থেকে একজনকে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান করার প্রস্তাবকে খারিজ করা হল। এই প্রস্তাবের পিছনে যুক্তি ছিল – এই সম্প্রদায় ও গোষ্ঠীগুলোর মানুষজনই সবচেয়ে বেশি রাষ্ট্রীয় নিপীড়নের শিকার হন, আর তাই এদের মধ্যে থেকে কাউকে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান করা হলে তিনি তাদের প্রতি ন্যায়বিচার প্রদানে আন্তরিক হবেন। কিন্তু যারা ঐ পদে নিয়োগের সুপারিশ করে থাকে সেই উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি সুপারিশ করল সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিতর্কিত বিচারপতি অরুণ মিশ্রর নাম এবং রাষ্ট্রপতি প্রত্যাশিতভাবেই জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান পদে তাঁকেই নিয়োগ করলেন। উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ছাড়াও রয়েছেন অমিত শাহ, রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান হরিবংশ, লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা ও রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খাড়্গে। বঞ্চিত ও নিপীড়িত গোষ্ঠীগুলোর কাউকে মানবাধিকার কমিশনের প্রধান করার মল্লিকার্জুন খাড়্গের প্রস্তাব নরেন্দ্র মোদী ও তাঁর ঘনিষ্ঠরা সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে প্রত্যাখ্যান করেন, যদিও সেই প্রত্যাখ্যানের পিছনে কোনো যুক্তি তাঁরা দেননি।

১৯৯৩ সালে তৈরি হওয়া মানবাধিকার আইনে বলা ছিল, সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত কোনো প্রধান বিচারপতিই জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান হবেন। কিন্তু ২০১৯ সালের জুলাই মাসে ঐ আইন সংশোধন করে সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত কোনো প্রধান বিচারপতি ছাড়াও অবসর নেওয়া অন্য যে কোনো বিচারপতিরও জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান হতে পারার সংস্থান করা হয়। আজ পিছন ফিরে তাকালে এই সন্দেহের উদ্রেক হয় যে, অরুণ মিশ্রকে পুরস্কৃত করার জন্যই হয়তবা আইনের ঐ সংশোধন করা হয়েছিল।

অরুণ মিশ্র জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান হওয়ায় তাঁর নিয়োগের বিরোধিতা করে বিভিন্ন মহল থেকে  তীব্র প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে। এর মূল কারণ, তিনি শাসক দল ঘনিষ্ঠ বলে সুবিদিত এবং সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি থাকাকালে যে সমস্ত রায় তিনি দিয়েছেন, ব্যাপক সংখ্যাধিক ক্ষেত্রেই সেগুলো সরকারের পক্ষে গেছে এবং মানবাধিকারের প্রতি কোনো সহমর্মিতা ও দায়বদ্ধতা তাঁর রায় থেকে বেরিয়ে আসেনি। প্রথমেই উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ২০ জানুয়ারী ২৪টা দেশের বিচারপতিদের উপস্থিতিতে তিনি মন্তব্য করেন, নরেন্দ্র মোদী হলেন “বহুমুখী প্রতিভাসম্পন্ন” এবং তিনি “এমন ব্যক্তি যিনি বিশ্বের কথা মাথায় রেখে দেশের জন্য কাজ করেন।” নরেন্দ্র মোদীর প্রশংসায় যিনি এমন গদগদ হতে পারেন, মানবাধিকার লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে সেই মোদী পরিচালিত সরকারের বিরুদ্ধে কোনো অবস্থান নেওয়া তাঁর পক্ষে কতটা সম্ভব হবে? তাঁর এই মন্তব্যর পরিপ্রেক্ষিতে পিইউসিএল-এর সভাপতি কবিতা শ্রীবাস্তবের নেতৃত্বে ৬৭ জন মানবাধিকার কর্মীর দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতেই তাঁর প্রশংসা করে যিনি অনুচিত ও অসংগত মন্তব্য করতে পারেন, এমন ব্যক্তি নির্ভয়ে বা পক্ষপাতিত্ব না দেখিয়ে সরকারের লঙ্ঘন করা জনগণের মানবাধিকারকে রক্ষা করবেন, এই কথা জনগণ বিশ্বাস করবেন কি করে?”

অরুণ মিশ্রর দেওয়া কয়েকটা রায়ের দিকে তাকানো যাক। সাহারা-বিড়লা দুর্নীতি মামলায় আয়কর দপ্তর ও সিবিআই আদিত্য বিড়লা গোষ্ঠীর ব্যবসা সংক্রান্ত কিছু নথি বাজেয়াপ্ত করে এবং সেগুলোতে দেখা যায়, ঐ গোষ্ঠী গুজরাটের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ৯ দফায় ৪০ কোটি টাকা দিয়েছে। কিন্তু অরুণ মিশ্রর বেঞ্চ রায় দেয় যে, বাজেয়াপ্ত করা বিচ্ছিন্ন কিছু কাগজকে প্রামাণ্য নথি বলে গণ্য করা যাবে না। এইভাবে দুর্নীতির অভিযোগ থেকে নরেন্দ্র মোদী রেহাই পেয়ে যান। গুজরাটের আইপিএস অফিসার সঞ্জীব ভাট ২০০২’র গুজরাট গণহত্যা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে একটা হলফনামা জমা দেন যাতে তিনি বলেন, গোধরা কাণ্ডের পর মোদীর ডাকা একটা বৈঠকে তিনি উপস্থিত ছিলেন এবং মোদী ঐ বৈঠকে গোধরা পরবর্তী পরিস্থিতিতে হিন্দুদের ক্রোধ প্রকাশ করার পথে কোনো বাধা না দেওয়ার নির্দেশ দেন। সেই মামলায় অরুণ মিশ্র সঞ্জীব ভাটের হলফনামায় বিধৃত বক্তব্যকে খারিজ করে দেন যারফলে দাঙ্গায় ইন্ধন জোগানোর অভিযোগ থেকে নরেন্দ্র মোদী অব্যাহতি পান। গুজরাটের প্রাক্তন মন্ত্রী হরেন পাণ্ড্য হত্যা মামলাতেও যে রায় তিনি দেন তাতে নরেন্দ্র মোদীর সুবিধা হয়। ঐ হত্যা একটা রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র ছিল না এবং মোদী-অমিত শাহ ঘনিষ্ঠ পুলিশ অফিসার বানজারা ঐ হত্যার নির্দেশ দেননি – তাঁর দেওয়া রায় এই ব্যাপারটা প্রতিষ্ঠিত করতে সহায়তা করে। ভিমা কোরেগাঁও মামলায় নাগরিক আন্দোলনের কর্মী আনন্দ তেলতুম্বডে ও গৌতম নভলখার বিরুদ্ধে ইউএপিএ আইনে অভিযোগ দায়ের হয়। তাঁদের আগাম জামিনের আবেদন খারিজ করে অরুণ মিশ্র তাঁদের আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন। এই রায়ের বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষার মঞ্চ ক্যাম্পেন এগেনস্ট স্টেট রিপ্রেসন তখন বলে, “জামিনের আবেদন নাকচ করা এবং অতিমারীর মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ ভারতীয় বিচার ব্যবস্থার এই চরিত্রকেই দেখিয়ে দিল যে, তারা ব্রাহ্মণ্যবাদী হিন্দুত্ব ফ্যাসিস্ত রাষ্ট্রের একান্ত অনুগত।” মানবাধিকারের প্রতি তিনি অঙ্গীকারবদ্ধ বলে প্রতিপন্ন হওয়ার চেয়ে তার বিপরীতটাই এই রায়ে প্রতিষ্ঠিত হয়। জঙ্গলের জমিতে দীর্ঘদিন ধরে বসবাসকারী উপজাতিদের সেখান থেকে উচ্ছেদের মামলায় অরুণ মিশ্রর বেঞ্চ উপজাতিদের ‘বেআইনি বসবাসকারী’ ও ‘জবরদখলকারী’ বলে অভিহিত করে বনজমির প্রতি উপজাতিদের অধিকারকে খারিজ করেন এবং সরকারের বনজমি দখলের সমর্থনে রায় দেন। তাঁর ঐ রায়ে বনজমিতে বসবাস করা ২০ লক্ষ উপজাতি পরিবারের মাথার ওপর উচ্ছেদের খাঁড়া ঝোলে। এই রায় নিয়ে বিপুল সমালোচনা ও আলোড়ন হলে পরে ঐ রায়ে স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়।

সুপ্রিম কোর্টের চার বরিষ্ঠ বিচারপতি ২০১৮ সালের ১২ জানুয়ারী দেশের সর্বোচ্চ আদালতের কাজকর্মের ধারার বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে যে সাংবাদিক সম্মেলন করেন এবং প্রধান বিচারপতিকে লেখা তাঁদের চিঠির প্রতিলপি সাংবাদিকদের হাতে তুলে দেন, তারও কেন্দ্রে ছিলেন অরুণ মিশ্র। তৎকালীন প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র নিজের ক্ষমতা অপপ্রয়োগ করে রাজনৈতিকভাবে স্পর্শকাতর মামলাগুলো অরুণ মিশ্রর বেঞ্চে পাঠাতেন যাতে নিরপেক্ষ বিচারের চেয়ে অভিপ্রেত রায় প্রদানই লক্ষ্য হত। এবং মামলা অরুণ মিশ্রর বেঞ্চে নির্দিষ্ট হলে রায় তাদের অনুকূলে আসবে বলে সরকারও আশা করত। সোহরাবুদ্দিন সেখ হত্যা মামলায় অমিত শাহর জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছিল এবং সেই মামলা শোনার সময় রহস্যজনকভাবে মৃত্যু হয়েছিল বিচারপতি ব্রিজগোপাল লোয়ার। এই লোয়া মৃত্যু মামলায় তদন্তের নির্দেশ দেওয়ার আবেদন জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা হয় এবং রাজনৈতিক দিক থেকে স্পর্শকাতর এই মামলাও প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র নির্ধারিত করেন অরুণ মিশ্রর বেঞ্চে। এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েই চার বিচারপতির সাংবাদিক সম্মেলন।

কুখ্যাত প্রশান্ত ভূষণ টুইট মামলা শোনেন ও রায় দেন অরুণ মিশ্র। জনস্বার্থ নিয়ে লড়াই করার জন্য সুপরিচিত আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ সুপ্রিম কোর্টের সমালোচনা করে দুটো টুইট করেন। একটা টুইটে তিনি বলেন, “ভবিষ্যতে ঐতিহাসিকরা যখন পিছন ফিরে গত ছ’বছরের দিকে তাকিয়ে দেখবেন যে, আনুষ্ঠানিক জরুরি অবস্থা ঘোষণা ছাড়াই কিভাবে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করা হয়েছে, তাঁরা ঐ ধ্বংসকাণ্ডে সুপ্রিম কোর্টের এবং বিশেশভাবে শেষ চার প্রধান বিচারপতির ভূমিকার উল্লেখ করবেন”। উল্লেখ্য, ঐ চার প্রধান বিচারপতি হলেন জগদীশ সিং কেহর, দীপক মিশ্র, রঞ্জন গগৈ এবং শারদ অরবিন্দ বোবদে। আর দ্বিতীয় টুইটে তিনি বিজেপি নেতার ছেলের হার্লে ডেভিডসন মোটর বাইকে বসা শারদ অরবিন্দ বোবদের ছবি পোস্ট করে বলেন, তিনি এমন সময় বাইকে বসে আছেন যখন সুপ্রিম কোর্ট “ন্যায়বিচার পাওয়ার বুনিয়াদি অধিকার থেকে নাগরিকদের বঞ্চিত করছে”, কারণ, আদালত তখন লকডাউনের ধারায় রয়েছে। প্রশান্ত ভূষণের টুইটে আদালতের মর্যাদা হানি হয়েছে গণ্য করে সুপ্রিম কোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে প্রশান্ত ভূষণের বিরুদ্ধে মামলা শুরু করে। অরুণ মিশ্র শুনানির মধ্যে দিয়ে প্রশান্ত ভূষণকে নত করার, টুইটের জন্য অনুশোচনা প্রকাশ করে মার্জনা ভিক্ষার যথাসাধ্য চেষ্টা চালান। প্রশান্ত ভূষণ কিন্তু তাঁর টুইটের যথার্থতার প্রতি ও ক্ষমা না চাওয়ার প্রতি অবিচল থাকেন এবং অরুণ মিশ্রদের হতাশ করেন। অরুণ মিশ্রর নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ অবশেষে তাঁকে আদালত অবমাননায় দোষী সাব্যস্ত করে ১০০ পাতারও বেশি রায়ে ভূষণকে এক টাকা জরিমানা করেন! এই রায় দিয়ে অরুণ মিশ্র ভারতীয় বিচারধারার ইতিহাসে সবচেয়ে স্বেচ্ছাচারী ও উদ্ভট রায়গুলির অন্যতম স্রষ্টা হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবেন।

অরুণ মিশ্র সুপ্রিম কোর্ট থেকে অবসর গ্ৰহণ করেন ২০২০ সালের ২ সেপ্টেম্বর। সুপ্রিম কোর্টে ২০২০ সালের ৩১ আগস্ট শেষ যে রায় তিনি দেন, সেই মামলায় জড়িত ছিল আদানিদের বিদ্যুৎক্ষেত্রের একটা সংস্থা। সেই রায়ে আদানি গোষ্ঠীর ঐ সংস্থা ৮,০০০ কোটি টাকা লাভবান হয়। সংবাদে প্রকাশ, আদানি গোষ্ঠীর জড়িত থাকা ৭টা মামলার সবগুলোই ২০১৯’র জানুয়ারী থেকে শোনা হয় অরুণ মিশ্রর নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে এবং সবগুলোর রায়ই আদানিদের অনুকূলে যায়। সমাজমাধ্যমে কৌতুক করে জনৈক ব্যক্তি মন্তব্য করেছেন – মানবাধিকারকে ঊর্ধ্বে তুলে ধরার অসাধারণ রেকর্ড অরুণ মিশ্রর রয়েছে – অবশ্য সে অধিকার যদি আদানি ও আম্বানিদের হয়!

জাতীয় মানবাধিকার কমিশন যখন গঠন হয়, তার উদ্দেশ্য ছিল এটিকে একটি স্বশাসিত সংস্থা করে তোলা। সংস্থাটা হবে সরকারের প্রভাব থেকে মুক্ত এবং সে স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারবে। যে সমস্ত গোষ্ঠী বেশি সামাজিক বৈষম্য ও অসাম্যের শিকার, রাষ্ট্রীয় ও জাতপাতগত নিপীড়ন যাদের বেশি ভোগ করতে হয়, সেই সমস্ত অংশের প্রতিনিধিত্ব যেন এই সংস্থায় থাকে তা সুনিশ্চিত করাটাও মানবাধিকার প্রদানের অন্যতম শর্ত রূপে ভাবা হয়েছিল। রাষ্ট্রের স্বেচ্ছাচারিতার নাটের গুরুরা যদি মনে করেন যে, তাঁরা যাই করুন তারজন্য কোনো দণ্ড তাঁদের ভোগ করতে হবেনা – এই ধারণায় লাগাম পরানোর সংস্থা হিসাবেও মানবাধিকার কমিশনকে ভাবা হয়েছিল। কমিশনের দায়বদ্ধতাকে নির্দিষ্ট করা হয়েছিল জনগণের প্রতি, সরাকারের কাছে নয়। কিন্তু কালক্রমে রাষ্ট্রের স্বৈরাচারী প্রবণতা বেড়ে চলায় মানবাধিকার কমিশনকে এক অবহেলিত, নখদন্তহীন ঠুঁটো জগন্নাথ প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা হয়েছে। সিবিআই, আরবিআই, ইডি, এনআইএ’র মতো মানবাধিকার কমিশনকেও সরকারের তাঁবেদার প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার উদগ্ৰ অভিপ্রায় থেকেই সরকার ঘনিষ্ঠ অরুণ মিশ্রকে মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান পদে বসানো হয়েছে। দ্য ক্যাম্পেন ফর জুডিসিয়াল অ্যাকাউন্টাবিলিটি এণ্ড জুডিসিয়াল রিফর্মস (সিজেএআর), যাতে যুক্ত আছেন প্রশান্ত ভূষণ, অরুন্ধতি রায়, মনোজ মিত্তা’র মতো সমাজ আন্দোলনের কর্মীরা, এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন – মদন লোকুর, দীপক গুপ্ত, কুরিয়েন যোশেফ এবং আরও কিছু বিচারপতি সুপ্রিম কোর্ট থেকে অবসর গ্ৰহণ করেছেন, মানবাধিকারকে ঊর্ধ্বে তুলে ধরায় যাঁদের অসামান্য অবদান রয়েছে। সদিচ্ছা থাকলে এঁদের মধ্যে থেকে যে কোনো একজনকে মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান হিসাবে বেছে নেওয়া যেত। কিন্তু তাদের ধামা ধরতে পারবে এমন একজনকেই নরেন্দ্র মোদীরা বেছে নিয়েছেন। সিজেএআর-এর বিবৃতিতে যথার্থভাবেই বলা হয়েছে, “তাঁর (অরুণ মিশ্রর) নিয়োগ মানবাধিকারের সুরক্ষা ও তাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারটায় মৃত্যুঘণ্টা বাজারই সংকেত দিচ্ছে, যে লক্ষ্যে ভারতে মানবাধিকার কমিশন গঠন করা হয়েছিল।”

খণ্ড-28
সংখ্যা-21