খবরা-খবর
বন্যার বিপদ বাড়ছে, জানাচ্ছে সমীক্ষা
Flood risk

এ’বছর জুন মাসে বিজ্ঞান গবেষণার সর্বাগ্রগণ্য পত্রিকা ‘নেচার’এ প্রকাশিত একটি সমীক্ষা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বন্যাপ্লাবিত হওয়ার বিপদ সম্পর্কে তুলনামূলক আলোচনা করেছে। প্লাবনের সম্ভাব্য তীব্রতা এবং দারিদ্র্যের বাস্তব অবস্থা — এই দুই দিক একত্রে বিচার করে বিপদের ঝুঁকির মাত্রা নির্ণয় করা হয়েছে এই সমীক্ষায়। দেখা যাচ্ছে, পৃথিবীর ১৮১ কোটি জনসংখ্যা, অর্থাৎ বিশ্ব জনসংখ্যার ২৩ শতাংশ, উচ্চ ঝুঁকির মধ্যে আছে। এরমধ্যে ১২৪ কোটির অবস্থান দক্ষিণ ও পূর্ব এশিয়ায়। বিশ্বের বন্যাকবলিত জনসংখ্যার ৮৯ শতাংশ নিম্ন ও মধ্য আয়সম্পন্ন দেশগুলির বাসিন্দা। সর্বোচ্চ বিপদসীমায় থাকা মানুষের মধ্যে ১৭ কোটি মানুষ চরম দরিদ্র ক্যাটাগরির মধ্যে পড়ে। এদের প্রায় অর্ধেক অংশ সাহারা আফ্রিকা অঞ্চলের দেশবাসী।

মোট জনসংখ্যার নিরিখে ভারত ও চিনে সবচেয়ে বেশি মানুষ এই সর্বোচ্চ বিপদসীমায় আছে। যথাক্রমে ৩৯ কোটি ও ৩৯.৫ কোটি। এই হিসাবে শীর্ষে থাকা পাঁচটি দেশের বাকি তিনটি হল, বাংলাদেশ ৯.৪ কোটি, ইন্দোনেশিয়া ৭.৬ কোটি এবং পাকিস্তান ৭.২ কোটি মানুষ।

দু’টি দেশ আছে যাদের জনসংখ্যার অর্ধেকের বেশি সর্বোচ্চ ঝুঁকির মধ্যে আছে, নেদারল্যান্ডস ও বাংলাদেশ, যথাক্রমে ৫৯ শতাংশ ও ৫৮ শতাংশ। এই হিসাবে একদম শীর্ষে থাকা পাঁচটি দেশের বাকি তিনটি হল ভিয়েতনাম ৪৬ শতাংশ, মিশর ৪১ শতাংশ, মায়ানমার ৪০ শতাংশ। শীর্ষ ২০’র তালিকায় ইউরোপীয় দেশগুলির মধ্যে নেদারল্যান্ডস ছাড়া আর দু’টি দেশ আছে, অস্ট্রিয়া ২৯ শতাংশ ও আলবানিয়া ২৮ শতাংশ।

এইসব পূর্বাভাস বাস্তব হয়ে নেমে আসবে হয়তো আরও বেশ কিছু বছর পর। কিন্তু ইতিমধ্যেই কোথাও কোথাও তা স্বাভাবিক পরিঘটনা হয়ে উঠছে। ভারতে বন্যার বিপদ অনেকটা স্পষ্ট হয়ে উঠছে। এই বিপদ এই মুহূর্তে সবচেয়ে বড় আকারে সামনে চলে এসেছে পাকিস্তানে। সেখানে ২০১০ সালে ১৮ কোটি, গতবছর ১০ কোটি এবং এই বছরের চলতি বন্যায় ৩৩ কোটি মানুষ বন্যাবিধ্বস্ত। এ’বছর দেশটির এক তৃতীয়াংশ জলমগ্ন। বন্যা, খরা ও ঝড়ে ২০২১-২২ সালে বিশ্বজুড়ে আর্থিক ক্ষয়ক্ষতির মোট পরিমাণ ২০০১-২০২০ দুই দশকের গড় ক্ষতির পরিমাণের দু’গুণ হয়ে গেছে।

খণ্ড-29
সংখ্যা-41