ই-শ্রম — শ্রমিকদের সুযোগ সুবিধা ও বোর্ডকে বাতিল করার প্রকল্প
E-Labor

(এই প্রবন্ধটি প্রকাশিত হয় এআইসিসিটিইউ’র ফেব্রুয়ারি ২০২২ অনলাইন পত্রিকা ওয়ার্কার্স রেজিস্ট্যানস্’এ। লেখক উক্ত সংগঠনের সর্বভারতীয় সভাপতি ভি শংকর। অনুদিত এই লেখাটি এখানে প্রকাশ করা হল। — সম্পাদকমন্ডলী, দেশব্রতী)

২০২০’র প্রথম দিকে সম্পূর্ণ অপ্রস্তুত অবস্থায় মোদী সরকার গোটা দেশে যখন আচমকা লকডাউন ঘোষণা করল, তখন হাজারে হাজারে অসহায় দিগভ্রান্ত পরিযায়ী শ্রমিকেরা কয়েকশো কিলোমিটার পথ উজিয়ে নিজ নিজ বাসভূমে ফিরে আসার এক মরিয়া প্রচেষ্টা করেন। সরকারের কাছে যখন এই সমস্ত শ্রমিকদের সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়, সরকার তখন বলে যে তাদের কাছে এব্যাপারে কোনোই তথ্য নেই। সরকারের এই নির্লিপ্তির বিরুদ্ধে দেশব্যাপী তীব্র ক্ষোভকে সামাল দিতে মোদী সরকার দেশের সমস্ত অসংগঠিত শ্রমিকদের নিয়ে এক তথ্যভান্ডার গড়ে তুলতে ই-শ্রম পোর্টাল তৈরি করার সিদ্ধান্ত নিল। এখন বোঝা যাচ্ছে, এই পোর্টাল তৈরি করে সমস্ত ধরনের কল্যাণ বোর্ডকে অবলুপ্ত করাটাই মোদী সরকারের আসল উদ্দেশ্য।

এখন পর্যন্ত ঘোষিত সুবিধা এটাই যে, ই-শ্রম পোর্টালে নথীভুক্ত অসংগঠিত শ্রমিকরা মৃত্যুকালে বা শারীরিকভাবে চিরদিনের জন্য অক্ষম হয়ে পড়লে ২ লক্ষ টাকা এবং আংশিক অঙ্গহানির জন্য ১ লক্ষ টাকার ক্ষতিপূরণ পাবেন। সরকারের বিভিন্ন মহল ও শ্রম মন্ত্রকের আধিকারিকগণ এই পোর্টাল সম্পর্কে হরেক ধরনের মিথ্যার বেসাতি নিয়ে হাজির হয়েছেন। যেমন, আমাদের শোনানো হচ্ছে এই ই-শ্রম পোর্টাল নাকি ‘কর্মসংস্থানের সুযোগ’ করে দেবে, “এই পোর্টালে নথীভুক্ত হলে অনেক ধরনের সুযোগ সুবিধা পাওয়ার সিংহদরজা খুলে যাবে” আর এর হাত ধরেই প্রবেশ করা যাবে মোদীর স্বপ্নের জগতে।

ই-শ্রম পোর্টাল ডাহা এক মিথ্যার জাল বুনেছে। বলা হচ্ছে, এই পোর্টালে নথীভুক্তদের নানা সামাজিক সুরক্ষার প্রকল্পগুলোর অধীনে নিয়ে আসা হবে। যেমন — রেশন ব্যবস্থা, আয়ুষ্মান ভারতের অধীনে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা — যা ইতিমধ্যেই কার্যকর রয়েছে। এটা প্রচার করা হচ্ছে, এই পোর্টাল নাকি কর্মসংস্থানের প্রকল্পগুলোকেও নিয়ন্ত্রণ করে, যেমন, নরেগা বা পিএমইজিপি (ব্যবসা বাণিজ্যে উৎসাহদানের জন্য যেটা রয়েছে)।

কেন্দ্রীয় শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রক থেকে প্রকাশিত পুস্তিকায় ই-শ্রমের আসল উদ্দেশ্য স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, সমস্ত ধরনের অসংগঠিত শ্রমিকদের তথ্য ভান্ডারই হয়ে উঠবে এই ই-শ্রম পোর্টাল। নির্মাণপরিযায়ী শ্রমিক থেকে শুরু করে গিগ ও প্ল্যাটফর্ম শ্রমিক, হকার, গৃহ সহায়িকা বা পরিচারিকা, কৃষি শ্রমিক, নরেগার সাথে যুক্ত শ্রমিক, আশা-অঙ্গনওয়াড়ি-মিড ডে মিল কর্মী — সকলেই এর আওতায় আসতে পারবেন। ইতিমধ্যে এই পোর্টাল তার পরিধি আরো প্রসারিত করে ১২৬টি পেশাকে এরমধ্যে নিয়ে এসেছে। এখনো পর্যন্ত আওতাভুক্ত হয়নি এমন অন্যান্য পেশাকেও এরমধ্যে নিয়ে আসা যাবে। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হল, নানান কল্যাণকর বোর্ডের কাছে ইতিমধ্যেই যে সমস্ত তথ্য গচ্ছিত রয়েছে, সেগুলো আবার সংগ্রহ করা হচ্ছে। এরথেকেই এটা স্পষ্ট যে, শুধুমাত্র আগেকার তথ্যই নয়, বোর্ডগুলোকেও অপ্রাসঙ্গিক করে ফেলা হল।

যেকোনও অসংগঠিত শ্রমিক, যার বয়স ১৬- ৫৯’র মধ্যে, যিনি পিএফ-ইএসআই বা সরকারের অন্য কোনও পেনশন প্রকল্পের আওতায় নেই, ই-শ্রম পোর্টালে নাম নথীভুক্ত করতে পারেন। যেকোনও গৃহশ্রম ভিত্তিক কর্মী, স্বনিযুক্ত, অথবা অসংগঠিত ক্ষেত্রে মজুরি প্রাপ্ত শ্রমিক এই পোর্টালে নথীভুক্ত হতে পারেন। ‘সংগঠিত ক্ষেত্রে’ কর্মরত শ্রমিক যার পিএফ-ইএসআই বা পেনশন নেই, তাকেও অসংগঠিত শ্রমিক হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা হচ্ছে। পোর্টালে ‘অসংগঠিত শ্রমিক’দের এই সংজ্ঞা নিয়োগকর্তাকে এক সুবর্ণ সুযোগ এনে দিল তার সংস্থায় কর্মরত কর্মীদের সামাজিক সুরক্ষার দায় থেকে ঝেড়ে ফেলতে। এমনকি কন্ট্রাক্ট শ্রমিকদেরও সমস্ত দায় থেকে নিজেদের হাত ধুয়ে ফেলতে ই-শ্রম পোর্টাল একটা রাস্তা বাৎলে দিল। এই পোর্টাল ঘোষণা করেছে, ক্লারা (কন্ট্রাক্ট লেবার রেগুলেশন অ্যান্ড অ্যাবোলিশন অ্যাক্ট, ১৯৭০) অধীনেই সে কাজ করছে, এমনকি ওই সমস্ত আইনের বাধ্যবাধকতা থেকে যেকোন সময়ে স্বাচ্ছন্দ্যে বেরিয়ে আসার সুযোগও রেখে দিয়েছে এই পোর্টাল। সে নিজের উদ্দেশ্যকেও গোপন রাখেনি। পোর্টাল জানিয়েছে, নিয়োগকর্তা সম্পর্কেকোন তথ্য সে সংগ্রহ করবে না, করবে শুধুমাত্র শ্রমিকদের। এই তথ্য ভান্ডার তৈরি করার পথেও রয়েছে অনেক অন্তরায়। নথীভুক্তির জন্য যেগুলো অবশ্য প্রয়োজন, তা হল আধার কার্ড, আধার কার্ডের সাথে মোবাইল ফোনের নম্বর লিঙ্ক করানো, আইএফএসসি কোড সহ সেভিংস ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট নম্বর। বেশিরভাগ অসংগঠিত শ্রমিকদের মোবাইল আধারের সাথে লিঙ্ক করা নেই। আর, এটাই নথীভুক্তির পথে সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে থাকছে। সরকার বায়োমেট্রিকস’এর মাধ্যমে নথীভুক্তির যে কথা বলছে, তার ক্ষেত্রেও ইতিমধ্যে এসেছে অনেক বদল, যা এই পর্যায়ে পোর্টালে আপডেট করা হয়নি। দ্বিতীয়ত, এই পোর্টাল জানিয়েছে, অসংগঠিত শ্রমিকদের জন্য যে সমস্ত সামাজিক সুরক্ষার প্রকল্পগুলো রয়েছে যা শ্রমমন্ত্রক সহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তর মাধ্যমে কার্যকরী হয়, সেই সমস্ত প্রকল্পগুলো এরপর থেকে ই-শ্রম পোর্টালের সাথে যুক্ত করে দেওয়া হবে। তাহলে এটাই দাঁড়াচ্ছে, এরপর থেকে ই-শ্রম হল একমাত্র কার্যকরী পোর্টাল যার মাধ্যমে সামাজিক সুরক্ষার সুযোগ সুবিধা অসংগঠিত শ্রমিকরা পাবেন, তাদের বোর্ড থাকুক বা না থাকুক। এর অর্থ হল, অন্যান্য সমস্ত বোর্ডগুলো এই প্রক্রিয়ায় অপ্রাসঙ্গিক হয়ে যাবে। শ্রমমন্ত্রক থেকে প্রকাশিত পুস্তিকায় বলা হয়েছে, ভবিষ্যতে এই পোর্টালের মাধ্যমেই সমস্ত সামাজিক সুরক্ষার সুযোগ সুবিধাগুলো শ্রমিকরা পাবেন — সেটা অতিমারি বা প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সময়ে সরকারের তরফ থেকে দেওয়া বিভিন্ন সাহায্য বা সুযোগ সুবিধাগুলোও।

তৃতীয়ত, কল্যাণ প্রকল্প এবং বোর্ডবা সামাজিক সুরক্ষা কোড কোথাও এটা উল্লেখ করেনি যে, বিভিন্ন কল্যাণ বোর্ডের হাতে যে কোটি কোটি টাকা গচ্ছিত রয়েছে, তার ভবিষ্যৎ কি হবে। বোঝাই যাচ্ছে এরপর বিভিন্ন বোর্ডের হাতে গচ্ছিত কোটি কোটি টাকা লুঠ হয়ে যাবে। পিএফ-ইএসআই’র কাছে যে বিপুল টাকা রয়েছে, তার উপরও থাবা বসানোর আশঙ্কা নানান মহল থেকে করা হচ্ছে। বোর্ডগুলোর হাতে জনগণের যে টাকা গচ্ছিত রয়েছে, সেই তহবিলকে বেসরকারি বিমা সংস্থার মাধ্যমে পরিচালিত করতে ‘ফান্ড ম্যানেজমেন্ট’এর পরিকল্পনা সরকারের তরফ থেকে ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছে।

আরেকটা বড় অভিযোগ সামনে আসছে, তা হল, এতদিন নানান কল্যাণমূলক বোর্ডযে সমস্ত সুযোগ সুবিধা দিয়ে আসতো, এখন ই-শ্রম হল এমন এক মাধ্যম যার সাহায্যে এই সমস্ত কিছুর উপর এবার কোপ পড়বে। আমরা সকলেই জানি বিড়ি শ্রমিক কল্যাণ আইন হচ্ছে অন্যতম এক উন্নত আইন, যার বাসস্থান প্রকল্পটি বেশ ভালো। কিন্তু গত চার বছর ধরে মোদী সরকার এই আইনকে ঠান্ডা ঘরে নিক্ষিপ্ত করেছে। নির্মাণ শ্রমিকদের কল্যাণ বোর্ড’এর তহবিল তছরূপ করা হচ্ছে। সেই তহবিলের টাকা রাজ্যের ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল নানান রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করছে। অভিযোগ উঠেছে, কর্ণাটকের শ্রম কমিশনার শ্রম দপ্তরের সমস্ত শ্রম আধিকারিককে দামি ইনোভা গাড়ি উপহার দিয়েছেন। নির্মাণ বোর্ডে গচ্ছিত বিপুল তহবিল তছরূপ করেই এই অপকর্মটি করা হয়েছে। আরেকটা উদাহরণ হল সেস সংগ্রহের পরিমাণ কমিয়ে দেওয়া। নতুন আইনে ৫০ লক্ষ বা তার কম মূল্যের নির্মাণ কাজে সেস মুকুব করা হয়েছে।

নতুন সামাজিক সুরক্ষার ধারণা, যা সামাজিক সুরক্ষা কোডের মাধ্যমে হাজির করানো হচ্ছে, তা সরকার ও নিয়োগকর্তাকে স্বাস্থ্যবিমা (ইএসআই), অবসরকালীন সুযোগ সুবিধা (পিএফ), গ্রাচুইটি, বাসস্থান ও সন্তানদের শিক্ষার দায় থেকে পুরোপুরি মুক্ত করেছে। নতুন কোড হরেক কল্যাণ বোর্ডগুলোকে বিমা কোম্পানি ও অসংগঠিত শ্রমিকদের মধ্যে বোঝাপড়া করিয়ে দেওয়ার সংস্থায় অধঃপতিত করেছে। একজন অসংগঠিত শ্রমিক ঠিক ততটাই সুবিধা পেতে পারেন যতটা পরিমাণে তিনি বিমা সংস্থার কাছে সেই বাবদ প্রিমিয়াম জমা করছেন। অর্থাৎ, সরকার বা নিয়োগকর্তার কাঁধ থেকে সামাজিক সুরক্ষা প্রদানের পুরো দায়ভার এবার চালান করে দেওয়া হচ্ছে শ্রমিকদের কাঁধে। ই-শ্রম পোর্টাল হল সেই লক্ষ্যেই প্রথম পদক্ষেপ।

ই-শ্রম পোর্টালের নেপথ্য রাজনীতি আমাদের কাছে এখন পরিষ্কার। কিন্তু তাই বলে সরকারের কাছ থেকে ছিটেফোঁটা যেটুকু সুবিধা শ্রমিকরা পেতে পারেন, সেখান থেকে তাদের আটকানো অনুচিত হবে। অনেক রাজ্যেই আমাদের কাজ অসংগঠিত শ্রমিকদের যে অংশের মধ্যে রয়েছে, সেই অংশটি কল্যাণ বোর্ডের সুযোগ সুবিধা পান না। সেই সমস্ত শ্রমিকদের ই-শ্রম পোর্টালে নথীভুক্ত করতে আমাদের অবশ্যই সাহায্য করতে হবে। কিন্তু তার অর্থ এই নয় যে, সামাজিক সুরক্ষার দায় থেকে সরকার ও নিয়োগকর্তা নিজেকে যেভাবে সরিয়ে নিচ্ছে, সেটা আমরা সমালোচনা বা উদঘাটন করবনা। যদি ই-শ্রম পোর্টালটি শ্রমিকদের বাড়তি সুযোগ সুবিধা দেওয়ার আরো একটি বাড়তি পোর্টাল হিসাবে সামনে আসতো, তবে তা নিয়ে আমাদের বিরোধিতা থাকত না। কিন্তু, তা হচ্ছে বর্তমানের বোর্ড, প্রকল্প ও সুযোগ সুবিধাগুলোকে বাতিল করেই।

সমস্ত ট্রেড ইউনিয়নগুলো লাগাতার দাবি জানিয়ে আসছে, সামাজিক সুরক্ষার বিষয়টি সরকার ও নিয়োগকর্তার একান্ত দায়বদ্ধতার মধ্যেই পড়ে। সামাজিক সুরক্ষা কোনও দয়া প্রদর্শনের বিষয় নয়। ঘন্টার পর ঘন্টা নিজেদের ঘাম-শ্রমের বিনিময়ে শ্রমিকরা কোম্পানি, সমাজ ও সরকারের জন্য যে আত্মত্যাগ করে থাকেন, সামাজিক সুরক্ষা হল তারই এক স্বীকৃতি। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দাবি হল, সমস্ত বিদ্যমান সুযোগগুলোকে রক্ষা করে তার পরিধিকে প্রসারিত করে সমস্ত শ্রমিকদের তার আওতায় নিয়ে আসা। সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পের অধীনে নিয়ে আসতে হবে সমস্ত ধরনের কল্যাণকর ইস্যু — স্বাস্থ্য-শিক্ষা-পিএফগ্রাচুইটি-পেনশন-অবসরকালীন সুযোগ সুবিধা ও বাসস্থানের মতো বিষয়গুলোকে।

  • এখনও পর্যন্ত (পোর্টালে ১৮ জানুয়ারি ২০২২) ৩৮ কোটির মধ্যে ২২.৮২ কোটি অর্থাৎ ৬০ শতাংশ অসংগঠিত শ্রমিক নিজেদের নথীভুক্ত করিয়েছেন।
  • প্রায় প্রতিদিন ১৫-২০ লক্ষ শ্রমিক নিজেদের নাম নথীভুক্ত করাচ্ছেন।
  • উত্তরপ্রদেশ-পশ্চিমবাংলা-বিহারওড়িষ্যা-মধ্যপ্রদেশ হল প্রথম ৫টি রাজ্য যেখানে নথীভুক্তি সবচেয়ে বেশি হয়েছে। ঠিক এরপরই রয়েছে ঝাড়খন্ড, আর তার গা ঘেষে রয়েছে মধ্যপ্রদেশ। এটা লক্ষনীয়, যে রাজ্যগুলো থেকে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক পরিযায়ী শ্রমিক অন্যত্র কাজ করার জন্য বাইরে যান, সেই রাজ্যগুলোতেই নথীভুক্তির সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। শুধুমাত্র উত্তরপ্রদেশ থেকে ৩.৫ কোটি শ্রমিকের নাম নথীভুক্ত হওয়াটা এরই এক উদাহরণ।
  • প্রায় ৮ কোটি শ্রমিক শুধুমাত্র উত্তরপ্রদেশ থেকে নিজেদের নাম নথীভুক্ত করিয়েছেন। ওই রাজ্যে মোট যোগ্যতা সম্পন্ন (পোর্টালের মাপকাঠি অনুযায়ী) অসংগঠিত শ্রমিকদের থেকে ওই সংখ্যাটা অনেক বেশি। সন্দেহ করা হচ্ছে, আগামী নির্বাচনগুলোকে মাথায় রেখে এখানে কিছু কারচুপি করা হয়েছে।
  • কৃষি ও গৃহশ্রমে নিযুক্ত শ্রমজীবী, পরিচারিকা, নির্মাণ, পোষাক শিল্প প্রভৃতি পেশার সাথে যুক্ত শ্রমজীবীরাই সবচেয়ে বেশি সংখ্যায় নিজেদের নথীভুক্ত করিয়েছেন।
  • পোর্টাল থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ১১.৫ কোটি কৃষির সাথে যুক্ত শ্রমজীবী, ২.৪৬ কোটি গৃহশ্রমের সাথে ও গৃহকাজের সাথে যুক্ত পেশায়, ২.২ কোটি নির্মাণ কর্মী, আর ১.৫ কোটি শ্রমিক পোশাক শিল্পের সাথে যুক্ত শ্রমিক নিজেদের নাম নথীভুক্ত করিয়েছেন।
  • ৫২.৭ শতাংশ নথীভুক্ত শ্রমিক হলেন মহিলা। পুরুষরা এখনও ৫ শতাংশ পেছনে।
  • ১৮ থেকে ৪০ বছরের শ্রমিকদের মধ্যে ৬১.৮৭ শতাংশ নথীভুক্ত হয়েছেন — সংখ্যায় যারা সবচেয়ে বেশি। এরপর রয়েছেন ৪০ থেকে ৫০ বছরের শ্রমিকরা, যাদের সংখ্যা ২১.৯৩ শতাংশ। আর, ৫০ বছরের উপর রয়েছেন ১৩.২২ শতাংশ শ্রমিক।
  • জাতপাতের দিক থেকে সবচেয়ে বেশি নথীভুক্ত হয়েছেন ওবিসি (৪৫.৬৪ শতাংশ), তারপরই রয়েছেন তপশীলি জাতি উপজাতি থেকে আগত (২৮.৭ শতাংশ), আর ২৫.৭৯ শতাংশ হলেন সাধারণ বর্গথেকে।
  • এটা লক্ষনীয়, ৮ কোটি নথীভুক্তি হয়েছে নিজস্ব উদ্যোগে, আর এটা রাজ্য সেবা কেন্দ্র মারফত নথীভুক্তির (২৩ লক্ষ) থেকে থেকে অনেক বেশি।

কমন সার্ভিস সেন্টার মারফত নথীভুক্তি সবচেয়ে বেশি — ১৪.৪ কোটি।

খণ্ড-29
সংখ্যা-43