বিহারে জমি মাফিয়াদের বিরুদ্ধে দ্বারভাঙ্গায় বনধ্
bandh against land mafias

একই পরিবারের তিনজনকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারার জন্য ভূমি-মাফিয়াদের বিরুদ্ধে সিপিআই(এমএল) লিবারেশনের ডাকে ১৬ ফেব্রুয়ারি দ্বারভাঙ্গায় সর্বাত্মক বনধ্ হয়। প্রধান দাবি ছিল,

১) দ্বারভাঙ্গার পুলিশ সুপার এবং থানা ইনচার্জের বিরুদ্ধে ৩০২ ধারায় মামলা দায়ের করা।
২) পীড়িত পরিবারের প্রত্যেককে ক্ষতিপূরণ দেওয়া।
৩) ভূমি-মাফিয়া শিবকুমার ঝা’কে দ্রুত গ্রেফতার করতে হবে।
৪) আরেকটি ঘটনায় পুর্খোপট্টিতে ২ বালিকাকে ধর্ষণ এবং খুনের জন্য দোষীদের দ্রুত গ্রেফতার করতে হবে। সমস্ত বিরোধী দল এই বনধ্কে সর্বতোভাবে সমর্থন করে।

ঘটনার সুত্রপাত, ৯ ফেব্রুয়ারি চল্লিশ বছর ধরে বসবাসকারী রিতা ঝা’এর পরিবারের ওপর ভূমি-মাফিয়া শিবকুমার ঝা জমির বিবাদের জেরে পাশবিকভাবে আক্রমণ করে এবং ৮ মাসের গর্ভবতী পিঙ্কি ঝা ও তার ভাই সঞ্জয় ঝা’কে জীবন্ত পুড়িয়ে দেয়। প্রশাসনের নাকের ডগায় এসব ঘটে। দ্বারভাঙ্গা মহারাজার এই জমিতে বিগত ৪০ বছর ধরে বসবাসকারী রিতা ঝা মহারাজার পরিবারের সাথে চুক্তি অনুযায়ী বসবাস করছেন। কিন্তু ভূমি-মাফিয়া শিবকুমার ঝা জবরদস্তি তার নামে এই জমি নথিভুক্ত করে। বিবাদ পাটনা হাইকোর্ট অবধি গড়ায়। পীড়িতের পরিবার থানায় গেলে কোনও মামলা নথিভুক্ত করতে পুলিশ অস্বীকার করে। পরে একটি জেসিবি বুলডোজার দিয়ে ঐ বসতবাড়ি ভেঙে দিয়ে আগুন ধরানো হয়।

বাহাদুর ব্লকের পুর্খোপট্টিতে দুটি তরুণী পাশের গ্রামে ঘাস সংগ্রহ করতে গেলে তাদের ধর্ষণ করে হত্যা করা হয় এবং একটি গর্তে ফেলে দেওয়া হয়। পুলিশ কোন পদক্ষেপ করেনি। উল্টে প্রশাসন বলে ওরা জলে ডুবে মারা গেছে। এই ঘটনায় সিপিআই(এমএল) জনসভা করে ১৫ ফেব্রুয়ারি।

পরের দিন বনধে্ দ্বারভাঙ্গার ইনকাম ট্যাক্স চক্ অবরুদ্ধ থাকে প্রায় ৪ ঘন্টা, অন্যান্য দল এবং সমাজকর্মীরা অবরোধে অংশ নেন। জাতীয় সড়ক বহুক্ষণ অবরোধ করা হয়। এছাড়া লাহেরিয়াসরাই টাওয়ারে সম্পূর্ণ বনধ্ হয়। হায়াঘাট বাজারের রাস্তা, তারালাহি, বাহাদুরপুরের দ্বারভাঙ্গা-সমস্তিপুর রোড অবরুদ্ধ থাকে। বনধে্র ইস্যুতে সিপিআই(এমএল)-এর নেতৃত্ব বলেন, প্রধান অপরাধী কপিলেশ্বর সিং এখনো অধরা এবং দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছে। পুরো ঘটনার সাথে জড়িয়ে গেছে দ্বারভাঙ্গার পুলিশ সুপার। তাই দাবি তোলা হয়েছে দ্বারভাঙ্গার পুলিশ সুপার, থানা ইনচার্জ, সিটি ইন্সপেক্টর এবং কপিলেশ্বর সিং এদের সকলের নামে ৩০২ ধারায় মামলা রুজু করতে হবে।

পার্টি নেতৃত্ব আরও বলে, শিবকুমার ঝা’কে গ্রেপ্তার করা হয়নি কারণ তিনি বিজেপি-জেডিইউ সরকারের প্রভাবশালী মন্ত্রীদের নেকনজরে আছেন। পীড়িত পরিবারের প্রত্যেককে ২৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে এবং নীতীশ সরকারকে সতর্ক করেন যে শিবকুমার ঝা’এর বাড়ি বাজেয়াপ্ত করতে হবে নতুবা জনগণই তার বাড়ির দখল নেবে, এই দাবিও করে পার্টি নেতৃত্ব। নেতৃত্ব আরও বলে পুর্খোপট্টির দুজন বালিকার ধর্ষক ও হত্যাকারীদেরও এখনো গ্রেপ্তার করা হয়নি। দ্বারভাঙ্গার এসএসপি এই অপরাধে জড়িত আছেন। পুরো ঘটনার জন্য উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত করতে হবে। পার্টি বিধানসভার অন্দরে এই ঘটনাগুলির জন্য আওয়াজ ওঠাবে।

খণ্ড-29
সংখ্যা-9