খবরা-খবর
শ্রমজীবী মানুষের বিক্ষোভ ডেপুটেশন
working people

গ্রামে মাঠে কাজ নেই। অন্য কাজও সবার জুটছে না। অথচ গত প্রায় এক বছর ১০০ দিনের কাজ বন্ধ। কেন্দ্র-রাজ্য একে অপরের ঘাড়ে দায় ঠেলছে। যারা এক বছর আগে কাজ করেছিলেন, তারা তাদের টাকা এখনও পাননি। সামগ্রিকভাবে, মূল্যবৃদ্ধি আর বেকারত্বের এই বাজারে গরিব মানুষের বিরুদ্ধে এ যেন যুদ্ধ ঘোষণা। প্রতিবাদে সোচ্চার হলেন, বসিরহাট-১ ব্লকের গরিব মানুষ সারা ভারত কৃষি ও গ্রামীণ মজুর সমিতি এবং সারা ভারত কিষাণ মহাসভা। গত ৪ নভেম্বর ২০২২ স্থানীয় টাউন হল মাঠে সমাবেশিত হয়ে এক দৃপ্ত মিছিল শহরের রাস্তায় স্লোগান তুলল, “কেন্দ্র-রাজ্য বুঝি না — কাজ চাই, কাজ দাও; কাজ করেছি মজুরি দাও”, কৃষকের ফসল উৎপাদন খরচের দেড়গুণ গ্যারান্টি আইন করতে হবে, ভাগ ও লিজ চাষিদের সরকারী স্বীকৃতি ও সাহায্য দাও, ব্লকের খারাপ রাস্তা সংস্কার করো, সাম্প্রদায়িক উস্কানিদাতা-দুর্নীতিগ্রস্ত-সন্ত্রাস সৃষ্টিকারীদের শাস্তি দাও, বিজেপি সরকারের গরিব বিরোধী নীতি রুখে দাও প্রভৃতি।

মিছিল ব্লক দফতরে পৌঁছে শুরু হয় বিক্ষোভ সভা। দেবব্রত বিশ্বাস দাবিসমূহ ব্যাখ্যা করে বলেন, গরিব মানুষের সাথে এক চরম বিশ্বাসঘাতকতা করছে যেমন মোদী সরকার, তেমনি পঞ্চায়েত থেকে রাজ্যস্তর পর্যন্ত দুর্নীতিতে নিমজ্জিত রাজ্য সরকার আজ আর কোনও দায় নিচ্ছে না, বকেয়া মজুরি কেন্দ্র দিচ্ছে না বলে দায় সারছে। এছাড়াও, যেখানে রাজ্য সরকারের ঘোষিত অদক্ষ মজুরের ন্যুনতম মজুরি ৩২২ টাকা, সেখানে কেন ২২৩ টাকায় ১০০ দিনের কাজ করানো হচ্ছে?

এআইএআরএলএ জেলানেতা অজয় বসাক উপস্থিত বিক্ষোভকারীদের জোরদার আন্দোলনের প্রস্তুতি নেবার আহ্বান রাখেন। কাজ ও বকেয়া মজুরি দ্রুত না পেলে আগামীতে প্রশাসনিক দফতর ঘেরাও করার ডাক দেন।

সভা থেকে ৪ সদস্যের প্রতিনিধি দল — দেবব্রত বিশ্বাসের নেতৃত্বে নুর ইসলাম মোল্লা, রবিউল মোল্লা ও আবুল কালাম শেখ — দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি নিয়ে বিডিও’র নিকট ডেপুটেশন দিতে যান। এনআরইজিএ প্রকল্পে কাজ ও বকেয়া মজুরির দাবি ছাড়াও, সমস্ত ৬০ বছরের ঊর্ধ্বে মানুষকে বার্ধক্য ভাতা ও বিধবাদের বিধবা ভাতা দিতে হবে এবং কমপক্ষে ৩,০০০ টাকা করতে হবে, তফসিলি- আদিবাসী-ওবিসি’দের শংসাপত্রের হয়রানি বন্ধ, রাস্তা সংস্কার, আর্সেনিক মুক্ত পানীয় জল, কৃষকের ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য গ্যারান্টি আইন, কৃষিতে বিদ্যুতে ছাড় প্রভৃতি ১৩ দফা দাবি তুলে ধরা হয়। সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক স্থানীয় সমস্যা গলি দ্রুত সমাধানের এবং অন্যান্য দাবিগুলি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট পাঠানোর আশ্বাস দেন।

ডেপুটেশন-বিক্ষোভ সভা পরিচালনা করেন বাবুনি মজুমদার।

খণ্ড-29
সংখ্যা-43