শোক সংবাদ
প্রয়াত কমরেড অশোকতরু চক্রবর্তী

সিপিআই(এমএল) লিবারেশন পার্টির সদস্য কমরেড অশোকতরু চক্রবর্তীর আকস্মিক প্রয়াণে আমরা গভীর শোকাহত। গত ২৯ জানুয়ারি ২০২৩ রাতে ঘুমের মধ্যেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে চিরনিদ্রায় চলে গেলেন আমাদের সকলের প্রিয় কমরেড অশোকতরু চক্রবর্তী। ৬৭ বছর বয়সে আকস্মিক ভাবেই থেমে গেল বর্ণময় জীবন সফর।

আত্মপ্রচার বিমুখ, অত্যন্ত সরল মনের মানুষ ছিলেন কমরেড অশোকতরু। আকাশবাণী রেডিওর একজন সাংবাদিক হিসাবে পরিচয় থাকলেও তিনি একজন তথ্যচিত্র নির্মাতা, সুলেখক এবং কবি হিসাবেও পরিচিতি লাভ করেছিলেন। তিনি প্রায় ১০টি তথ্যচিত্র নির্মাণ করেছিলেন। এগুলির মধ্যে ‘ঢেঁরা’ তথ্যচিত্রটি বিএফজেএ পুরস্কার লাভ করে। তাঁর তথ্যচিত্রগুলিতে প্রান্তিক খেটে খাওয়া মানুষের জীবন যন্ত্রণার দিকগুলিই প্রাধান্য পেয়েছে। তাঁর লেখা গল্পে, কবিতায় কখনো দেখা গেছে লকডাউনে অভুক্ত পথশিশুর কান্নায় অসহায় মায়ের ভয়ঙ্কর আর্তনাদ, কখনো বা শ্রমজীবী মানুষের অজানা দুঃসহ জীবন কাহিনী। এক কথায় যা অসাধারণ।

তিনি কলকাতা প্রেস ক্লাবের সদস্য ছিলেন। বিভিন্ন সময়ে ঐ ক্লাবের কার্যকরী সমিতির সদস্য এবং সহ-সভাপতির দায়িত্বও পালন করেছেন। বামপন্থার প্রতি ছিল তাঁর অগাদ আস্থা। বর্তমানে তিনি সিপিআই(এমএল) লিবারেশন পার্টির সদস্য ছিলেন এবং পূর্ব-মধ্য কলকাতা লোকাল পার্টি কমিটির সদস্য ছিলেন। বিজেপি, আরএসএস বিরোধী প্রচার অভিযানের লক্ষ্যে সাম্প্রতিক গড়ে ওঠা ‘উই দ্যা পিপল অফ ইন্ডিয়া’ মঞ্চের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন।

৩০ জানুয়ারি বিকেলে প্রয়াত অশোকতরু চক্রবর্তীর স্ত্রী জানান, অশোক দেহ দানের ইচ্ছা প্রকাশ করত। সেই ইচ্ছাকে সম্মান জানিয়ে দেহ দান করা হয় সাগর দত্ত হাসপাতালে। তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানালেন তাঁর স্ত্রী সোমা চক্রবর্তী এবং তার ভাই সরিত ব্যানার্জী, কমরেড অশোকতরুর দাদা বৌদি, প্রতিবেশি সাংবাদিক বন্ধু অভিরূপ ব্যানার্জী এবং অরিজিৎ দত্ত, এলাকার বিভিন্ন মানুষ এবং মনোজ রায়, বাবু গুহ, অলোক পাল, মাজাহার খান, ছাত্র সুরন্ত দে, সায়ন্তন মিত্র। এছাড়াও শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন শ্রীকান্ত লাহা, পূর্ব-মধ্য কলকাতা লোকাল কমিটির পক্ষে অশোক সেনগুপ্ত এবং পার্টি রাজ্য কমিটির পক্ষ থেকে দিবাকর ভট্টাচার্য। দেহ দানের সময় স্লোগান ওঠে, “কমরেড অশোকতরু তোমায় আমরা ভুলব না”।

কমরেড অশোকতরু অমর হয়ে থাকবেন তাঁর সৃষ্ট কবিতা, তথ্যচিত্র ও লেখনীর মধ্য দিয়ে।

কমরেড অশোকতরু লাল সেলাম।

খণ্ড-30
সংখ্যা-3